তেষ্টায় কাতর রূপপুর

বাড়িতে পানীয় জল সংযোগের আর্জি বারবার জানানো হয়েছে স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে সংশ্লিষ্ট দফতরে। কিন্তু কোনও এক অজ্ঞাত কারণে জল সংযোগের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা পাছেন না ওই বাসিন্দারা। স্বাভাবিক ভাবে ক্ষোভ বাড়ছে রূপপুর পঞ্চায়েত এলাকায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৪ ০১:৪০
Share:

বাড়িতে পানীয় জল সংযোগের আর্জি বারবার জানানো হয়েছে স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে সংশ্লিষ্ট দফতরে। কিন্তু কোনও এক অজ্ঞাত কারণে জল সংযোগের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা পাছেন না ওই বাসিন্দারা। স্বাভাবিক ভাবে ক্ষোভ বাড়ছে রূপপুর পঞ্চায়েত এলাকায়।

Advertisement

বোলপুরের বিডিও শমীক পানিগ্রাহী বলেন, “সম্প্রতি পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ওই প্রকল্পের আওতায় সরবরাহ হওয়া জলে কয়েকশো বেআইনি সংযোগ রয়েছে। দিন-কে দিন জল সংযোগ ও জলের প্রয়োজনের পরিমাণ বাড়ছে। চাহিদা মতো জল না পাওয়ার অভিযোগও কোথাও কোথাও আসছে। সেই কারণে বিকল্প ব্যবস্থা করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি যে সমস্ত বেআইনি সংযোগ রয়েছে এবং পানীয় জলকে যাঁরা অন্য কাজে ব্যবহার করছেন তাঁদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি।”

ইন্দো-জার্মান প্রকল্প এবং বোলপুর ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই প্রকল্প থেকে বোলপুর পুরসভা-সহ আশপাশের প্রায় একাধিক পঞ্চায়েত এলাকায় পানীয় জল সরবরাহ হয়। বাড়িতে জল সরবরাহ করার যে ব্যবস্থা রয়েছে, তার তুলনায় এমনিতেই বেশি গ্রাহক ইতিমধ্যেই হয়েছে। তার ওপর যে সমস্ত এলাকা দিয়ে জলের পাইপ গিয়েছে, ওই সব এলাকার বেশির ভাগ অংশে বেআইনি ভাবে বাসিন্দারা জলের সংযোগ নিয়েছেন বলে কেউ কেউ জানিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু বাসিন্দা বলছেন, ওই সব এলাকায় পানীয় জলের জোগানের লাইন ফাটিয়ে চাষের কাজে ব্যবহার করার নজিরও রয়েছে। ফলে ওই পরিষেবার আওতায় থাকা বাসিন্দারা এমনিতেই ভরা গ্রীষ্মে জলের সমস্যায় ভুগছেন। তার ওপর আবার নতুন সংযোগ দেওয়া হলে, জল সঙ্কটের সমস্যা আরও তীব্র হবে বলে সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি। তবে ইতিমধ্যেই বোলপুর পুর-কর্তৃপক্ষ এবং বোলপুর ব্লক কর্তৃপক্ষ পানীয় জলের বিকল্প ব্যবস্থা নিয়ে বার কয়েক আলোচনা করেছে। অজয় নদে ও কোপাই নদীর জল পরিস্রুত করে সরবরাহ করার বিবেচনা করে আনুসঙ্গিক ব্যবস্থা ইতিমধ্যেই নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিডিও।

Advertisement

রূপপুর পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, শান্তিনিকেতন এলাকার রতনপল্লি, শ্যামবাটি, সুভাষপল্লি, ক্যানাল পাড়ের বাসিন্দারা একাধিক বার পানীয় জলের সংযোগের জন্য আর্জি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সব মহলে। আবেদনের প্রায় এক বছর হলেও সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতের প্রধান বিষয়টিকে কোনও আমল দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। বার কয়েক সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত এবং ব্লক কর্তৃপক্ষের কাছে গিয়েও ক্ষোভও জানিয়েছেন তাঁরা। পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তৃণমূলের ইন্দ্রজিত্‌ মিত্র বলেন, “ওই সমস্ত এলাকায় কয়েকশো বেআইনি জলের সংযোগ রয়েছে। ব্লক প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু বেআইনি জলের সংযোগ কেটে দেওয়া হয়েছে। আমরা সংশ্লিষ্ট সব স্তরের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।” ইন্দ্রজিত্‌বাবুর দাবি, “পানীয় জলের উত্‌স এলাকায় নেই এমন কিন্তু নয়। তবে যা রয়েছে হতে পারে তা অপ্রতুল। প্রায় শ’দেড়েক আবেদনপত্র জমা পড়েছে। তা ছাড়া খোঁজ নিয়ে দেখা গিয়েছে, ওই আবেদনকারীদের মধ্যে অনেকের আবার বেআইনি সংযোগ রয়েছে বাড়িতে। আমরা সব বিষয় খতিয়ে দেখে বাসিন্দাদের যাতে অসুবিধে না হয় তার জন্য অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”

বিডিও বলেন, “বিকল্প ব্যবস্থা না করে, বাসিন্দাদের আর্জি মতো পানীয় জলের দেদার সংযোগ দেওয়া হলে, ভরা গ্রীষ্মে নতুন গ্রাহক তো বটেই, বর্তমান ওই পরিষেবার আওতায় থাকা বাসিন্দাদের জল সঙ্কটের অবস্থা দেখা দিতে পারে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন