আয়োজকেরাই জিতে নিল দুগই মুর্মু স্মৃতি ফুটবল প্রতিযোগিতা। এলাকার আদিবাসী সম্প্রদায়কে ফুটবল খেলায় উত্সাহ দিতেই ওই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। মঙ্গলবার বিকেলে স্থানীয় ভবানীপুর ফুটবল মাঠে হওয়া ফাইনালে আয়োজক দল সাঁইথিয়ার মুনাই আদিবাসী সঙ্ঘ স্থানীয় কালিমাতা যুবসঙ্ঘকে ৩-১ গোলে পরাজিত করে। গত শুক্রবার সকালে ওই নক আউট ফুটবল প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল। যোগ দিয়েছিল জেলার বিভিন্ন প্রান্তের ৩২টি আদিবাসী দল।
ওই প্রতিযোগিতায় প্রতি দিন তিনটি করে ম্যাচ হত। স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ জন প্রতিদিনই খেলা দেখতে ভিড় জমিয়েছেন। মঙ্গলবারই দু’টি সেমিফাইনাল হয়েছে। প্রথম সেমিফাইনালে ১-০ ব্যবধানে মুনাই আদিবাসী সঙ্ঘ নেতুর জন একাদশকে হারিয়ে প্রথম দল হিসেবে ফাইনালে ওঠে। পরের সেমিফাইনালে কালিমাতা যুবসঙ্ঘ টাইব্রেকারে নাদুলিয়া আদিবাসী একাদশকে ৪-২ গোলে হারিয়ে ফাইনালের দ্বিতীয় দল হিসেবে জায়গা করে নেয়। দু’টি সেমিফাইনালের পর আদিবাসীদের দু’টি মহিলা ফুটবল দলের মধ্যে একটি প্রীতি ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করা হয়। তাতে যোগ দেয় মুনাই আদিবাসী সঙ্ঘের মহিলা ফুটবলারেরা এবং মহম্মদবাজারের হাবড়াপাহাড়ি মহিলা ফুটবল দল যোগ। প্রীতি ম্যাচটি অবশ্য গোলশূন্য ভাবে শেষ হয়। এরপরেই অনুষ্ঠিত হয় ফাইনাল।
ফাইনালের দিন এলাকার বহু বিশিষ্ট জন উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় নাট্য কর্মী সুব্রত ঘটক বলেন, “এই ফুটবল প্রতিযোগিতা এলাকার খেলাধুলোয় নতুন করে প্রাণ সঞ্চার করল। এ রকম প্রতিযোগিতার ভীষণ প্রয়োজন আছে। সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে মাঝে মধ্যে এ রকম খেলা হলে ভাল হয়।” অনেকেই আবার ফুটবলে আদিবাসী ছেলেমেয়েদের দিকে নজর দেওয়ার প্রসঙ্গ তোলেন। স্থানীয় বাসিন্দা মানিক সাউয়ের মত, “ভারতে যদি সত্যিই ভাল ফুটবল দল বা ভাল ফুটবলার তৈরি করতে হয়, তা হলে অবশ্যই আদিবাসী ছেলেমেয়েদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। এ ব্যাপারে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে।” ফাইনালে উপস্থিত বিশিষ্ট জনেরা পুরস্কার প্রাপকদের হাতে নানা পুরস্কার তুলে দেন। ফাইনালের ‘ম্যান অফ দ্য ম্যাচ’ হন মুনাই আদিবাসী সঙ্ঘের বাবুলাল হাঁসদা। ‘ম্যান অফ দ্য সিরিজ’ হন কালিমাতা দলের রাম মুর্মু। সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার পান মুনাই আদিবাসী সঙ্ঘের জিতেন মাড্ডি। চ্যাম্পিয়ন টিম ৩০ ও রানার্স টিম নগদ ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। যাঁর নামে এই প্রতিযোগিতা, সেই দুগই মুর্মুর ছেলে বদি মুর্মু বলেন, “এলাকার আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজনকে আরও বেশি করে ক্রীড়ামুখী করে তুলতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”