দ্বন্দ্বের মধ্যেই দলে ভাঙন

একে দল জেরবার গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে। তার উপর তৃণমূল কর্মীরা যোগ দিলেন বিজেপিতে। ঘটনাটি বাঁকুড়ার শালতোড়া ব্লকের। মূলত ব্লকে তাঁদের দলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ক্ষোভেই তাঁরা বিজেপি-তে গেলেন বলে ওই তৃণমূল কর্মীরা জানিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শালতোড়া শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৪ ০০:৩৭
Share:

একে দল জেরবার গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে। তার উপর তৃণমূল কর্মীরা যোগ দিলেন বিজেপিতে। ঘটনাটি বাঁকুড়ার শালতোড়া ব্লকের। মূলত ব্লকে তাঁদের দলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ক্ষোভেই তাঁরা বিজেপি-তে গেলেন বলে ওই তৃণমূল কর্মীরা জানিয়েছেন।

Advertisement

বুধবার এই ব্লকের বামুনতোড় গ্রামে বিজেপি একটি প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে। উপস্থিত ছিলেন দলের রাজ্য সহ-সভাপতি সুভাষ সরকার, জেলা সভাপতি জয়ন্ত মণ্ডল, জেলার মুখপাত্র অজয় ঘটক-সহ অনেকে। সভায় তৃণমূলের শ’দুয়েক কর্মী এবং অন্য দলের ৩০০ কর্মী তাঁদের দলে যোগ দিয়েছেন বলে বিজেপি-র দাবি।

তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যাওয়া বামুনতোড় গ্রামের গোপাল দাস, মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়রা জানান, শালতোড়া ব্লক তৃণমূল সভাপতি কালীপদ রায়ের সঙ্গে বাম আমলে তাঁরা তৃণমূল দল শুরু করেছিলেন। কিন্তু, দল রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে কালীপদবাবুর বিরুদ্ধে নানা কারণে তাঁরা ক্ষুব্ধ হন। এর পর যোগ দেন কালীপদবাবুর বিরোধী হিসাবে পরিচিত, তৃণমূলের তিলুড়ি অঞ্চলের প্রাক্তন সভাপতি তপন চট্টোপাধ্যায়ের গোষ্ঠীতে। কিন্তু, তপনবাবুও এখন দলে কোণঠাসা। কাজেই দলে গুরুত্ব হারিয়েছেন গোপালবাবুরাও। সম্প্রতি অঞ্চল সভাপতির পদ থেকে তপনবাবুকে সরিয়ে দেওয়ার পরে কালীপদবাবুর সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ্ব আরও বেড়েছে। প্রকাশ্যে লিফলেট বিলি করে ব্লক সভাপতির কালীপদবাবুর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তপনবাবু।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে এলাকার কয়েকশো তৃণমূল কর্মী বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় দলের সাংগঠিক শক্তি নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিজেপি-র শালতোড়া ব্লক কমিটির সদস্য আস্তিক চক্রবর্তীর দাবি, “লোকসভা ভোটে এই ব্লকে আমরা ভাল ফল করেছি। যে ভাবে তৃণমূল ও সিপিএম থেকে মানুষ আমাদের দলে আসছেন, তাতে বিধানসভা ভোটেও ভাল ফলের ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।” যদিও দলীয় কর্মীদের এই দলত্যাগকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে নারাজ কালীপদবাবু। তাঁর বক্তব্য, “বহু আগেই ওঁরা তৃণমূল ছেড়েছে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ওঁরা কংগ্রেসের হয়ে আমাদের বিরুদ্ধে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। তার আগে বিধানসভা ভোটে বিজেপি-র হয়ে প্রচার করেছিলেন। ওঁরা কবে যে কোন দলে থাকেন, তা ওঁরাও হয়তো জানেন না!” বিজেপিকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “ওদের সভায় লোকই হয়নি। ২০০ তৃণমূল কর্মী বিজেপিতে যোগ দিয়েছে বলে যা বলা হচ্ছে, তা আসলে মিথ্যা কথা। প্রচার পাওয়ার স্বার্থে বিজেপি এই সব রটাচ্ছে।” বিজেপি নেতা সুভাষবাবুর অভিযোগ, “আমাদের সভায় গেলে প্রাণে মারা হুমকি পর্যন্ত দিয়েছিল তৃণমূল। তার পরেও মানুষ সভায় এসে বুঝিয়ে দিয়েছেন, জোর করে তাঁদের কণ্ঠরোধ করা যাবে না। মানুষ তৃণমূলকে আর ভয় পায় না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন