দুর্নীতির অভিযোগে প্রধানকে তালাবন্দি

ত্রাণের ত্রিপল বিলি নিয়ে দুর্নীতি ও দলবাজির অভিযোগ তুলে সিপিএমের এক প্রধানকে পঞ্চায়েত কার্যালয়ে তালাবন্দি করে রাখল তৃণমূল। প্রধানের সঙ্গেই পাঁচ কর্মীকেও অফিসের ভিতরে আটকে রেখে পঞ্চায়েতের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হল। বাঁকুড়ার হিড়বাঁধ পঞ্চায়েতে মঙ্গলবার দুপুরের ঘটনা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হিড়বাঁধ ও রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:৩৬
Share:

ত্রাণের ত্রিপল বিলি নিয়ে দুর্নীতি ও দলবাজির অভিযোগ তুলে সিপিএমের এক প্রধানকে পঞ্চায়েত কার্যালয়ে তালাবন্দি করে রাখল তৃণমূল। প্রধানের সঙ্গেই পাঁচ কর্মীকেও অফিসের ভিতরে আটকে রেখে পঞ্চায়েতের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হল। বাঁকুড়ার হিড়বাঁধ পঞ্চায়েতে মঙ্গলবার দুপুরের ঘটনা। এ দিনই ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজের আবেদন করে কাজ না পেয়ে পুরুলিয়ার সাঁতুড়ির গড়শিকা পঞ্চায়েতে বেকার ভাতার দাবিতে পঞ্চায়েত ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন বাসিন্দারা।

Advertisement

এ দিন দুপুর ১২টা থেকে হিড়বাঁধ পঞ্চায়েতের প্রধান, সিপিএমের মণি কালিন্দী-সহ ৬ জনকে আটকে রাখা হয়। হিড়বাঁধের বিডিও শঙ্খশুভ্র দে পুলিশ নিয়ে সেখানে গিয়ে তৃণমূল নেতাদের বোঝানোর পরে বিকেল ৪টে নাগাদ তালা খোলে। পরে তৃণমূলের তরফে প্রধানের কাছে চার দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি দেওয়া হয়। বিডিও এ ব্যাপারে আজ বুধবার, ওই পঞ্চায়েতে একটি বৈঠক করা হবে বলে আন্দোলনকারীদের আশ্বাস দিয়েছেন।

হিড়বাঁধ ব্লক তৃণমূল নেতা চন্দন মহন্ত-র অভিযোগ, “উপপ্রধান উত্তম বাউরি নিজের পছন্দমতো কিছু লোককে ত্রিপল পাইয়ে দিয়েছেন। বহু গরীব মানুষ ত্রিপলের জন্য আবেদন করেও পাননি। সোমবার এ ব্যাপারে আমরা প্রধানের কাছে লিখিত ভাবে একটি অভিযোগ করেছিলাম। এ দিন এর বিহিত চেয়ে পঞ্চায়েতের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।” তাঁর অভিযোগ, শুধু ত্রিপল নিয়ে নয়, ইন্দিরা আবাস যোজনা, বার্ধক্য ভাতা, জবকার্ড বিলি নিয়ে যথেচ্ছ দুর্নীতি ও দলবাজি শুরু করেছেন সিপিএমের প্রধান ও উপপ্রধান। দুর্নীতি বা দলবাজির অভিযোগ অবশ্য মানতে চাননি প্রধান মণি কালিন্দী। তিনি বলেন, “আমার অবর্তমানে উপপ্রধান কয়েক জনকে ত্রিপল দিয়েছেন। আমি বিষয়টি পরে জেনেছি। এ ব্যাপারে উপপ্রধান সঠিক তথ্য দিতে পারবেন। তবে এ নিয়ে দুর্নীতি বা দলবাজি করা হয়নি।” বিডিও বলেন, “প্রধানের অনুমতি ছাড়া উপপ্রধান কোনও ভাবেই ত্রিপল-সহ যে কোনও ত্রাণ সামগ্রী বিলি করতে পারেন না। হিড়বাঁধ পঞ্চায়েতে এটাই হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে উপপ্রধানের বিরুদ্ধে।” এ দিন উপপ্রধান সিপিএমের উত্তম বাউরির সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।

Advertisement

এ দিকে, ১০০ দিনের প্রকল্পে তহবিলে টাকা না থাকায় শ্রমিকদের কাজ দেওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সাঁতুড়ির গড়শিকা পঞ্চায়েতের প্রধান রীনা লায়েক। এ দিন জনা পনেরো বাসিন্দা পঞ্চায়েতে কাজ চাইতে গিয়েছিলেন। কাজ না পেয়ে ভাতা চান তাঁরা। বিক্ষোভ দেখিয়ে সামান্য ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। শেষে পঞ্চায়েত অফিসে তাঁরা তালা ঝুলিয়ে দেন। খবর পেয়ে প্রধান সেখানে গেলে তাঁকে ঘিরেও বিক্ষোভ চলে। শেষে সাঁতুড়ি থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতির সামাল দেয়। সোমবার সন্ধ্যায় রঘুনাথপুর ২ ব্লকের মৌতোড়-মঙ্গলদা পঞ্চায়েতে আটক করা কর্মীদের উদ্ধার করতে গিয়ে হেনস্থার শিকার হন যুগ্ম বিডিও। পরে প্রশাসনের তরফে থানায় অভিযোগ দায়ের হওয়ায় সে দিনই দু’জন গ্রেফতার হয়। ধৃতেরা হলেন মৌতোড়াড়ি গ্রামের তপন বাউরি ও ঠাকুরদাস বাউরি। মঙ্গলবার আদালতে তাঁরা জামিন পান। এ দিন বিকেলে ওই ঘটনায় যুক্ত অভিযোগে উত্তম বাউরিকে ধরা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন