লুঠপাটের পরে। শুক্রবারের নিজস্ব চিত্র।
বাড়ি তালাবন্দি করে দোলের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। এলাকার পরিচিত দু-চার জনকে বলেও গিয়েছিলেন, বাড়ির দিকে একটু খেয়াল রাখতে। দিনকাল ভাল নয় বড় একটা। শুক্রবার সাতসকালেই গৃহকর্তা খবর পেলেন, বাড়ির দরজা ভেঙে সব ফাঁকা করে দিয়ে গিয়েছে চোরের দল। বৃহস্পতিবার রাতের ঝালদা বাজার এলাকার ঘটনা। সব দরজা আর ঘরের ভিতরে পরপর আলমারির তালা ভাঙা, আসবাব ও জিনিসপত্র তছনছ। দরজার বাইরেই পড়ে নেশার ওষুধের একাধিক শিশি। সব দেখেশুনে এক পড়শির প্রতিক্রিয়া, “মনে হচ্ছে ঘর ফাঁকা দেখে নেশার ওষুধ খেয়ে বেশ আয়েশ করেই মালপত্র হাতিয়ে নিয়ে গিয়েছে চোরেরা।”
ঘটনাচক্রে যে বাড়িটিতে তালা ভেঙে চুরির ঘটনা ঘটেছে, সেই বাড়ির দেওয়ালের একধারেই ঝালদা থানা। স্থানীয় বাসিন্দারা অবশ্য বলছেন, মাস দেড়েক আগে বাজারের মধ্যে থাকা এই বাড়ি থেকে থানাটি ঝালদা পুরসভা এলাকার বাইরে উঠে গেলেও এখনও এই চত্বর ঝালদা থানা বলেই পরিচিত। এখনও এখানে কিছু পুলিশকর্মী থাকেন। ঝালদার প্রাক্তন পুরপ্রধান প্রদীপ কর্মকারের কথায়, “থানাটি ঝালদার বাইরে উঠে গিয়েছে। কিন্তু কেউ অভিযোগ জানাতে গেলে এখানে নেওয়া।” রাতের অন্ধকারে বিনা বাধায় বাড়িতে দরজা ভেঙে ঢুকে লুঠপাট চালিয়েছে দুষ্কৃতীরা। এলাকার বাসিন্দা চিরঞ্জীব চন্দ্র বলেন, “এখনও এই বাড়িটিই থানা বলে মুখে মুখে পরিচিত। তা ছাড়া এখানে থানার কয়েক জন পুলিশকর্মীও রাতে থাকেন। এ ভাবে থানা লাগোয়া একটি বাড়ি থেকে চুরির ঘটনা রীতিমতো উদ্বেগের।”
যে বাড়িতে চুরি হয়েছে, সেটি বাঘমুণ্ডির সেরেংডি গ্রামের বাসিন্দা অরবিন্দ গরাঁইয়ের। তিনি স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। কর্মসূত্রে ঝালদায় থাকেন। তিনি বলেন, “দোলের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলাম। শুক্রবার সকালে পরিচিত একজন ফোনে জানান, বাড়ির দরজা ভাঙা। খবর পেয়েই দ্রুত এখানে চলে আসি। এসে দেখি দরজার একাধিক তালা, আলমারি ভেঙে গয়না ও অন্যান্য জিনিসপত্র সব নিয়ে গিয়েছে।” অরবিন্দবাবুর স্ত্রী পুতুলদেবী জানান, তাঁর বিয়ের সেনার হারও চুরি হয়েছে। প্রদীপবাবু জানান, থানা উঠে যাওয়ার পর থেকে চুরির ঘটনা বাড়ছে। বেশ কয়েকটি মোটরবাইক চুরি হয়েছে। আর এ বার থানার দেওয়াল লাগোয়া বাড়িতেই চুরি হল। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা দরকার পুলিশের। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।