অবরোধে আটকে যানবাহন।
অভিযুক্তেরা শাসকদলের। তাই প্রশাসনের সকল স্তরে পুকুর ভরাটের অভিযোগ জানিয়েও কোন লাভ হয়নি। এমনই অভিযোগে পথ অবরোধ করল বিজেপি। শুক্রবার অবরোধটি হয়েছে কীর্ণাহার এলাকায়।
প্রশাসন এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কীর্ণাহার লক্ষ্মীতলার পিছনে তালপুকুর নামে দীর্ঘদিনের একটি ব্যবহার্য পুকুর রয়েছে। ওই পুকুরের অন্যতম অংশীদার স্থানীয় কাফেরপুর গ্রামের দুই ভাই নুরমহম্মদ এবং শেখ ইসমাইল একাংশ ভরাট করে বাড়ি তৈরি করছেন বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার বিডিও-সহ প্রশাসনের সকল স্তরে অভিযোগ জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা এবং অংশীদারদের একাংশ। কিন্তু অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া তো হয়ইনি, উল্টে অভিযোগের খবর জানাজানি হওয়ার পর বাড়ি তৈরির তত্পরতা বেড়ে যায় বলে অভিযোগ। শুক্রবার ওই নির্মাণ বন্ধ করে অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে বেলা ১১টা থেকে বিজেপি’র নেতৃত্বে কীর্ণাহার চৌরাস্তায় সিউড়ি-কাটোয়া সড়ক অবরোধ করেন অভিযোগকারীরা। পরে পুলিশি আশ্বাসে অবরোধ ওঠে।
বিজেপি’র স্থানীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা সম্পাদক অষ্টম মণ্ডলের অভিযোগ, “ওই পুকুরটি প্রায় ৬০টি পরিবার দীর্ঘদিন ব্যবহার করছেন। তা সত্ত্বেও বেআইনি ভাবে ভরাট করে বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রশাসনের সকল স্তরে লিখিতভাবে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। উল্টে অভিযোগ জানানোর পর বাড়ি তৈরির তত্পরতা বেড়ে গিয়েছে।” তাঁর দাবি, অভিযুক্তেরা শাসকদলের প্রশ্রয়পুষ্ট বলেই প্রশাসন পুকুর ভরাটের মতো গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ পাওয়ার পরও হাত গুটিয়ে বসে থেকে তাঁদের বাড়ি তৈরির সুযোগ করে দিচ্ছে।
ওই অভিযোগ অস্বীকার করে নুরমহম্মদ এবং শেখ ইসমাইল বলেন, “পুকুর ভরাট করে নয়, পুকুর পাড়ে বাড়ি করা হচ্ছে। অভিযোগকারীরাই রাজনৈতিক কারণে মিথ্যা অভিযোগ করছেন।” স্থানীয় কীর্ণাহার ১ পঞ্চায়েতের প্রধান তথা তৃণমূলের যুবার অঞ্চল কমিটির সাধারণ সম্পাদক শিবরাম চট্টোপাধ্যায় বলেন, “রাজনৈতিক প্রশ্রয়ের অভিযোগ ভিত্তিহীন। অভিযুক্তেরা আমাদের দলের সমর্থক হতে পারেন। কিন্তু কর্মী বা সদস্য নন। তা ছাড়া প্রধানের চেয়ারে বসে আমি রাজনৈতিক রঙ দেখার পক্ষপাতি নই। অভিযোগ পাওয়ার পরই পঞ্চায়েত থেকে নির্মাণ বন্ধ রাখার জন্য নোটিস পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু অভিযুক্তেরা তা নেননি। তারপর পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে যতটুকু করণীয় তা করা হয়েছে।” সংশ্লিষ্ট নানুরের বিডিও মৃণালকান্তি বিশ্বাস বলেন, “ওই অভিযোগ পাওয়ার পর ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরকে তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলেছি। সোমবার ওই রিপোর্ট পাওয়ার পরে একটা বৈঠক করা হবে। সেই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যতদিন না ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে ততদিন নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার জন্য পুলিশকে বলা হয়েছে।”
—নিজস্ব চিত্র।