পার্ক খুলবে কবে, উঠছে প্রশ্ন

বয়স্করা সকাল বিকাল হাঁটতে বেড়িয়ে কিছুক্ষণ কোথাও জিরিয়ে নেবেন বা বসে গল্পগুজব করবেন। এমন জায়গা ক্রমশ কমেছে শহরে। কমে যাচ্ছে কচিকাঁচাদের খেলার জায়াগাও। দমবন্ধকার শহরজীবনে অভ্যস্ত নাগরিকদের কাছে খোলা হাওয়া বলতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা একটুকরো পার্কগুলি। নগরজীবনের সেই দাবি মেনে বছর চারেক আগে জেলাপরিষদের উদ্যোগে এবং স্থানীয় বিধায়ক ও সাংসদের অর্থ সাহায্যে গড়ে উঠেছিল সিউড়ি সার্কিটহাউস সংলগ্ন ভকতসিংহ পার্ক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৪ ০১:৪২
Share:

সিউড়িতে ছবিটি তুলেছেন দয়াল সেনগুপ্ত।

বয়স্করা সকাল বিকাল হাঁটতে বেড়িয়ে কিছুক্ষণ কোথাও জিরিয়ে নেবেন বা বসে গল্পগুজব করবেন। এমন জায়গা ক্রমশ কমেছে শহরে। কমে যাচ্ছে কচিকাঁচাদের খেলার জায়াগাও। দমবন্ধকার শহরজীবনে অভ্যস্ত নাগরিকদের কাছে খোলা হাওয়া বলতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা একটুকরো পার্কগুলি। নগরজীবনের সেই দাবি মেনে বছর চারেক আগে জেলাপরিষদের উদ্যোগে এবং স্থানীয় বিধায়ক ও সাংসদের অর্থ সাহায্যে গড়ে উঠেছিল সিউড়ি সার্কিটহাউস সংলগ্ন ভকতসিংহ পার্ক। এলাকাবাসী ভেবেছিলেন, সকাল বিকেল একটা ওঠা-বসার জায়গা পাওয়া গেল। কিন্তু সেই পার্কই মাস খানেক হল বন্ধ রয়েছে।

Advertisement

কেন?

পার্ক থেকে প্রতি মাসে আয়ের বদলে বড় অঙ্কের লোকসান হচ্ছে এই কারণ দেখিয়ে গত ১ জুন থেকে সেই পার্কটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করেছে জেলাপরিষদ। জেলাপরিষেদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, “বাম আমলে তৈরি হওয়া একটি অপরিকল্পিত পার্ক। যেখান থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছিলেন শহরের মামুষজন। প্রতিমাসে ১৬ হাজার টাকা করে লোকসান হচ্ছিল। তাই বন্ধ করা হয়েছে আপাতত। আগামী দু’এক মাসের মধ্যে যাঁরা পার্কের সৌন্দর্যায়নের বিষয়টি দেখেন তেমন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে অলোচনা করে পার্কটিকে আকর্ষণীয় করে দরপত্র ডেকে কোনও সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।” জেলাপরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি সিপিএমের অন্নপূর্ণা মুখোপাধ্যায় পরিকল্পনাহীনের কথা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, “এই অভিযোগ একেবারেই ঠিক নয়। ২০০৭ সালে পরিকল্পনা নেওয়ার পর সাংসদ ও বিধায়কদের এলাকা উন্নয়নের টাকা, জেলাপরিষদের টাকা নিয়ে প্রায় পঁয়ত্রিশ লক্ষ টাকা ব্যয়ে পার্কটি তৈরি করে ২০১০ সালে সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়। টিকিটের মূল্য রাখা হয়েছিল ২ টাকা। ভালই চলছিল। পার্কটিকে আরও আকর্ষণীয় করার জন্য টাকা রাখা হয়েছিল।” তাঁর পাল্টা দাবি, “তৃণমূলে ক্ষমতায় আসার পরই এমন সমস্যা তৈরি হয়েছে।” জেলাপরিষদের বর্তমান সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী অবশ্য অন্নপূর্ণাদেবীর দাবির সঙ্গে একমত নন। তিনি পাল্টা বলেন, “কোনও টাকাই ওই খাতে ছিল না। পার্ক মানে তো শুধু মানুষের আনাগোনা নয়। সেখানে সকলের জন্য বিনোদন ও আকর্ষণীয় কিছু থাকতে হবে। আমরা সেটাই চেষ্টা করছি।”

Advertisement

তবে কী বলছেন এলাকাবসী? পুরবসীরা বলছেন, “পার্কটি কিছুদিনের মধ্যেই সকলের ওঠাবসা করার পরিবেশ হারিয়েছিল। সন্ধ্যা নামলেই কম বয়সীছেলেদের নেশা করা ও আড্ডা দেওয়ার একমাত্র জায়গা হয়ে উঠেছিল ওই পার্ক। ফলে ইচ্ছে থাকলেও অনেকেই ঢুকতে চাইতেন না। তবুও সকলেই চাইছেন পার্ক খুলুক।” বিকাশবাবুর আশ্বাস, “সকলের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ ফিরিয়ে দিয়ে পার্ক অবশ্যই খুলবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement