এই প্রথম মাধ্যমিকে উন্নীত হল। আর সেই স্কুলের প্রথম নির্বাচনেই গো-হারা হারল তৃণমূল।
পুরুলিয়া শহরের এই শিশুশিক্ষা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনে ‘অভিভাবক মঞ্চে’র কাছে তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীদের ৬-০ ফলে হারের পরে প্রশ্ন উঠেছে দলের অন্দরেই। বিশেষ করে পুরুলিয়া পুরসভা যেখানে একক ভাবে তৃণমূলের হাতে। বিধানসভা ও লোকসভা ভোটেও পুরুলিয়ায় তৃণমূলের জয়জয়কার। দলের নিচুতলার কর্মীদের একাংশের বক্তব্য, “এই হার নিশ্চিতই ছিল! শহরে দলের নেতা-কর্মীদের একাংশের সঙ্গে সাধারণ মানুষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্কুলটি যে এলাকায়, সেই পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর তথা পুরুলিয়া পুরসভার বিরোধী দলনেতা বিভাস দাস অভিভাবক মঞ্চের (কংগ্রেস, সিপিএম এবং আরএসপি-কে নিয়ে তৈরি) হয়ে প্রচার চালিয়েছিলেন। ভোটে প্রার্থী হন আরএসপি-র জেলা সম্পাদক অত্রি চৌধুরীও। ফল প্রকাশের পরে দেখা যায়, অভিভাবক প্রতিনিধির ৬টি আসনেই জয়ী হয়েছেন অভিভাবক মঞ্চের প্রতিনিধিরা। সর্বাধিক ভোট পেয়েছেন অত্রিবাবু (৬৯টি ভোট)। তাঁর কথায়, “এই মঞ্চের সঙ্গে কংগ্রেস, সিপিএম এবং আরএসপি সমর্থন থাকলেও তা নেপথ্যেই থেকেছে। আমরা অরাজনৈতিক ভাবেই কাজ করব।”
গত শুক্রবার হুগলির চন্দননগর পুরসভা পরিচালিত স্কুলগুলির অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনেও জয়-জয়কার বামেদের। সেখানেও গোহারা হয়েছে তৃণমূল। তারই পুনরাবৃত্তি পুরুলিয়ায়ও। শিশুশিক্ষা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সামসুদ্দিন আনসারি বলেন, “আমাদের স্কুল এ বারই মাধ্যমিকে উন্নীত হয়েছে। শিক্ষা দফতরের নির্দেশ মতো প্রথম পরিচালন সমিতির নির্বাচন হল। অভিভাবক মঞ্চের ৬ জন প্রতিনিধি জয়ী হয়েছেন।” পুরুলিয়া শহরের কিছু তৃণমূল নেতা-কর্মী বলছেন, “শহরের কয়েকটি ওয়ার্ডে লোকসভা ভোটেও প্রভাব পড়েছিল। সেটা যে বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছিল না, এই হারই তার প্রমাণ। দলীয় নেতৃত্বকে শহরের কমিটি সম্পর্কে নতুন করে চিন্তাভাবনা করতে হবে।” সূত্রের খবর, কিছুদিন আগে মুকুল রায়ের সঙ্গে পুরুলিয়া জেলা নেতৃত্বের বৈঠকে শহরের সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
অভিভাবক মঞ্চের প্রতিনিধি বিনয়কৃষ্ণ পাল (ইনিও ৬৯টি ভোট পেয়েছেন) বলেন, “আমাদের যে প্রার্থী সবচেয়ে কম ভোট পেয়েছেন, তাঁর প্রাপ্ত ভোট ৬১। আর তৃণমূলের সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন, সেই প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট ৫৩। এই পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট, অভিভাবকেরা আমাদের প্রতি কতটা আস্থা রেখেছেন।” বিভাসবাবুর মন্তব্য, “মানুষ দিন দিন কাছ থেকে যা দেখছেন তাই প্রতিফলিত হয়েছে।”
শহরের তৃণমূল নেতা বৈদ্যনাথ মণ্ডল বলেন, “এই স্কুলভোটে আমাদের ফল ভাল হয়নি। কেন হয়নি তা আমরা পর্যালোচনা করব।”