প্রচারে নেতাদের মুখে নাম নেই শতাব্দীর

দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে দু’টি সভা হয়েছে। দু’টিতেই অনুপস্থিত প্রার্থী শতাব্দী রায়। উপস্থিত থাকলেও তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের মুখে এক বারও প্রার্থীর নাম শোনা যায়নি। শুধু শোনা গেল লোকসভা ভোটে তৃণমূলকে জয়যুক্ত করুণ। প্রার্থীর নাম না নিয়ে বৃহস্পতিবার দু’টি সভা হয়েছে মুরারই থানার পাইকরে ও পলশা গ্রামে।

Advertisement

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়

মুরারই শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৪ ০০:৩৬
Share:

পলশায় তৃণমূলের জনসভা। ছবি: অনির্বাণ সেন।

দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে দু’টি সভা হয়েছে। দু’টিতেই অনুপস্থিত প্রার্থী শতাব্দী রায়। উপস্থিত থাকলেও তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের মুখে এক বারও প্রার্থীর নাম শোনা যায়নি। শুধু শোনা গেল লোকসভা ভোটে তৃণমূলকে জয়যুক্ত করুণ। প্রার্থীর নাম না নিয়ে বৃহস্পতিবার দু’টি সভা হয়েছে মুরারই থানার পাইকরে ও পলশা গ্রামে।

Advertisement

দু’টি সভাতেই প্রার্থী অনুপস্থিত কেন? ফোনে যোগাযোগ করা হলে শতাব্দী রায় বলেন, “আমি আমার মতো করে কর্মসূচি সাজিয়েছি। উনি ওঁর মতো করে করেছেন। তবে সব জায়গায় তো সবার পক্ষে যাওয়া সম্ভব নয়।” নাম না নেওয়া প্রসঙ্গে শতাব্দী বলেন, “কেষ্টদার সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভাল। প্রচারে আমার নাম না নিলেও দলের কথা তো বলছেন। এতে বিতর্ক খোঁজার কিছু নেই।” তবে সম্পর্ক ভাল থাকার কথা বলেও বিরোধী শিবির কিন্তু কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। বীরভূম কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী সৈয়দ সিরাজ জিম্মি বলেন, “এটা যদি ওদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব না হয় তো, আর কী!” অন্য দুই প্রার্থী সিপিএমের কামরে ইলাহি বলেন, “এটা ওদের ব্যাপার।” বিজেপি প্রার্থী জয় বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “কোথায় কে কী করেছে জানা নেই।”

কেন অনুপস্থিত?

Advertisement

“আমি আমার মতো করে কর্মসূচি সাজিয়েছি। উনি ওঁর মতো করে করেছেন।” —শতাব্দী রায়।

কর্মসূচি অনুযায়ী বৃহস্পতিবার বিকেল চারটে নাগাদ প্রথম সভা হয় মুরারই থানার পাইকরে। প্রার্থী না থাকলেও অনুব্রত মণ্ডলকে দেখার জন্যই প্রায় হাজার তিনেক তৃণমূলকর্মী উপস্থিত ছিলেন। প্রথম দিকে সভাস্থলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে লোকজন উপস্থিত থাকলেও, পরে অনুব্রত মঞ্চে আসতেই চারিদকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা লোকজন মঞ্চের সামনে উপস্থিত জড়ো হন। মঞ্চে দৃশ্যত অনুব্রতকে বিধ্বস্ত দেখালেও সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তাঁকে ডান হাতের বুড়ো আঙুল দেখিয়ে হাসতে দেখা যায়। প্রসঙ্গত, এ দিনই পাড়ুই-কাণ্ডের শুনানি ছিল কলকাতা হাইকোর্টে। তাঁর গলায় কোনও আক্রমণের সুর ছিল না। ছিল আইনের স্তূতি। তিনি বলেন, “ওই প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা সভাপতি বলেন, “আইন আইনের পথে চলবে। আইনকে আমি শ্রদ্ধা করি।” অথচ পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এই অনুব্রত মণ্ডল আইনের তোয়াক্কা না করে পুলিশ-প্রশাসনের গাড়িতে বোমা মারতে বলেছিলেন। এ দিন অবশ্য তিনি বলেন, “আমি কী করেছি? আমি কি চুরি করেছি? আমি কি ডাকাতি করেছি। যা করেছে সংবাদমাধ্যম করেছে। আইনের সম্বন্ধে আমি কিছু বলব না।” এই বলে মুখে হাসি নিয়ে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব না দিয়ে এড়িয়ে যান। তবে এ দিন তিনি সিপিএমকে চোরের দল বলে কটাক্ষ করে বলেন, “৩৪ বছরে ওরা কিছু করেনি। লুটেপুটে খেয়েছে।”

সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে অনুব্রত মণ্ডলের সামনে তৃণমূল নেতা আব্দুর রহমান, ত্রিদীব ভট্টাচার্য, অশোক চট্টোপাধ্যায়, রানা সিংহরা যখন বলতে থাকেন, ‘অনুব্রত মণ্ডলকে হেয় করার জন্য, বীরভূমের রূপকার অনুব্রত মণ্ডলকে খারাপ চোখে দেখানোর জন্য মিথ্যা মামলা আনা হয়েছে।’ তখন অনুব্রত মণ্ডলকে চুপ করে তাঁদের নেতাদের বক্তব্য শুনতে দেখা যায়। মাঝে মধ্যে জেলার উন্নয়ন প্রসঙ্গে কী কী কাজ করেছেন, তা অনুব্রত জেলার নেতাদের বলে দিচ্ছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন