অঙ্ক পরীক্ষার দিনেই ছিল তার বিয়ে। বিডিও গিয়ে বিয়ে রুখলেও পরীক্ষাটা আর দেওয়া হয়নি। সব মিলিয়ে মনের উপর দিয়ে ঝড় বয়ে গিয়েছে মেয়েটির।
মঙ্গলবার ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষা দিতে এসে তাই হলঘরেই কান্নায় ভেঙে পড়ল ওন্দার সেই নাবালিকা। যদিও ওই পরীক্ষাকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক তথা বাঁকুড়া সদর মহকুমার সহকারী স্কুল পরিদর্শক মানিকচন্দ্র ঘাঁটার মধ্যস্থতায় কোনও মতে মেয়েটিকে বুঝিয়ে আলাদা ঘরে বসে তাকে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়।
সোমবার, মাধ্যমিকের অঙ্ক পরীক্ষার দিনই বিয়ে হওয়ার কথা ছিল ওন্দার বিক্রমপুরের ওই নাবালিকার। পরীক্ষাকেন্দ্রে তাকে অনুপস্থিত দেখে মানিকবাবুই খোঁজ নিয়ে তার সহপাঠীদের কাছ থেকে সব জানতে পারেন। মানিকবাবুর কথায়, “আমি বিডিওকে ফোন করে ঘটনাটি জানাই। সোমবার রাতে ওন্দার বিডিও ওই নাবালিকার বাড়িতে গিয়ে বিয়ে রোখেন। বিয়ে না করেই ফিরে যায় বর।” নাবালিকার পরিবার গরিব হওয়ায় তাকে সরকারি সাহায্যের প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয় জেলা প্রশাসনের তরফে।
মঙ্গলবার পরীক্ষাকেন্দ্রে এসে প্রথম ঘণ্টার মধ্যেই খাতা জমা দিয়ে চলে যেতে চাইছিল ওই নাবালিকা। হলঘরে উপস্থিত শিক্ষকেরা মানিকবাবুকে ডাকেন। কেন পরীক্ষা না দিয়ে চলে যেতে চাইছে, জানতে চাওয়া হলে কান্নায় ভেঙে পড়ে ওই নাবালিকা। মানিকবাবু বলেন, “পড়াশোনা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা আমরা ওকে বুঝিয়েছি। সামনের জীবনবিজ্ঞান পরীক্ষাটা যাতে ও দেয়, সে কথাও বলেছি।” পাশাপাশি ওই নাবালিকা যাতে অঙ্ক পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ আরও একবার পায়, তার জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদের কাছে আবেদন জানাবে জেলা শিক্ষা দফতর। ওন্দার বিডিও শুভঙ্কর ভট্টাচার্যও বলেন, “মেয়েটি যাতে পরে অঙ্ক পরীক্ষায় বসতে পারে, সেই আবেদন জানিয়ে জেলাশাসককে চিঠি দিয়েছি।”