পড়ুয়াদের জন্য উত্‌সাহ ভাতা

স্কুল ছেড়েছেন দীর্ঘদিন আগে। কিন্তু ফেলে আসা স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের আজও ভুলতে পারেননি নিখিলকুমার মণ্ডল। তাই তাদের কথা ভেবে স্কুলকে সাহয্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন তিনি। একই উদ্দ্যেশে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন আরও দুই শিক্ষানুরাগী। আজ, বুধবার স্কুলে আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষিত হবে ওই ‘উত্‌সাহ’ ভাতার কথা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

লাভপুর শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:০৩
Share:

স্কুলের পড়ুয়াদের উত্‌সাহ দিতে টাকা দান করেছেন প্রাক্তন শিক্ষক নিখিলকুমার মণ্ডল।

স্কুল ছেড়েছেন দীর্ঘদিন আগে। কিন্তু ফেলে আসা স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের আজও ভুলতে পারেননি নিখিলকুমার মণ্ডল। তাই তাদের কথা ভেবে স্কুলকে সাহয্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন তিনি। একই উদ্দ্যেশে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন আরও দুই শিক্ষানুরাগী। আজ, বুধবার স্কুলে আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষিত হবে ওই ‘উত্‌সাহ’ ভাতার কথা।

Advertisement

লাভপুরের কাদোয়া গ্রামের বাসিন্দা নিখিলবাবু স্থানীয় বুনিয়াডাঙাল হাইস্কুলের শরীর শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক ছিলেন। ২০০৬ সালে অবসর নেন তিনি। ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে যাতে পড়াশোনায় প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব গড়ে ওঠে তার জন্য ‘উত্‌সাহ ভাতা’ চালু করতে ৭৮ হাজার টাকা তুলে দিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষের হাতে। ওই টাকার সুদে প্রতি বছর পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থানাধিকারীকে যথাক্রমে ৫০০, ৪০০ ও ৩০০ টাকা করে উত্‌সাহ ভাতা দেওয়া হবে।

শুধু এ বারই নয়। এর আগেও ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে উত্‌সাহ বাড়াতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন নিখিলবাবু। ২০১২ সালে এককালীন প্রায় ৯০ হাজার টাকা তুলে দিয়েছিলেন স্কুল কর্তৃপক্ষের হাতে। উদ্দেশ্য, ওই টাকার সুদে প্রতি বছর স্কুলের মাধ্যমিকে ছেলে এবং মেয়েদের মধ্যে প্রথম স্থানাধিকারীকে পুরস্কৃত করা। সেই টাকায় চালু হয়েছে স্কুলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা তথা নিখিলবাবুর শ্বশুর শশাঙ্কমোহন মণ্ডল এবং শাশুড়ি গায়ত্রীদেবী স্মৃতি পুরস্কার। ওই টাকায় প্রতি বছর দু’জন ছাত্রছাত্রীকে এককালীন ৩ হাজার টাকা করে পুরস্কার দেওয়া হয়। নিখিলবাবুর কথায়, “টাকার অঙ্কে হয় তো পুরস্কারের মূল্য তেমন কিছু নয়। কিন্তু দীর্ঘদিন শিক্ষকতার সুবাদে দেখেছি প্রত্যন্ত এলাকার স্কুলটিতে পড়ুয়াদের একটা বড় অংশ অত্যন্ত দুঃস্থ পরিবারের। অনেকেই বইখাতা কিনতে পারে না। মাধ্যমিক পাশ করে টাকার অভাবে ভর্তির সমস্যা দেখা দেয় অনেকের বাড়িতে। ওই টাকাটুকু পেলে কিছুটা সুরাহা হবে। তা ছাড়া, ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে প্রতিযগিতামূলক মনোভাবও গড়ে উঠবে বলে আমি মনে করি।”

Advertisement

নিখিলবাবুর পাশাপাশি সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন লাভপুরের বিনতি চন্দ্র এবং কীর্ণাহারের পরোটার দ্রৌপদী দাসও। তাঁরা ৮,৬০০ টাকা করে তুলে দিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষের হাতে। ওই টাকায় বিনতি দেবীর স্বামীর নামে কল্যাণকুমার চন্দ্র স্মৃতি এবং দ্রৌপদীদেবীর স্বামীর নামে সুন্দরগোপাল দাস স্মৃতি পুরস্কার চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। কল্যাণকুমার স্মৃতি পুরস্কারে নবম থেকে দশম শ্রেণিতে প্রথম স্থানাধিকারী মাসিক ৫০ টাকা হারে এক বছর এবং সুন্দরগোপাল স্মৃতি পুরস্কারে মাধ্যমিকে জীবন বিজ্ঞানে সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপককে ৬০০ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে।

এই উদ্যোগে রীতিমতো খুশির হাওয়া ছাত্রছাত্রী মহলে। ২০১২ সালে মাধ্যমিকে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে মেয়েদের মধ্যে সুদীপা সাহা এবং ছেলেদের মধ্যে সুমন ঘোষ পুরস্কৃত হয়। তাদের কথায়, “উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তির ক্ষেত্রে পুরস্কারের টাকাটা কাজে লেগেছিল। পুরস্কার পেয়ে আরও ভাল রেজাল্ট করারও জেদ চেপেছিল।” একই প্রতিক্রিয়া দশম শ্রেণির মলয়রঞ্জন মণ্ডল, সমাপ্তি মণ্ডলদেরও।

প্রধান শিক্ষক তাপস দাস, স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক জগন্নাথ চৌধুরী বলেন, “ওই সব শিক্ষানুরাগীদের ধন্যবাদ জানিয়ে খাটো করতে চাই না। স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন