ফাইনাল ঘিরে উত্‌সবে মাতল দুই ব্লক

একটি নয়। এক দিনে দু’টি ফাইনাল। তাকে ঘিরেই কালী পুজোর আগে উত্‌সবে মাতল দুবরাজপুর ও খয়রাশোল এই দুই ব্লকের মানুষ। মঙ্গলবার দু’টি জায়গাতেই কানায় কানায় ভর্তি ফুটবল মাঠ। হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতি মিলন মেলার চেহারা নিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০১৪ ০০:৩২
Share:

খয়রাশোলে ফাইনাল ম্যাচের একটি মুহূর্ত।—নিজস্ব চিত্র।

একটি নয়। এক দিনে দু’টি ফাইনাল। তাকে ঘিরেই কালী পুজোর আগে উত্‌সবে মাতল দুবরাজপুর ও খয়রাশোল এই দুই ব্লকের মানুষ। মঙ্গলবার দু’টি জায়গাতেই কানায় কানায় ভর্তি ফুটবল মাঠ। হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতি মিলন মেলার চেহারা নিল।

Advertisement

দুবরাজপুর রামকৃষ্ণ আশ্রম পরিচালিত শ্রী শ্রী ঠাকুর সত্যানন্দদেব শিল্ড টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলাটি হল স্থানীয় এমজি রয়্যাল ও বর্ধমানের কুমারডিহি আমরা কজন ফুটবল দলের মধ্যে। শহরের সারদা ফুটবল ময়দানে আয়োজিত ওই ফাইনাল খেলায় কুমারডিহির আমরা কজনকে ৩-২ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় এমজি রয়্যাল। অন্য দিকে, খয়রাশোলের বারাবন মিলনসঙ্ঘ পরিচালিত ফুটবল প্রতিযোগিতায় নওপাড়া ফুটবল একাদশকে ১-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় ভাদুলিয়া সাবির একাদশ। আয়োজকদের তরফে জানানো হয়েছে দু’টি টুর্নামেন্টই বহ বছর ধরে হয়ে আসছে। দুবরাজপুর রামকৃষ্ণ আশ্রম পরিচালিত টুর্নামেন্টটি এ বার ৫৩তম বর্ষে পড়ল। আটটি দল নিয়ে টুর্নামেন্টটি শুরু হয়েছে গত ১৪ অক্টোবর থেকে। অন্য দিকে বারাবন মিলন সঙ্ঘের পরিচালিত টুর্নামেন্টের বয়স ২৩ বছর। গত ১৯ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়েছিল ১৬টি দল।

সত্যানন্দদেব শিল্ড টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচ দেখতে উপচে পড়া ভিড় দুবরাজপুরে। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত।

Advertisement

রামকৃষ্ণ আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা স্বামী ভূপানন্দ গুরু সত্যানন্দের নামে যে টুর্নামেন্ট শুরু করছিলেন সেই ফুটবল খেলার জনপ্রিয়তা প্রথম থেকেই যথেষ্ট। আজও সমান জনপ্রিয় ওই টুর্নামেন্ট। দেখার জন্য মুখিয়ে থাকেন দুবরাজপুরের মানুষ। শুধু শহরের নয় গোটা ব্লক বা ব্লকের বাইরের হাজার হাজার মানুষ খেলা দেখতে মাঠে আসেন। এ দিনও তার অন্যথা হয়নি। আর বারাবন গ্রামে ওই ফুটবল প্রতিযোগিতা এখন কার্যত গ্রামীণ উত্‌সবে পরিণত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্লাব সম্পাদক শেখ শাহজাহান ও সভাপতি হসেম খানরা। তাঁরা বলছেন, “তিনদিন খেলাকে ঘিরে গ্রামে মেলা বসে। নাগরদোলা, হরেকমালের দোকান, নানান খাবারের স্টলে দুপর থেকেই উপচে পাড়া ভিড়।” স্থানীয় বাসিন্দা জের মহম্মদ ও অসীম শীলরা বলছেন, “গ্রামে প্রতি পরিবারই আত্মীয়পরিজনরা এই সময় আসেন। প্রান্তিক এই গ্রামে তেমন কোনও বিনোদন তো নেই। তাই এই তিনদিন মেলা, ফুটবল নিয়ে কোলাহলে, আনন্দে সকলেই দারুন কাটান।”

দুবরাজপুরে শুধু ফাইনাল খেলা থাকলেও, বারাবনে ফাইনালের আগে দু’টি সেমিফাইনালও ম্যাচ হয়েছে মঙ্গলবারই। দুবরাজপুরে খেলা শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী, রামকৃষ্ণ আশ্রমের সভাপতি স্বামী গৌরানন্দ, আশ্রমের শীর্ষ সেবক সত্যশিবানন্দ, পুরপ্রধান পীযূষ পাণ্ডে প্রমুখ। সভাধিপতি আশ্রমের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে টুর্নামেন্টের আরও উজ্বল ভবিষ্যত্‌ কামনা করেছেন। খেলা শেষে বিজয়ী ও রানার্স দলের হাতে সত্যানন্দ শীল্ড কাপ তুলে দেওয়ার পাশাপাশি দু’টি দলকে নগদ ১৫ হাজার ও ১০ হাজার টাকা পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন শীর্ষ সেবক সত্যশিবানন্দ। অন্য দিকে বারাবনে বিজয়ী ও রানার্স দলের হাতে ট্রফি তুলে দেওয়ার পাশাপশি দু’টি মোটরবাইকও দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে আয়োজক ক্লাব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন