বর্ধমানে অমিত শাহের জনসভায় লোক নিয়ে যেতে বাঁকুড়ার গ্রামে গ্রামে প্রচার চালাচ্ছে বিজেপি। রবিবার বিকেলে বেলিয়াতোড় থানার বারোবেন্দ্যা গ্রামে তেমনই এক পথসভা শুরুর আগে সভায় হামলা চালিয়ে মঞ্চ, চেয়ার ও সাউন্ডবক্স ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বিজেপি কর্মীদের মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। যদিও স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
আগামী ২০ জানুয়ারি বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ পাশের জেলা বর্ধমানে জনসভা করতে আসায় নতুন করে উদ্বেগ বেড়েছে তৃণমূলের। তাই ওই সভায় লোক নিয়ে যাওয়া আটকাতে তৃণমূলের লোকজন মরিয়া হয়ে উঠেছে বলে বিজেপির অভিযোগ। তাঁদের দাবি, বেলিয়াতোড়ে দলের ওই পথসভায় তৃণমূলের হামলার ঘটনা তারই প্রমাণ।
বিজেপি সূত্রের খবর, এ দিন বিকেলে গঙ্গাজলঘাটি ব্লকের পিড়রাবনি পঞ্চায়েতের বারোবেন্দ্যা গ্রামে তারা একটি পথসভার আয়োজন করেছিল। বিজেপির গঙ্গাজলঘাটি ব্লক সভাপতি আলোক প্রামাণিকের অভিযোগ, “তৃণমূলের প্রায় ৫০ জন মিছিল করে এসে মঞ্চের আশপাশে থাকা আমাদের কর্মীদের মারধর করে মঞ্চ, চেয়ার ও সাউন্ডবক্স ভেঙে দেয়। এর জেরে সভা বাতিল করতে হয়েছে।” তিনি বেলিয়াতোড় থানায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। যদিও তৃণমূলের গঙ্গাজলঘাটি ব্লক সভাপতি প্রদীপ চক্রবর্তীর দাবি, “কোনও ঝামেলাই হয়নি। প্রচারে আসার জন্য বিজেপি নাটক করছে। এলাকায় বিজেপির সমর্থনই নেই।”
যদিও তৃণমূলের স্থানীয় নেতা-কর্মীরাই জানাচ্ছেন, ওই এলাকায় বিজেপির প্রভাব বাড়ছে। পিড়রাবনি পঞ্চায়েতের ক্ষমতা বরাবর সিপিএমের দখলে থাকলেও বছর দু’য়েক আগে পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল ওই পঞ্চায়েত দখল করে।
কিন্তু গত এক বছরে ছবিটা বদলে গিয়েছে। এলাকায় সিপিএমের একটা বড় অংশ বিজেপিতে যোগ দিয়েছে। তৃণমূলের কিছু পঞ্চায়েত সদস্য এবং নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে দলের কিছু কর্মীও দলীয় কাজে বিমুখ হয়ে পড়েছেন। বিজেপির জেলা মুখপাত্র অজয় ঘটকের দাবি, “তৃণমূলের বিক্ষুদ্ধ অনেকেই আমাদের দলের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে শুরু করেছেন।” এ ছাড়া ব্লক নেতাদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেও অনেকে বিরক্ত। সব মিলিয়ে তৃণমূলের পালের হাওয়া কিছুটা কাড়তে শুরু করেছে বিজেপি। এলাকার তৃণমূল নেতা তথা পিড়রাবনি পঞ্চায়েতের প্রধান মাধুরী রায়ের স্বামী সাধন রায়ের কথাতেই তা স্পষ্ট। তিনি বলেন, “এলাকায় আমাদের দলের বিক্ষুব্ধদের একাংশ বিজেপিতে ঢুকেছে। সন্দেহ নেই, এতে ওদের সংগঠন বাড়ছে। আমরা বিষয়টি জেলা নেতৃত্বকে জানিয়েছি।”
সে জন্যই কি পাল্টা হামলা? প্রশ্ন বিজেপি কর্মীদের। বিজেপি-র রাজ্য সহ-সভাপতি সুভাষ সরকার বলেন, “মারধর করে ওরা ক’টা জায়গায় বিজেপিকে ঠেকাবে? রাজ্যের সর্বত্র এখন পদ্মফুল ফুটছে। বর্ধমানে অমিত শাহের সভায় জনবিস্ফোরণ হবে।”