বিষ্ণুপুরের দ্বারিকা শিল্পতালুকের লকআউট হয়ে থাকা ফেরো অ্যালয় কারখানা খোলার লক্ষ্যে এ বার কলকাতায় বৈঠক ডাকল শ্রম দফতর। আজ, শুক্রবার ওই বৈঠক হবে। বুধবার রাতে এই সংক্রান্ত চিঠি পৌঁছেছে কারখানা খোলার দাবিতে আন্দোলনকারী শ্রমিক সংগঠনগুলির হাতে। বৃহস্পতিবার বিষ্ণুপুরের সহকারী শ্রম কমিশনার সুভাষ মুখোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্যের অতিরিক্ত শ্রম কমিশনার শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টায় এই ত্রিপাক্ষিক বৈঠকটি ডেকেছেন শ্রমমন্ত্রীর চেম্বারে। মালিকপক্ষ ও শ্রমিক সংগঠনগুলির হাতে সে চিঠি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।”
২০০০ সালে অন্ধ্রপ্রদেশের এক শিল্পগোষ্ঠী দ্বারিকা ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ সেন্টারে ‘শ্রী বাসবী ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’ নামে ওই ফেরো অ্যালয় কারখানাটি তৈরি করেছিল। গত ১৫ ডিসেম্বর রাতের ডিউটিতে আসা কর্মীদের নিরাপত্তারক্ষী দিয়ে বের করে গেটে তালা মেরে ‘লক-আউট’ নোটিস ঝুলিয়ে দেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। এক ধাক্কায় কাজ হারান অন্তত ৮০০ শ্রমিক। কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে একযোগে পথে নামে তৃণমূল, সিপিএম এবং বিজেপি প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন। শ্রমিক-কর্মীদের নিয়মনীতি মেনে কাজ করতে না চাওয়ার মানসিকতা ও কাঁচামালের জোগানে টানই কারখানা বন্ধের কারণ হিসেবে দাবি করেছিলেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকেরা যদিও নিয়ম না মানার কথা অস্বীকার করেছিলেন।
কারখানা খোলার দাবিতে গেটের সামনে এখনও অবস্থান-বিক্ষোভ চালাচ্ছেন কর্মহীন শ্রমিক-কর্মীরা। ইতিমধ্যেই প্রশাসনের উদ্যোগে দুর্গাপুর ও বিষ্ণুপুরে হওয়া দু’টি ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ভেস্তে গিয়েছে। এই অবস্থায় রাজ্য শ্রম দফতর থেকে বৈঠকের যাওয়ার চিঠি পেয়ে কিছুটা আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন শ্রমিক সংগঠনগুলির নেতারা। ওই কারখানার সিটু শ্রমিক সংগঠনের নেতা তথা সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক স্বপন ঘোষ বলেন, “ওই বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছি। শ্রম দফতর ও মন্ত্রীর ডাকা বৈঠক। তাই আমরা এ বার কিছুটা আশাবাদী যে, জট নিশ্চয় খুলবে।” একই রকম আশায় বুক বেঁধেছেন আইএনটিটিইউসি-র দ্বারিকা ইউনিটের সভাপতি উদয় ভকত। তিনি বলেন, “শুক্রবারের বৈঠক শেষে আশা করছি একটা সুখবর মিলবে।” তবে, কারখানা না খোলা পর্যন্ত গেটে অবস্থান-বিক্ষোভ চলবে বলেই জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা।