শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও তাঁর দলেরই ছাত্র সংগঠন কলেজ অধ্যক্ষকে ফের ঘেরাও করল বাড়তি ছাত্র ভর্তির দাবিতে। বুধবার হুড়ার লালপুর মহাত্মা গাঁধী কলেজের ঘটনায় অধ্যক্ষের সঙ্গে তিন ঘন্টারও বেশি আটকে রইলেন ন’জন শিক্ষক।
সিধো কানহো বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন এই কলেজে এ দিন ছাত্র ভর্তি হয়। সব আসন পূর্ণ হওয়ার পরেও আরও ভর্তির দাবি তোলে টিএমসিপি। অধ্যক্ষ কিঙ্করকুমার ঘোষের অভিযোগ, “প্রায় ১০০ জন বাড়তি ছাত্রের ভর্তির দাবিতে সন্ধ্যায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতৃত্বে কিছু ছাত্র আমার অফিসে তালা মেরে দেয়। আমার সঙ্গে ন’জন শিক্ষক বন্দি হয়ে পড়েন।” তিনি জানান, কলেজে প্রথম বর্ষের আসন ১১৮৫। কিছু বাড়তি আসন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুর করায় ১২৮৯ পড়ুয়াকে ভর্তি নেওয়া হয়। তাঁর প্রশ্ন, “আরও ছাত্র ভর্তির দাবি পূরণ হবে কী ভাবে?”
কলেজে গিয়ে পুলিশকর্তারা বিক্ষোভকারীদের বোঝানোর চেষ্টা চালান। রাত সাড়ে ন’টায় কলেজে আসেন পরিচালন সমিতির সভাপতি নরেন চক্রবর্তী। ইনস্পেক্টর অব কলেজ প্রিয়নাথ হালদার বলেন, “গোলমালের খবর পেয়েছি। কলেজের দাবিতে কিছু আসন বাড়িয়েছি। অধ্যক্ষ সমস্যার কথা জানালে ফের ভাবা হবে।”
কলেজের ছাত্র সংসদের ক্ষমতা রয়েছে টিএমসিপি। ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক প্রসেনজিৎ মাহাতো বলেন, “এখনও ১০০ ছাত্রছাত্রী ভর্তি হতে পারেনি। কলেজ কর্তৃপক্ষকে তাঁদের ভর্তি নিতে জানিয়েছিলাম। তারা কথা শোনেনি বলেই আমরা অবরোধ করেছি।” ছাত্রদের প্রতি শিক্ষামন্ত্রীর সতর্ক বার্তা নিয়ে জানতে চাওয়া হলে জবাব দেননি তিনি।
বুধবার ভর্তি প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটানোর অভিযোগ উঠেছে বর্ধমানেও। দুপুরে কালনা কলেজের অফিসে অনার্সের আবেদনকারীদের জমা-দেওয়া ফর্ম ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন যুবকের বিরুদ্ধে। সন্ধ্যায় কালনা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। ১৬ অগস্ট পর্যন্ত কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। কলেজ সূত্রে খবর, অনার্সের ফাঁকা আসনে ভর্তির জন্য ফর্ম জমা নেওয়ার কাজ চলছিল। তখনই একদল যুবক অফিসে ঢুকে ওই ফর্ম ছিনিয়ে নেয় বলে অভিযোগ। ওই কলেজে ছাত্র সংসদ টিএমসিপি-র। নির্দিষ্ট কারও নামে অভিযোগ দায়ের করেননি কলেজ কর্তৃপক্ষ। টিএমসিপি-র মুখপাত্ররা দাবি করেছে, সংগঠন এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নয়।