বধির ছাত্রকে সাহায্য শিক্ষিকার

মুখ্যমন্ত্রী, প্রশাসনের কর্তাব্যক্তি কিংবা নিজের স্কুলের কোনও শিক্ষক-শিক্ষিকা নন। বধির ছাত্রের আবেদনে সাড়া দিয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলেন জেলার অন্য স্কুলের এক শিক্ষিকা। চাহিদা মতো শ্রবণ যন্ত্র কেনার টাকা ওই ছাত্রের বাবার হাতে তুলে দেন সিউড়ি লালদিঘি পাড়ার বাসিন্দা শিক্ষিকা স্বাগতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ময়ূরেশ্বর শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৪ ০০:৩৫
Share:

মুখ্যমন্ত্রী, প্রশাসনের কর্তাব্যক্তি কিংবা নিজের স্কুলের কোনও শিক্ষক-শিক্ষিকা নন। বধির ছাত্রের আবেদনে সাড়া দিয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলেন জেলার অন্য স্কুলের এক শিক্ষিকা। চাহিদা মতো শ্রবণ যন্ত্র কেনার টাকা ওই ছাত্রের বাবার হাতে তুলে দেন সিউড়ি লালদিঘি পাড়ার বাসিন্দা শিক্ষিকা স্বাগতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ময়ূরেশ্বর থানার তেরাতরী গ্রামের গোপাল দাস ছোট থেকেই দু’কানে শুনতে পায় না। স্থানীয় লোকপাড়া হাই স্কুলের নবম শ্রেণির এই ছাত্রের বাবা সামান্য বেতনের তেল কলের কর্মী। সংসারে কার্যত নুন আনতে পান্তা ফুরনোর হাল। তাই ছেলেকে একটি কানে শোনার যন্ত্র কিনে দিতে পারেননি তিনি। ফলে ক্রমাগত পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়তে হচ্ছিল গোপালকে। বছর তিনেক আগে চন্দনবাবুর ওই অসহায়তার কথা শুনে কানে শোনার যন্ত্র কেনার অর্থ বরাদ্দ করেন সংশ্লিষ্ট ময়ূরেশ্বর ২ ব্লকের তত্‌কালীন বিডিও বাবুলাল মাহাতো। তখনকার মতো সমস্যা মিটলেও ফের একই পরিস্থিতিতে পড়তে হয় গোপালকে। মাস খানেক আগে স্কুলে বন্ধুদের সঙ্গে খেলার সময় যন্ত্রটি পড়ে গিয়ে ভেঙে যায়। ফের ১০ হাজার টাকা দিয়ে কিনতে হবে ওই যন্ত্র। কিন্তু স্কুল কিংবা প্রশাসনের কাছে আবেদন করেও কোথাও ইতিবাচক সাড়া না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েন গোপালের বাবা-মা। শেষমেষ তাদের অসহায়তার কথা জানিয়ে খোদ মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লেখে গোপাল। সংবাদমাধ্যমে সেই খবর পড়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন শিক্ষিকা স্বাগতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বুধবার নিজের বাড়িতে ডেকে তিনি চন্দনবাবুর হাতে যন্ত্র কেনার জন্য প্রয়োজনীয় ১০ হাজার টাকা তুলে দেন। স্বাগতাদেবী মহম্মদবাজারের মালাডাঙা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। স্থানীয় তিলপাড়া পঞ্চায়েতের নির্দল সদস্যা ওই শিক্ষিকা বর্তমানে বিজেপি’র জেলা মহিলা মোর্চার সভানেত্রী। তিনি বলেন, “এই রকম একটি ছোট্ট বিষয় নিয়ে কোনও পড়ুয়াকে কেন মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখতে হল তা ভেবে পাচ্ছি না। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে ওই ছাত্রের পাশে দাঁড়িয়েছি।” আর চন্দনবাবু? আবেগে আপ্লুত গলায় বলেন, “প্রশাসন থেকে স্কুল কর্তৃপক্ষ যখন আমাকে বিমুখ করেছিল, তখন প্রায় আশাই ছেড়ে দিয়েছিলাম। স্বাগতাদেবীকে ধন্যবাদ জানানোর ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না।”

Advertisement

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন