ভাঙছে রাস্তা, ক্ষোভ জঙ্গলমহলে

রাস্তা তো নয়, যেন মরণফাঁদ! কোথাও পিচ উঠে গিয়েছে, কোথাও খানাখন্দ হাঁ করে আছে। রাস্তাজুড়ে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত। বাঁকুড়ার জঙ্গলমহল রানিবাঁধ ব্লকের বেশ কয়েকটি রাস্তার এমনই বেহাল দশা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রানিবাঁধ শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৪ ০৩:০০
Share:

রানিবাঁধের হলুদকানালি গ্রামের কাছে বারিকুল যাওয়ার রাস্তার হাল। —নিজস্ব চিত্র

রাস্তা তো নয়, যেন মরণফাঁদ! কোথাও পিচ উঠে গিয়েছে, কোথাও খানাখন্দ হাঁ করে আছে। রাস্তাজুড়ে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত। বাঁকুড়ার জঙ্গলমহল রানিবাঁধ ব্লকের বেশ কয়েকটি রাস্তার এমনই বেহাল দশা।

Advertisement

রানিবাঁধ থেকে ঘাঘরা হলুদকানালি হয়ে বারিকুল এবং ঝিলিমিলি থেকে মাধবপুর, সারেংসোগড়া হয়ে বারিকুল যাওয়ার রাস্তা বেশ খারাপ। একই অবস্থা ফুলকুসমা-বারিকুল রাস্তার। দীর্ঘদিন ধরে ওই রাস্তাগুলি বেহাল হয়ে থাকায় ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা। অবিলম্বে তাঁরা ওই রাস্তা সংস্কারের দাবিতে সরব হয়েছেন।

রানিবাঁধ থেকে বারিকুল যাওয়ার রাস্তার মধ্যে ঘাঘরা হলুদকানালি, কতরো, বটডাঙা, খেজুরখেন্ন্যা এলাকায় রাস্তার অবস্থা সবচেয়ে শোচনীয়। ঝিলিমিলি মোড় থেকে মাধবপুর, শুড়িতাড়ি মোড়, সারেংসোগড়া, ছেঁন্দাপাথর হয়ে বারিকুল পর্যন্ত প্রায় ২২ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রাস্তার একই অবস্থা। বারিকুল থেকে লেপাম, রসপাল হয়ে ফুলকুসমা পর্যন্ত রাস্তায় ঘুরে অসংখ্য ছোট বড় গর্ত দেখা গিয়েছে। কতরো গ্রামের কাছে ভৈরববাঁকি নদীর উপরে নিচু সেতুর একাংশ গত এক বছর ধরে ভেঙে পড়ে রয়েছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, প্রায় এক বছর ধরে ওই রাস্তাগুলির খারাপ অবস্থা। রানিবাঁধ ব্লকের রাওতোড়া, বারিকুল পঞ্চায়েতের প্রায় ৪০টি গ্রামের ৫০ হাজারের বেশি মানুষ প্রতিদিন নানা প্রয়োজনে এই রাস্তার উপর দিয়ে যাতায়াত করেন। বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে রাস্তা মেরামত না হওয়ায় খানাখন্দ আরও বড় আকার নিয়েছে। বিপজ্জনক আকার ধারণ করেছে। তবু রাস্তা সংস্কারে কোনও উদ্যোগ নজরে পড়ে না।

Advertisement

পূর্ণাপানি গ্রামের বাসিন্দা মধু সিং সর্দার, বারিকুলের নীলু কিস্কু বলেন, “রানিবাঁধ থেকে বারিকুল হয়ে ঝিলিমিলি ও ফুলকুসমা রাস্তায় আগে ৭-৮টি বাস চলত। বৃষ্টিতে রাস্তার অনেক জায়গায় বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। পিচ, বোল্ডার উঠে গিয়েছে। রাস্তার এই বেহাল দশা দেখে একে একে বাস চলাচল বন্ধ হতে বসেছে। এখন মাত্র চারটি বাস সারাদিনে এই রাস্তায় যাতায়াত করছে।” এলাকার ছাত্রছাত্রীদের ক্ষোভ, বাস চলাচল অনিয়মিত হয়ে পড়ায় কলেজ ও টিউশন পড়তে যেতে ভীষণ অসুবিধা হচ্ছে। পড়াশোনা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বারিকুলের দীননাথ সিং সর্দার বলেন, “প্রায়দিনই প্রয়োজনে ব্লক সদর রানিবাঁধে যেতে হয়। আগের তুলনায় রাস্তার অবস্থা দিন দিন খারাপ হয়ে পড়ছে। আমাদের মতো নিত্যযাত্রীরা চরম সমস্যায় পড়ছি।”

গাড়ি চালকদের ক্ষোভ, রাস্তার বেহাল দশার জন্য প্রায়দিনই গাড়ির যন্ত্রাংশ ভাঙছে। সময় মতো গন্তব্যস্থলে পৌঁছানো যাচ্ছে না। এলাকার মানুষের অভিযোগকে সমর্থন করে তৃণমূলের রানিবাঁধ ব্লক সভাপতি সুনীল মণ্ডল বলেন, “কিছু কিছু এলাকায় রাস্তার অবস্থা সত্যিই খুব খারাপ। রাস্তাগুলি অবিলম্বে সংস্কারের জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছি।”

রানিবাঁধের বিডিও সুমন্ত দেবনাথ অবশ্য দাবি করেন, “জঙ্গলমহলের বেশ কয়েকটি রাস্তা জেলা পরিষদের। ওই রাস্তাগুলি সংস্কারের জন্য ইতিমধ্যে আমরা জেলা পরিষদের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছি।” তিনি জানান, জেলাপরিষদের তরফে রাস্তাগুলি সংস্কারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে ব্লক প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “ওই রাস্তাগুলি ভালোভাবে সংস্কারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।” তাঁর আশ্বাস, বর্ষার পরেই রাস্তা মেরামতির কাজ শুরু হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন