ভোট বেশি পেলে বেশি উন্নয়ন, বললেন শতাব্দী

এ বার বিতর্কিত মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে পড়লেন বীরভূম কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায়। শনিবার মহম্মদবাজারে এক জনসভায় তিনি বলেন, যে এলাকায় তৃণমূল ভোট কম পাবে, সেখানে উন্নয়নও কম হবে। শতাব্দীর মন্তব্য, “যে পরে দেবে ভোট, যে কম দেবে ভোট, সে পরে উপকার পাবে। যে আগে বেশি ভোট দেবে বা যে এলাকা, যে অঞ্চল, যে গ্রাম বেশি ভোট দেবে, তাদের আরও উপকার করব।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মহম্মদবাজার শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৪ ০২:৫৩
Share:

এ বার বিতর্কিত মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে পড়লেন বীরভূম কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায়। শনিবার মহম্মদবাজারে এক জনসভায় তিনি বলেন, যে এলাকায় তৃণমূল ভোট কম পাবে, সেখানে উন্নয়নও কম হবে। শতাব্দীর মন্তব্য, “যে পরে দেবে ভোট, যে কম দেবে ভোট, সে পরে উপকার পাবে। যে আগে বেশি ভোট দেবে বা যে এলাকা, যে অঞ্চল, যে গ্রাম বেশি ভোট দেবে, তাদের আরও উপকার করব।” স্বাভাবিক ভাবেই শতাব্দীর বিরুদ্ধে ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা।

Advertisement

বীরভূমে ভোট ৩০ এপ্রিল। সোমবারই শেষ হচ্ছে প্রচারপর্ব। শনিবার মহম্মদবাজার থানা এলাকায় মোট ১২টি সভা করেন বিদায়ী সাংসদ শতাব্দী। চড়িচা পঞ্চায়েতের দোবাঁধি গ্রামের সভায় শতাব্দী তাঁর নির্বাচনী কেন্দ্রে গত পাঁচ বছরের উন্নয়নের ফিরিস্তি দিচ্ছিলেন। এক মহিলা বলে ওঠেন, “দিদি আমাদের একটু দেখবেন।” এর পরেই শতাব্দী বলেন, “যদি সত্যি দেখি, এতগুলো মানুষের ভোট কম পড়েছে, সেখানে উন্নয়ন হবে না। আমরা সেখানেই উন্নয়ন করব, যেখানে বেশি লোক আমাদের পক্ষে আছে।” আরও ভেঙে বলেন, “যারা আমাদের কম ভোট দেবে, তাদের গ্রামগুলোতে পরে উন্নয়ন করব। যারা আমাদের সঙ্গে থাকবে তারা বেশি সুযোগ পাবে। তার পরে আপনারা পাবেন।”

এই মন্তব্যের কথা কানে পৌঁছতেই বীরভূমের জেলাশাসককে রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কমিশনের রাজ্য দফতরের ওএসডি অমিত রায়চৌধুরী বলেন, “অভিযোগটি কমিশনের কানে এসেছে। জেলাশাসককে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা বলেন, “তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে অ্যাসিস্ট্যান্ট রিটার্নিং অফিসারকে বলা হয়েছে। রিপোর্ট পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Advertisement

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মহম্মদ সেলিমের কটাক্ষ, “উনি (শতাব্দী) নতুন কিছু বলেননি। বিধানসভা, পুরসভা থেকে পঞ্চায়েত পর্যন্ত তাঁদের নেত্রী যে দলতন্ত্রের সংস্কৃতি চালাচ্ছেন, তাকেই আরও এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী!” প্রদেশ কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্যের মতে, “এ রকম বাছবিচার গণতন্ত্রে করা যায় না। সংবিধান সম্পর্কে নিজেদের অজ্ঞতাই প্রকাশ করা হয় এ ধরনের মন্তব্যে।” সেলিমের মন্তব্য, “সংসদীয় গণতন্ত্রে ভোটে জেতার পরে কেউ আর দলের সাংসদ থাকেন না। তিনি তাঁর কেন্দ্রের সব মানুষের প্রতিনিধি।” শতাব্দীর সমালোচনায় সরব তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীরাও। বীরভূমের কংগ্রেস প্রার্থী সৈয়দ সিরাজ জিম্মি বলেন, “এক জন সাংসদের কতটা দায়িত্ব হওয়া উচিত, কী করণীয় আর কী করণীয় নয় উনি এখনও সেটাই বুঝে উঠতে পারেননি। এখনও ওঁর কথাবার্তা সিনেমার মতোই।” বিজেপি প্রার্থী জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “এক জন সাংসদ বা কোনও প্রতিনিধি তাঁদেরকে মনে রাখতে হবে, তিনি এলাকার সকলেরই প্রতিনিধি। এই মন্তব্য প্রমাণ করে তিনি সে ধর্ম পালন করছেন না।” ভোটের নিরিখে উন্নয়ন গণতন্ত্রের পরিপন্থী বলে মন্তব্য করেন সিপিএম প্রার্থী কামরে ইলাহি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন