মেয়েদের স্কুল গড়তে জমি-টাকা দিতে প্রস্তুত লোকপাড়ার বাসিন্দারা

এলাকার বাসিন্দাদের উদ্যোগে একে একে গড়ে উঠেছে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে কলেজ। এ বার দাবি উঠেছে বালিকা বিদ্যালয়ের। ইতিমধ্যে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে বালিকা বিদ্যালয় গড়ার দাবি জানিয়েছেন ময়ূরেশ্বরের লোকপাড়া সংলগ্ন এলাকার মানুষজন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ময়ূরেশ্বর শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৪ ০০:৩৯
Share:

এলাকার বাসিন্দাদের উদ্যোগে একে একে গড়ে উঠেছে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে কলেজ। এ বার দাবি উঠেছে বালিকা বিদ্যালয়ের। ইতিমধ্যে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে বালিকা বিদ্যালয় গড়ার দাবি জানিয়েছেন ময়ূরেশ্বরের লোকপাড়া সংলগ্ন এলাকার মানুষজন।

Advertisement

জেলা শিক্ষা দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বাধীনতার আগে লোকপাড়ায় স্থানীয় শিক্ষানুরাগী মানুষজনের সহযোগিতায় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় গড়ে ওঠে। একই ভাবে ১৯৫০ সালে চালু হয় মাধ্যমিক স্কুল। পরবর্তীকালে উচ্চ মাধ্যমিকে উন্নীত হয় স্কুলটি। এর পরেই লোকপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রয়াত নবকিশোর হাজরার নেতৃত্বে এলাকায় একটি কলেজ স্থাপনে উদ্যোগী হন শুভবুদ্ধিসম্পন্ন বেশ কিছু ব্যক্তি। সংগ্রহ করেন কলেজ স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় জমি এবং টাকা। দীর্ঘ টানাপোড়নের পর ২০১০ সালে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদনের পর চালু হয় কলেজটি। এর পরেই লোকপাড়ায় একটি বালিকা বিদ্যালয় স্থাপনের দাবি জোরালো হয়। কারণ, কাছাকাছির মধ্যে ময়ূরেশ্বর ২ ব্লকে একমাত্র বালিকা বিদ্যালয় রয়েছে। অথচ লোকপাড়া সন্নিহিত এলাকায় নারী শিক্ষার হার ক্রমাগত বাড়ছে। লোকপাড়া হাইস্কুল সূত্রেই জানা গিয়েছে, বর্তমানে ওই স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ২ হাজারের বেশি। তাদের মধ্যে ৫০ শতাংশই ছাত্রী।

লোকপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির সম্পাদক প্রভাকর মণ্ডল বলেন, “শুধু আমাদের স্কুলেই নয়, এলাকার ১০-১২টি স্কুলেই নারী শিক্ষার হার বাড়ছে। তার উপর আমাদের স্কুলের উপরেই স্থানীয় ৫-৬টি জুনিয়র হাইস্কুল কিংবা মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রের পড়ুয়ারা নির্ভরশীল। স্বভাবিক ভাবেই প্রতিবছর ভর্তির সময় সমস্যা হয়। স্থানাভাবে অনেকে ভর্তির সুযোগ পায় না। এই অবস্থায় লোকপাড়ায় একটি বালিকা বিদ্যালয় হলে ওই সমস্যা দূর হবে। নারী শিক্ষার হারও বৃদ্ধি পাবে।”

Advertisement

বালিকা বিদ্যালয় হলে শুধু বীরভূমের স্কুলগুলিই নয়, ভৌগলিক অবস্থানজনিত কারণে লোকপাড়া বীরভূম ও মুর্শিদাবাদের মধ্যস্থলে হওয়ায় মুর্শিদাবাদের বেশি কিছু স্কুলের চাপ কমবে বলেই স্থানীয় শিক্ষাবিদদের অভিমত। কারণ, লোকপাড়ার ৪-৫ কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যেই রয়েছে মুর্শিদাবাদের মাজিয়ারা, সাহোড়া, সমতরী-সহ বেশ কিছু স্কুল। সমতরীর ঝর্না মণ্ডল, প্রজাপাড়ার মর্জিনা বিবিদের কথায়, “মেয়েদের নিজস্ব কিছু সমস্যা রয়েছে। কো-এড স্কুলে এজন্য তাদের অস্বস্তিতে পড়তে হয়।”

লোকপাড়া কলেজ নির্মাণের সংগঠক সদস্য সুভাষচন্দ্র ঘোষ, ফটিকচন্দ্র দে বলেন, “কলেজের মতো আমরা বালিকা বিদ্যালয়ের জন্যও আমরা প্রয়োজনীয় জমি এবং টাকা জোগাড় করতে পারব। সব জানিয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে চিঠিও পাঠানো হয়েছে।” জেলা শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শেখ শাহজাহান বলেন, “গ্রামবাসীদের দাবি খতিয়ে দেখার পরে যদি সত্যিই বালিকা বিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে বোঝা যায়, তা হলে জেলা পরিষদের তরফে যা করার তা করা হবে।” রামপুরহাটের তৃণমূল বিধায়ক তথা উচ্চ শিক্ষা দফতরের সচিব আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিষয়টি উচ্চ শিক্ষা দফতরের এক্তিয়ারভুক্ত নয়। তবে লোকপাড়ায় বালিকা বিদ্যালয় গড়ার দাবি বাস্তবোচিত। তাই গ্রামবাসীদের দাবির বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন