শিক্ষকদের অনিয়মিত আসা-যাওয়া সহ একগুচ্ছ অভিযোগে ঝালদার পুস্তি অঞ্চল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ঘেরাও করে রাখলেন এলাকাবাসী। সোমবারের ঘটনা। পরে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে বাসিন্দারা আলোচনা করার পরে ঘেরাও তুলে নেওয়া হয়। এর জেরে প্রথম দিকে কয়েকটি পিরিয়ডে পড়াশোনা ব্যহত হয়।
স্কুলে শিক্ষকদের দেরিতে আসা এবং তার জেরে পড়ুয়াদের পঠনপাঠন ও পরীক্ষার ফলে প্রভাব পড়ছে বলে অভিভাবকদের অভিযোগ। এ ছাড়া মিড-ডে মিল নিয়ে নানাবিধ অভিযোগ রয়েইছে। এই সব অভিযোগ নিয়ে এ দিন ১১টার আগে স্কুলে জড়ো হন বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁদের দাবি, এ দিন স্কুল শুরুর নির্দিষ্ট সময়ে উপস্থিত হয়ে তাঁরা দেখেন স্কুলে প্রধানশিক্ষক আসেননি। ক্ষুদ্ধ হয়ে তাঁরা স্কুলের দরজার সামনে অবস্থান শুরু করেন। তাঁদের দাবি, বেলা ১১টা নাগাদ আট-দশজন শিক্ষক আসেন। কিন্তু তখনও প্রধানশিক্ষক আসেননি।
স্থানীয় বাসিন্দা শংকর মাহাতো, রূপেশ দাস, বেণুগোপাল গড়াই, কমল মাহাতো জানান, স্থানীয় কনকপুর, হেঁসলা, পুস্তি, ভাকুয়াডি, গোঁসাইডি, তোড়াং, কাঁটাডি-সহ একাধিক গ্রামের পড়ুয়াদের এই স্কুলের উপরই ভরসা করতে হয়। অথচ দিন দিন স্কুলে শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ছে। স্কুলে শিক্ষকরাই অনিয়মিত আসছেন। গত কয়েক বছর ধরে মাধ্যমিকেও ফল ভাল হচ্ছে না। তা ছাড়া মিড-ডে মিল নিয়েও নানা অভিযোগ রয়েছে।
এ দিন নির্দিষ্ট সময়ে প্রধানশিক্ষক না আসায় ১১টার আগে বা পরে আসা শিক্ষকদের তাঁদের সঙ্গেই বসিয়ে রাখেন ঘেরাকারীরা। শিক্ষকরা স্কুলে ঢুকতে চাইলে বাসিন্দারা তাঁদের জানান, স্কুলে তাঁধের ঢুকতে দিতে আপত্তি নেই। কিন্তু স্কুল পরিচালনা নিয়ে তাঁদের নানাবিধ অভিযোগ রয়েছে। প্রধানশিক্ষক এলে সেই সব নিয়ে নিষ্পত্তির পরে ক্লাস শুরু হবে। এক শিক্ষক বলেন, “আমরা ১১টায় এলেও আটকে রাখা হয়। তবে খারাপ ব্যবহার করা হয়নি। পড়ুয়াদেরও আটকানো হয়নি।” কিছু পরে স্কুলে প্রধানশিক্ষক আসেন। তাঁকে কার্যত ঘিরে ধরে অভিযোগগুলি নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন বাসিন্দারা। তিনি ক্লাস শুরু করতে চাইলে বিক্ষোভকারীরা তাঁর কাছে দাবি করেন, স্কুল নিয়ে স্থানীয় মানুষজনের নানাবিধ অভিযোগ রয়েছে। আগে তা প্রধানশিক্ষককে শুনতে হবে। এরপরে প্রধানশিক্ষক তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন।
পরে প্রধানশিক্ষক বিষ্ণুপদ রজক বলেন, “মাধ্যমিকে আমাদের ফল যে খুব একটা খারাপ তা নয়। তা ছাড়া মিড-ডে মিলও নিয়ম অনুযায়ী পড়ুয়াদের দেওয়া হচ্ছে। তবে স্কুলে শিক্ষকদের হাজিরার ক্ষেত্রে কখনও সামান্য দেরি হয়ে যায়।” তিনি আশ্বাস দেন, এ বার থেকে সবাই যাতে নিয়মিত ভাবে সঠিক সময়ে হাজিরা দেন তা নিয়ে তিনি সকলের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। তিনি দাবি করেন, এ দিন অসুস্থতার জন্য নিজে ছুটিতে রয়েছেন। বিক্ষোভের খবর শুনে স্কুলে এসেছিলেন। বিক্ষোভের জেরে প্রথম দিকে কিছু ক্লাস ব্যহত হলেও পরে নির্বিঘ্নে পড়াশোনা হয়েছে।