সিউড়িতে কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের সামনে অবস্থান। —নিজস্ব চিত্র।
এতদিন কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ক খোলার দাবিতে আন্দোলন সীমাবদ্ধ ছিল আমানতকারী, ব্যাঙ্কের সঙ্গে যুক্ত সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির কর্মী ও ক্ষুদ্র সঞ্চয় সংগ্রহকারী ব্যাঙ্কের এজেন্টদের মধ্যে। এবার সেই আন্দোলনে যোগ দিলেন কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের কর্মীরা।
ব্যাঙ্ক কর্মীদের দুটি বাম সংগঠন, বঙ্গীয় প্রাদেশিক ব্যাঙ্ক কর্মচারী সমিতি এবং নিখিলবঙ্গ সমবায় ব্যাঙ্ক কর্মচারী ফেডারেশনের ছত্রছায়ায় বুধবার এই আন্দোলনে নামে কর্মীরা। কার্যত ওই দিন থেকেই সমবায় ব্যাঙ্কের মূল শাখার সামনে ধর্না অবস্থান করেন জেলাজুড়ে থাকা সমবায় ব্যাঙ্কের স্থায়ী অস্থায়ী কর্মীরা। তবে শুধু ব্যাঙ্ক কর্মীরাই নন, আন্দোলনে যোগ দেন ক্ষুদ্র সঞ্চয় সংগ্রহকারী ব্যাঙ্কের এজেন্ট ও কিছু আমানতকারীও।
ঘন্টা দেড়েক ধর্না-অবস্থানের পর জেলাশাসক পণ্ডিত মোহন গাঁধীকে একটি স্মারকলিপি দেন অন্দোলনকারীরা। সংগঠনের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে একটি চিঠিও জেলাশাসকের মাধ্যমে তাঁকে পাঠাতে অনুরোধ করা হয়। প্রসঙ্গত, বিপুল পরিমান অনাদায়ী খেলাপি ঋণ থাকায় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নির্দেশে গত ১৫ মে থেকে বন্ধ রয়েছে বীরভূম জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের ১৭টি শাখা। নিখিলবঙ্গ সমবায় ব্যাঙ্ক কর্মচারী ফেডারেশনের জেলা সম্পাদক রথী চন্দ এবং বঙ্গীয় প্রাদেশিক ব্যাঙ্ক কর্মচারী সমিতির জেলা সম্পাদক মহম্মদ কামাল উদ্দিনদের দাবি, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক রাতারাতি সমস্ত লেনদেনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন আড়াই লক্ষেরও বেশি আমানতকারী। তাঁদের ব্যাঙ্কে গচ্ছিত সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা তাঁরা কী ভাবে ফেরত পাবেন সেটা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। শুধু আমানতকরীরা নন ব্যাঙ্কের সঙ্গে যুক্ত সমবার কৃষি উন্নয়ন সমিতি, এজেন্ট ব্যাঙ্কের স্থায়ী অস্থায়ী কর্মীদের ভবিষ্যত কী, সেটাও চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। তাঁরা অভিযোগ করেন, গত দু’ মাস বেতন পাননি ব্যাঙ্কের স্থায়ী অস্থায়ী ১০৫ জন কর্মী। এছাড়া এবার কৃষি ঋণ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন জেলা জুড়ে হাজার হাজার চাষি।
দুটি সংগঠনের জেলা সম্পাদকদের প্রশ্ন, “রাতারাতি তো ব্যাঙ্ক এমন অবস্থায় পৌঁছে যায়নি। এটা দীর্ঘদিন আগেই হয়েছে। তাহলে কেন আগে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ব্যবস্থা নেয়নি?” তাঁদের দাবি, রাজ্য সরকারের যেহেতু এই ব্যাঙ্কে অংশীদারিত্ব রয়েছে তাই সরকারও নিজের দায় এড়াতে পারে না। ব্যাঙ্ক বাঁচাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করুক সরকার। জেলাশাসক অন্দোলনকারীদের দাবি যথাস্থানে পৌঁছনোর আশ্বাস দিয়েছেন।