হামলার প্রতিবাদে কাজ বন্ধ, মিলল না নাগরিক পরিষেবা

হামলা হয়েছে পুরপ্রধানের বাড়ির নীচে থাকা দোকানে। শুক্রবার লিখিত অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। অথচ এর জেরে নাগরিক পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হলেন রামপুরহাট শহরের বাসিন্দারা। এ দিন শহরে পানীয় জল পরিষেবা বন্ধ না থাকলেও সাফাই-সহ অন্য পরিষেবা বন্ধ করে রাখলেন পুরকর্মীরা। স্বাভাবিক ভাবে ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রামপুরহাট শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৪ ০০:২২
Share:

কর্মীরা কাজে আসেননি। সাফাই হয়নি জঞ্জাল। —নিজস্ব চিত্র

হামলা হয়েছে পুরপ্রধানের বাড়ির নীচে থাকা দোকানে। শুক্রবার লিখিত অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। অথচ এর জেরে নাগরিক পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হলেন রামপুরহাট শহরের বাসিন্দারা। এ দিন শহরে পানীয় জল পরিষেবা বন্ধ না থাকলেও সাফাই-সহ অন্য পরিষেবা বন্ধ করে রাখলেন পুরকর্মীরা। স্বাভাবিক ভাবে ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা। ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের চন্দন সরকার, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের রামকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়দের ক্ষোভ, “ব্যক্তিগত ঝামেলাকে জনসাধারণের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া ঠিক হয়নি। তা ছাড়া, আজ যে সব দুষ্কৃতীদের কথা বলা হচ্ছে, এত দিন তাদেরকেই প্রশ্রয় দিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি।” যদিও তৃণমূলের রামপুরহাট শহর সভাপতি সুশান্ত মুখোপাধ্যায় দাবি করেছেন, “শুনেছি পুরপরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। এটা ঠিক করা হয়নি। দলকে না জানিয়ে এই ধরনের সিদ্ধান্ত পুরসভার কর্মচারীরা নিয়েছেন।”

Advertisement

রামপুরহটের বগটুই মোড় লাগোয়া পুরপ্রধান অশ্বিনী তিওয়ারির বাড়ির নীচে দোকান রয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে এক দুষ্কৃতী ওই দোকানে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। ওই দিন থানায় লিখিত অভিযোগ হয়নি। শুক্রবার দুপুরে পুরসভার সমস্ত দলের কাউন্সিলররা পুরপ্রধানের নেতৃত্বে থানায় যান এবং পুরপ্রধান লিখিত ভাবে ঘটনার কথা জানিয়ে দুষ্কৃতীকে গ্রেফতারের জন্য দাবি জানান। শুধু তাই নয়, শহরে মিছিল করেন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা। রামপুরহাট মহকুমা পুলিশ আধিকারিক কোটেশ্বর রাও বলেন, “অভিযুক্ত পলাতক। তার খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।” তাঁর দাবি, বৃহস্পতিবার রাতে পুরপ্রধানের ছেলে থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে দোকানে ভাঙচুর, চুরি এবং প্রাণনাশের হুমকি এই সমস্ত ধারায় মামলা শুরু করা হয়েছে। শুক্রবার ফের নতুন করে পুরপ্রধানের করা অভিযোগকে পুলিশের এক অফিসার জানান, একই মামলায় দু’টি এফআইআর করলে আগের মামলার বিশ্বাস যোগ্যতা থাকে না। এর জন্য পুলিশ পুরপ্রধানের করা লিখিত অভিযোগকে এফআইআর হিসেবে দেখাতে পারবে না। পুরপ্রধানের করা আবেদনকে পুলিশ বিবেচনা করে দেখছে।

এ দিকে, পুরপ্রধানের বাড়িতে হামলার প্রতিবাদে এ দিন পুরসভার মেন গেটে তালা বন্ধ ছিল। কর্মীরা কেউ কাজে যাননি। পানীয় জল সরবরাহ ছাড়া অন্য পরিষেবা বন্ধ থাকায় সময়্যায় পড়েন এলাকার বাসিন্দারা। পুরপ্রধান অশ্বিনী তিওয়ারি বলেন, “কাউন্সিলরদের নিয়ে শুক্রবার সকালে বৈঠক করা হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত নিয়ে ঘটনার বিবরণ দিয়ে পুরসভার সব কাউন্সিলরদের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে। পুরকর্মীরা কাজ বন্ধ করেছেন। এখানে আমার কী করার আছে।”

Advertisement

সিটু প্রভাবিত পুরকর্মচারীদের পক্ষে রবীন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, “পুরসভা আজকে সরকারি ভাবে ছুটি। তবে পুরপ্রধানের ঘরে হামলা এবং দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করার দাবিতে এ দিন সাফাই বিভাগের কর্মীরা কাজ করেননি।” পুরসভার বিরোধী দলনেতা সিপিএমের সঞ্জীব মল্লিক, কংগ্রেস কাউন্সিলর হিমাংশু মণ্ডল এবং বিজেপির জেলা সহসভাপতি তথা ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুপর্না চৌধূরীর স্বামী শুভাশিস চৌধুরী পুরপ্রধানের পাশে দাঁড়িয়েছেন। সঞ্জীববাবু বলেন, “১৬ জন কাউন্সিলর যেখানে এক হয়েছেন সেখানে আমিও আছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন