হুড়ায় আজ মুখ্যমন্ত্রীর সভা

পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া জেলা সফরে আজ সোমবার আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুপুরে হুড়া থানার লধুড়কা চণ্ডেশ্বর মন্দির লাগোয়া মাঠে প্রকাশ্য প্রশাসনিক সভা করবেন তিনি। এই সভা থেকে সড়ক পথে তিনি ছাতনায় ফিরবেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৫৫
Share:

হেলিপ্যাডে চলছে তল্লাশি। রবিবার প্রদীপ মাহাতোর তোলা ছবি।

পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া জেলা সফরে আজ সোমবার আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুপুরে হুড়া থানার লধুড়কা চণ্ডেশ্বর মন্দির লাগোয়া মাঠে প্রকাশ্য প্রশাসনিক সভা করবেন তিনি। এই সভা থেকে সড়ক পথে তিনি ছাতনায় ফিরবেন।

Advertisement

রবিবার বিকেলে সেই মাঠে সভার কাজ দেখে আসেন রাজ্যের স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও স্বনিযুক্তি প্রকল্প দফতরের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো। সব ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে দিনভর সেখানে যাতায়াত করেন পুলিশ কর্তারা। বিকেলে যান পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার। ছাতনাতেও এ দিন মুখ্যমন্ত্রী যে ইকোপার্কে প্রশাসনিক বৈঠক করবেন, সেখানেও প্রস্তুতি চলছিল। বৈঠকের জন্য নিয়ে আসা হয়েছে অনেক নতুন চেয়ার। বসানো হয়েছে বড় স্কিনের টিভি। আশপাশের আবর্জনাও পোড়ানো হয়। ইকোপার্কের সামনে মোরাম ফেলে এবং শুশুনিয়ার রাস্তায় পিচ ফেলে খানাখন্দ ভরাটের কাজ চলে। আধিকারিকরা দফায় দফায় পরিদর্শন করেন।

প্রসঙ্গত হুড়ায় যে সড়কের পাশে মুখ্যমন্ত্রী সভা করবেন, সেই পুরুলিয়া-বাঁকুড়া (৬০-এ) জাতীয় সড়ক চওড়া করার দাবি অনেক দিনের। জাতীয় সড়ক হলেও রাস্তাটি কিছু জায়গায় এতটাই অপরিসর যে মাঝে মাঝেই দুর্ঘটনা ঘটে। কয়েক মাস আগে এখানেই দুর্ঘটনায় পড়ে পুলিশেরই একটি গাড়ি। গত ৩১ জুলাই মুখ্যমন্ত্রী এই সড়কের পাশে হুড়া থানারই লালপুরে মুখ্যমন্ত্রীর সভা ফেরত একটি গাড়ি রাস্তার পাশে খাদে পড়ে যায়। বেশ কয়েকজন আহত হন। অথচ এই রাস্তাটি শুধু বাঁকুড়া থেকে পুরুলিয়া যাওয়ারই নয়, লাগোয়া ঝাড়খণ্ড রাজ্যের রাজধানী রাঁচি কিংবা জামশেদপুর বা বোকারোগামী অন্যতম প্রধান সড়ক। শান্তিরাম মাহাতো বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী এই সভা থেকেই জাতীয় সড়ক চওড়া করার কাজের সূচনা করবেন। ৩৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই কাজ হবে। এ ছাড়া জেলার বেশ কয়েকটি উন্নয়নমূলক কাজের উদ্বোধনও করবেন তিনি। তারমধ্যে অযোধ্যা পাহাড়ের গুরুত্বপূর্ণ সাহারজুড়ি থেকে মুরগুমা রাস্তাটিও রয়েছে।”

Advertisement

কিছুদিন আগে অযোধ্যা পাহাড়ের বিস্তীর্ণ এলাকা মাওবাদীদের কার্যত মুক্তাঞ্চল ছিল। সে সময় ভালো রাস্তা না থাকার কারণে পাহাড় জুড়ে নজর রাখার কাজটি যৌথবাহিনীর পক্ষে সমস্যার হয়ে দাঁড়িয়েছিল। পাশাপাশি পাহাড়ে রাস্তা-সহ পরিকাঠামো গড়ার দাবিও দীর্ঘদিনের। তবে প্রশাসন এই রাস্তাটিকে পর্যটকদের জন্য পাহাড়-জঙ্গলের ড্রাইভের রাস্তা হিসেবে উপহার দিতে চায়। মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ে আরও কয়েকটি রাস্তার কাজের সূচনা করবেন বলে জানা গিয়েছে। একই সঙ্গে এ দিন জেলায় বেশ কিছু চেক ড্যামেরও কাজের সূচনা করবেন বলে জানিয়েছেন শান্তিরামবাবু।

পর্যটনকে সামনে রেখে জেলায় দু’টি ভিলেজ ট্যুরিজম ও ইকো ট্যুরিজম প্রকল্প, ঝালদায় দমকল কেন্দ্র, পুরুলিয়া শহরে ক্রীড়াবিদ আবাস, পুরুলিয়া-বরাকর সড়কের পাশে ঝাঁপড়ায় পথসাথী উদ্বোধনের কথা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। তিনি কয়েকটি কিষান মান্ডিরও উদ্বোধন করবেন বলে জানা গিয়েছে।

আকাশপথে এলেও সভার মাঠে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। জানা গিয়েছে, তিনজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমযার্দার অফিসার, সাত জন ডিএসপি, ১৫ জন ইন্সপেক্টর, ১২০ জন এসআই-এএসআই, চারশোর অধিক কনস্টেবল, ১০০ মহিলা কনস্টেবল, শ’দুয়েক হোমগার্ড-এনভিএফ, ইএফআর, কমান্ডো ও সাদা পোশাকের পুলিশ কর্মীরা উপস্থিত থাকবেন। এর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর নিজস্ব স্পেশ্যাল সিকিউরিটি ইউনিটের অফিসারেরা তো থাকছেনই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন