• আমার কিছু জমিতে সূর্যমুখী চাষ করতে ইচ্ছুক। জমির চরিত্র, চাষের পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চাই।
সেখ সোফিয়ার রহমান, উদয়নারায়ণপুর, হাওড়া।
প্রথমেই জানাই, সূর্যমুখী বছরের সব মরসুমে চাষ করা গেলেও আমাদের রাজ্যের আবহাওয়া বিচার বিবেচনা করে প্রাক রবি বা রবি মরসুমে চাষ করাই ভাল। বীজের ভাল দানা বাঁধতে গেলে পরাগমিলনের সময় তাপমাত্রা ৩২-৩৪ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের নীচে থাকা বাঞ্ছনীয়। না হলে ফলন মার খাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্ষায় জলদি জাতের ধান চাষ করে অগ্রহায়ণ-পৌষ মাসে সূর্যমুখী বোনা হয়। এখন সূর্যমুখী সবই হাইব্রিড জাত। এদের মধ্যে KBSH-1, P.A.C-36, P.A.C-1091, KBSH-44, MSFH-17, সূর্য ৫১ ইত্যাদি জাত ভাল ফলন দিচ্ছে। এই সমস্তগুলিই ৭০-১১০ দিনের মধ্যে কাটা হয়ে যায়। জলনিকাশি থাকলে সব ধরনের মাটিতেই সূর্যমুখী চাষ করা যায়। মৃদু লবণাক্ত মাটি হলেও। বিঘা প্রতি ৬০০ গ্রাম বীজ যথেষ্ট। বীজ শোধন খুবই জরুরি। প্রতি কেজি বীজের সঙ্গে ট্রাইকোডার্মা ভিরিডি ৪ গ্রাম হিসাবে মিশিয়ে বীজ শোধন করতে হবে। বপন যন্ত্রের সাহায্যে বা লাঙলের ফলার পিছন দিয়ে বীজ বুনতে পারলে ভাল ফলন হয়। সারি থেকে সারির দূরত্ব ৬০ সেমি এবং গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ২০ সেমি হলেই চলবে। বীজ বোনার সময় মাটিতে রস থাকা দরকার। জমি তৈরির সময় কমপক্ষে বিঘা প্রতি ১০ কুইন্ট্যাল জৈব সার প্রয়োগ করতেই হবে। তারপর মাটি পরীক্ষা ভিত্তিক সার প্রয়োগ করা দরকার। মাটি পরীক্ষা করা না থাকলে বিঘা প্রতি ১২ কেজি ইউরিয়া, ৮৫ কেজি সিঙ্গল সুপার ফসফেট, ১১ কেজি মিউরিয়েট অফ পটাশ মূল সার দিতে হবে। সিঙ্গল সুপার ফসফেটে যেহেতু সালফার থাকে তাই এটা প্রয়োগ জরুরি। প্রথম সেচ দেওয়ার সময় অর্থাৎ ৩০ দিনের মাথায় বিঘা প্রতি ১২ কেজি ইউরিয়া, ১১ কেজি মিউরিয়েট অফ পটাশ প্রয়োগ করে গাছের গোড়া বেঁধে দিয়ে সেচ দেওয়া জরুরি। মাটির চরিত্র অনুযায়ী অণুখাদ্য মিশ্রণ গ্রেড ১ বা গ্রেড ২ প্রতি লিটার জলে আড়াই গ্রাম বা আড়াই মিলি গুলে ২৫ এবং ৪৫ দিনের মাথায় স্প্রে করলে ভাল। তিনটি সেচ দিতে হবে। সূর্যমুখী চাষে যথেচ্ছ কীটনাশক প্রয়োগ করলে পরাগ সংযোগ ও ফলন কমবে। জমি চাষ করলে মৌমাছি চাষ করা যায়। পরাগ মিলনের পাশাপাশি মধু উৎপাদন হবে। সমষ্টিগত ভাবে সূর্যমুখীর চাষ না করলে টিয়াপাখি আটকানো মুস্কিল।
• লঙ্কা গাছের পাতা কুঁকড়ে যাচ্ছে। কী করব?
অঙ্কিতা বেরা।
মাকড়ের আক্রমণে হচ্ছে। প্রোপারজাইট ৫৭% প্রতি লিটার জলে ২ মিলি বা ডাইকোফল ১৮.৫% প্রতি লিটারে ১.৫ মিলি মিশিয়ে বিকেলে এমন ভাবে স্প্রে করতে হবে যাতে পাতার নীচের দিকেও ওষুধ যায়। ডাইকোফল স্প্রে করলে প্রতি ৪.৫ লিটার জল হিসাবে ১ মিলি প্লানোফিক্স মেশাতে হবে। ৫ দিন পর বোরন ২০ প্রতি লিটার জলে ২ গ্রাম মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
চাষের দিশা, আনন্দবাজার পত্রিকা, ৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা ৭০০০০১। district@abp.in