রোহন মিত্র
লোকসভা ভোটের আগে রাহুল গাঁধীর বার্তা, রাজ্যে দলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করতে হবে। কিন্তু প্রদেশ যুব কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচন ঘিরে বাংলার কংগ্রেসে এখন টানটান উত্তেজনার আবহ!
যুব কংগ্রেস সভাপতি পদের জন্য এ বার অন্যতম প্রার্থী রোহন মিত্র। যিনি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের ছেলে। পিতা-পুত্র অস্বীকার করলেও প্রদেশ কংগ্রেস থেকে ফোন যাচ্ছে নানা নেতার কাছে, রোহনের জন্য সমর্থন চেয়ে। আর তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে শাদাব খান প্রচারে নেমেছেন নিজেকে ‘অধীর চৌধুরীর প্রার্থী’ পরিচয় দিয়ে। প্রচার চলছে, ‘নেতার ছেলে নেতা হবে, কর্মীরা কি মারই খাবে?’ সর্বভারতীয় যুব কংগ্রেসের সিলমোহর দেওয়া তালিকা অনুযায়ী, ওই দু’জন ছাড়াও দেবলীনা দাস, প্রীতম কর্মকার ও মহম্মদ বাবুল শেখ যুব সভাপতি পদে প্রার্থী। তবে পাঁচ প্রার্থী থাকলেও সোমেন বনাম অধীর লড়াই ধরেই উত্তেজনার পারদ চড়ছে!
গোটা রাজ্য জু়ড়ে প্রায় ৩৫ হাজার যুব কংগ্রেস কর্মী আগামী ২৬ ও ২৭ নভেম্বর ভোট দেবেন। ফয়সালা জানা যাবে ২৯ তারিখ। সংগঠনের নিয়ম অনুযায়ী, সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্ত প্রার্থী সভাপতি হওয়ার পাশাপাশি অন্য প্রার্থীরা সহ-সভাপতি এবং অন্যান্য পদে নিযুক্ত হবেন।
আরও পড়ুন: আজ মমতার সঙ্গে বৈঠক, নবান্নে আসছেন চন্দ্রবাবু
প্রদেশ সভাপতি সোমেনবাবু অবশ্য সাফ বলছেন, ‘‘যুব কংগ্রেসের নির্বাচনের সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই। রোহন নিজেই আমাকে বলেছে আমি যাতে এর মধ্যে না ঢুকি।’’ তবে বললেই লোকে যে শুনবে, তা নয়! দিল্লির নেতারাও এমন আবহে ঈষৎ বিব্রত। যুব নির্বাচনে বাবার প্রভাব ছেলের জন্য কাজে লাগছে, এই প্রচার এড়াতেই সোমেনবাবু এ বার বিধান ভবনে ওই নির্বাচনের কোনও বুথ করতে দেননি। আগে যুব কংগ্রেস নির্বাচন হলেই যা থাকত। আবার প্রদেশ কংগ্রেসের প্রচার কমিটির চেয়ারম্যান অধীরবাবু বলছেন, ‘‘এই সময়ে এমন নির্বাচন হলে আবার সেই কংগ্রেসে কে কার লোক, সেই ভাগাভাগি সামনে আসবে। তাই নির্বাচনটা বন্ধ রাখার প্রস্তাব দিয়েছিলাম।।’’ তাঁর দাবি, রোহনও শাদাব দু’জনেই তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন মাত্র।
বিড়ম্বনা আছে রোহনেরও। ভোটের প্রচারে বেরিয়ে বাঁকুড়া থেকে তিনি বলছেন, ‘‘যুব কংগ্রেসের সদস্যপদ নবীকরণ শুরু হয় ১১ অগস্ট। তখন বাবা সভাপতি ছিলেন না। বাবা প্রদেশ সভাপতি হওয়ার পরে ওই প্রক্রিয়া শুরু হলে আমি দাঁড়াতাম না! কিন্তু যাঁরা আমার কথায় সদস্যপদ করেছেন, তাঁদের এখন কী জবাব দেব?’’ রোহনের বক্তব্য, অরিন্দম ভট্টাচার্য যুব সভাপতি থাকার সময়ে তাঁকে সংগঠনে এনেছিলেন। তাঁর মন্তব্য, ‘‘তিন বছর ধরে কংগ্রেস করছি। চাকরি ছেড়ে রাজনীতিতে এসেছি। আমার যা বয়স, এ বার না হলে আর যুব সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারব না। লোকে বাবার নাম টেনে আনলে কী করা যাবে!’’