রাহুল গাঁধী। ফাইল চিত্র
দুর্গাপুজো উদ্বোধনে কলকাতায় এখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই সেরা আকর্ষণ। মহালয়া থেকে তিনি পুজো উদ্বোধন শুরু করেন। মহাপঞ্চমীতে পৌঁছতে পৌঁছতে সংখ্যাটা ৫০ পেরিয়ে যায়।
সেই দুর্গাপুজোতেই এ বার কলকাতায় রাহুল গাঁধীকে এনে পাল্টা চমক দিতে চাইছে কংগ্রেস। তা-ও একেবারে কলেজ স্কোয়ারের পুজোয়। রাহুলের নিজেরও ইচ্ছে, কলকাতায় গিয়ে পুজো দেওয়ার। শেষ কবে কোনও কংগ্রেস সভাপতি কলকাতায় দুর্গাপুজোয় গিয়েছেন, তা দলের নেতারাও মনে করতে পারছেন না।
আরও তাৎপর্যপূর্ণ হল, কলেজ স্কোয়ারের পুজো কংগ্রেস সভাপতি পদে ফিরে আসা সোমেন মিত্রের পুজো বলেই পরিচিত। ঘটনাচক্রে, মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কখনও কলেজ স্কোয়ারের পুজোর উদ্বোধনে যাননি। তার পিছনে সোমেনের সঙ্গে তাঁর শীতল সম্পর্ক হয়তো একটি কারণ বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের ধারণা।
সেই কলেজ স্কোয়ারের পুজোয় রাহুল গেলে তা যেমন কংগ্রেসের পাল্টা চমক হবে, তেমনই দুর্গাপুজোর উদ্বোধনে ‘মহাতারকা’ মমতার পাশাপাশি কংগ্রেসের ‘মহাতারকা’র উপস্থিতি লোকসভা ভোটের আগে রাজ্য রাজনীতিতেও আলোড়ন তুলবে। কারণ, পুজো উদ্বোধনে মমতাকে টেক্কা দেওয়ার মতো বা তাঁর তুলনীয় কেউ এখনও নেই বলেই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মত।
রাহুল ইদানীং যে রাজ্যেই গিয়েছেন, সেখানে মন্দিরে পুজো দিতে ভোলেননি। দু’দিন আগে মধ্যপ্রদেশে ভোট প্রচারে গিয়ে চিত্রকূটের কামতা নাথ মন্দিরে পুজো দিয়েছেন তিনি। যেখানে রাম বনবাসের সময় ছিলেন বলে স্থানীয় মানুষের বিশ্বাস। একে বিজেপি ‘নরম হিন্দুত্বের রাজনীতি’ বললেও কংগ্রেস নেতারা রাহুলকে ‘শিব ভক্ত’ হিসেবেই তুলে ধরতে চান। লক্ষ্য, বিজেপির হিন্দুত্বের মোকাবিলা। এ বার দুর্গাপুজোর সময়ে কলকাতা যাত্রাও সেই কৌশলেরই অঙ্গ কি না, তা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। কলকাতায় এলে রাহুল বেলুড় মঠের পুজো দেখতেও যেতে পারেন বলে কংগ্রেস সূত্রের খবর।
আজ দিল্লির তুঘলক লেনে রাহুলের সঙ্গে বৈঠকে প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা তাঁকে দুর্গাপুজোর সময়ে কলকাতায় আসার আমন্ত্রণ জানান। এমনিতেই কংগ্রেস সংগঠনে রদবদলের পর রাহুল প্রদেশ নেতা ও কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করতে চান। পুজোর পরে কবে সেই বৈঠক হতে পারে, তার দিনক্ষণ নিয়ে আলোচনার মধ্যেই সোমেন মিত্র, শঙ্কর মালাকার, অমিতাভ চক্রবর্তীরা তাঁকে দুর্গাপুজোয় কলকাতায় আসার আমন্ত্রণ জানান। রাহুলও সেই প্রস্তাব লুফে নেন। রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত নেতা গৌরব গগৈকে বলেন, তাঁর অফিসের সঙ্গে কথা বলে দিনক্ষণ ঠিক করতে।
কংগ্রেস নেতাদের দাবি, সব ঠিক থাকলে ১৭ অক্টোবর রাহুল কলকাতা যেতে পারেন। তবে ওই সময়ে মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেসের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি রয়েছে। বিজয়া দশমী বা দশেরার দিন সাধারণত দিল্লিতেই থাকেন রাহুল। সেই দিকগুলি দেখেই রাহুলের কলকাতা সফর চূড়ান্ত হবে।