লাইনে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। নিজস্ব চিত্র।
জেল হেফাজতে প্রতিবন্ধী যুবকের মৃত্যু। ঘটনার প্রতিবাদে পূর্ব রেলের শিয়ালদহ-হাসনাবাদ শাখার লেবুতলা স্টেশনে রেল অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয়রা। পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে লেবুতলা হল্ট স্টেশন। হাড়োয়ার কাছেই লেবুতলা স্টেশনে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করেছিলেন বিক্ষোভকারীরা। পাল্টা লাঠিচার্জ করতে বাধ্য হয় পুলিশ। দুটি পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর ও জখম হন দুই সিভিক পুলিশ।
সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে লেবুতলা স্টেশনে ঢুকতে রেল লাইনের উপর বেঞ্চ পেতে অবরোধ শুরু করেন মৃত গৌতম মণ্ডলের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ও পরিবার। যোগ দেন গ্ৰামের শতাধিক মানুষ। এক ঘন্টা পর দেগঙ্গা থানার পুলিশ বিশাল বাহিনী নিয়ে অবরোধ তুলতে এলে ক্ষোভে ফেটে পড়ে ক্ষিপ্ত জনতা। গতকাল পুলিশ কেন অভিযোগ নেয়নি তার দাবি তুলে পুলিশকে তাড়া করে। এরপর লাইনের উপর টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখায়।
অবরোধকারীদের সামলাতে ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাস। অভিযোগ, পুলিশকে লক্ষ্য করে ছোড়া হয় ইট, পাথর। লাইনে জ্বলল আগুন। ট্রেন জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন বিক্ষোভকারীদের একাংশ। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, পুলিশের মারধরের কারণেই মৃত্যু হয়েছে গৌতম মণ্ডল নামে ওই ব্যক্তির।
ফণীর আতঙ্কে ৩মে শিয়ালদহ শাখায় ট্রেন চলাচল ব্যাহত ছিল। ট্রেন পরিষেবা স্বাভাবিক করার দাবিতে গত শুক্রবার বারাসত স্টেশনে ভাঙচুর করেন কয়েকজন নিত্যযাত্রী৷ দীর্ঘক্ষণ অবরোধও করা হয় ৷
পুলিশ-জনতা খণ্ডযুদ্ধে পরিস্থিতি হয়ে ওঠে অগ্নিগর্ভ। নিজস্ব চিত্র।
শিয়ালদহ-বারাসত লাইনে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েকজনকে গ্রেফতার করে রেল পুলিশ। বিক্ষোভে ‘শামিল’ থাকার অভিযোগে রেল পুলিশ গত শুক্রবার ধরে নিয়ে যায় ওই প্রতিবন্ধী যুবককে। সেখান থেকে ঠাঁই হয় দমদম সেন্ট্রাল জেলে। ধৃতদের মধ্যে একজন ছিলেন গৌতম মণ্ডল।
আরও পড়ুন: লজের ঘরে তরুণীর রক্তাক্ত দেহ, পাশে কাঁদছে শিশু
বুধবার জেল হেফাজতেই গৌতম মণ্ডলের মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় পুলিশকেই দায়ী করেছেন গৌতমের পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়রা। ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে লেবুতলা হল্ট স্টেশন অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা।
গৌতম মণ্ডল।
পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করেন বিক্ষোভকারীরা। জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশও লাঠিচার্জ করে। সাময়িকভাবে বন্ধ থাকে বারাসাত-হাসনাবাদ শাখার ট্রেন চলাচল। সকাল ১১.৩০ মিনিট নাগাদ উঠে যায় অবরোধ।
আরও পড়ুন: ২১ বছরের লিভ-ইন পার্টনার মডেলকে ধর্ষণ, মুম্বইয়ে গ্রেফতার ৫৫ বছরের চিকিৎসক
গৌতমের স্ত্রী সপ্তমী ৪ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তিনি বলেন, ‘‘বারাসতের রেল পুলিশ আটকে রেখেছে জানতে পেরে পর দিনই সকলে গিয়ে পুলিশকে জানায়, ও প্রতিবন্ধী। ভাঙচুর করার ক্ষমতাই ওর নেই। ছেড়ে দিন। কিন্তু পুলিশ শোনেনি।’’ গৌতমের মা আরতিও ঘটনার প্রতিবাদ করেন।