অনিচ্ছুক প্লেয়ারকে ধরেবেঁধে মাঠে নামিয়ে দেওয়ার মতো করেই দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা

শরীরে জোর নেই। তবু ছড়িয়ে পড়ছে সে। বাংলার গণ্ডি পেরিয়ে পৌঁছে যাচ্ছে পড়শি ঝাড়খণ্ড-বিহারে। কিন্তু কিছুতেই তার সুনজরে আসছে না দক্ষিণবঙ্গ। বরং নজর তার এখনও উত্তরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৬ ০৮:৪১
Share:

ঝিরি ঝিরি বৃষ্টিতে..। তবে ভারী নয়, এমন বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিই চলবে এখন দক্ষিণবঙ্গে। শনিবার শান্তিনিকেতনে বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরীর তোলা ছবি।

শরীরে জোর নেই। তবু ছড়িয়ে পড়ছে সে। বাংলার গণ্ডি পেরিয়ে পৌঁছে যাচ্ছে পড়শি ঝাড়খণ্ড-বিহারে। কিন্তু কিছুতেই তার সুনজরে আসছে না দক্ষিণবঙ্গ। বরং নজর তার এখনও উত্তরে।

Advertisement

এই হল শনিবারের বর্ষার বুলেটিন। শুক্রবারই যে দক্ষিণবঙ্গে ঢুকেছে বলে বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন। কিন্তু এই ঢুকে পড়াটাও যেন অনিচ্ছুক প্লেয়ারকে ধরেবেঁধে মাঠে নামিয়ে দেওয়ার মতো। যে কারণে আলিপুর আবহাওয়া দফতর বলে দিচ্ছে, দক্ষিণবঙ্গে এখনই ভারী বৃষ্টির আশা নেই।

অথচ শনিবার ঝাড়খণ্ড এবং বিহারের অনেকটা এলাকাই বর্ষার বৃত্তে এসে গিয়েছে বলে জানিয়েছে মৌসম ভবন। আবহবিদেরা মনে করছেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ওই দুই রাজ্যের বাকি এলাকাতেও বর্ষা ছড়িয়ে পড়তে পারে। কিন্তু তাতে দক্ষিণবঙ্গের লাভ কী! একে তো এখানে মৌসুমি বায়ু তেমন জোরদার নয়। তার উপরে এ রাজ্যে থাকা ঘূর্ণাবর্তটি ক্রমশ উত্তর দিকে সরার ইঙ্গিত দিচ্ছে। ফলে ৪৮ ঘণ্টা পর থেকে উত্তরবঙ্গের তরাই-ডুয়ার্সে ভারী বৃষ্টির লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।

Advertisement

আবহাওয়া দফতরের এক বিজ্ঞানীর ব্যাখ্যা, বর্ষা ঢোকার পরে জোরালো বৃষ্টির জন্য নিম্নচাপ অক্ষরেখা বা ঘূর্ণাবর্তের উপস্থিতি প্রয়োজন। যে পরিস্থিতি আপাতত দক্ষিণবঙ্গে নেই। তবে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হচ্ছে। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত হাওড়া, বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুরে বৃষ্টি হয়েছে। এ দিন মু্র্শিদাবাদের বেশ কিছু জায়গাতেও বৃষ্টি হয়েছে। আপাতত দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় এ রকমই বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি চলবে বলে জানাচ্ছে পূর্বাভাস।

এ বছর মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের দানা বাঁধার একটা ইঙ্গিত ছিল। কিন্তু জট পাকিয়েছে সেখানেও। আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, মৌসুমি বায়ুর কেরল হয়ে মূল ভারতীয় ভূখণ্ডে ঠিকমতো ঢোকার জন্য বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরের মধ্যে উষ্ণতা, বায়ুচাপের মতো কয়েকটি উপাদানের ভারসাম্য প্রয়োজন হয়। কিন্তু বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানু’ সেই ভারসাম্যই নষ্ট করেছে। তার ফলে এ বছর কেরলে বর্ষা ঢুকতে দেরি হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গেও তাই বর্ষা বিলম্বে পৌঁছেছে। স্বাভাবিক নির্ঘণ্ট অনুযায়ী, কেরলে বর্ষা ঢোকার কথা ১ জুন। তার সাত দিন পরে ৮ জুন দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা পৌঁছয়। এ বছর কেরলেই বর্ষা ঢুকেছে ৮ জুন। তার ৯ দিন পরে অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা হয়ে শুক্রবার দক্ষিণবঙ্গে পৌঁছেছে সে। মৌসম ভবনের খবর, শনিবার ছত্তীসগঢ় হয়ে মৌসুমি বায়ুর আরও একটি শাখা রাঁচি, ফরবেসগঞ্জ হয়ে উত্তরবঙ্গে চলে গিয়েছে। আগামী কয়েক দিনে বিহার, ঝাড়খণ্ডের পাশাপাশি মধ্য ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলেও বর্ষা ছড়িয়ে পড়বে। এখন দক্ষিণবঙ্গের ওপর কবে সে প্রসন্ন হয়, সেটাই দেখার!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement