কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ সত্ত্বেও গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে বৃষ্টির ঘাটতি থেকেই গিয়েছে। চাষির মুখে হাসি তাই এখনও ফেরেনি।
তবে প্রকৃতি আর বিশেষ কৃপণতা করবে না বলেই আবহাওয়া দফতরের আশা। বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণাবর্ত থেকে সোমবার সকালে একটি নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। তার প্রভাবে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দক্ষিণবঙ্গে আবার বৃষ্টি হবে। কোনও কোনও জেলায় ভারী বৃষ্টিও হতে পারে। তাতে ঘাটতির অনেকটাই মিটে যাওয়ার কথা।
এই মুহূর্তে ঘাটতি ঠিক কতটা?
হাওয়া অফিসের হিসেব অনুযায়ী ১১ অগস্ট পর্যন্ত গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে দুই শতাংশ বৃষ্টি-ঘাটতি রয়েছে। তবে গত দু’সপ্তাহের ধারাবাহিক বর্ষণ কৃষি দফতরের চিন্তা অনেকটা কাটিয়ে দিয়েছে। আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, নতুন নিম্নচাপটি আরও কিছুটা শক্তি বাড়াতে পারে। সেটি শেষ পর্যন্ত যদি গভীর নিম্নচাপে পরিণত না-ও হয়, তা হলেও তার প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গের বেশির ভাগ জেলায় বৃষ্টি হবে। তাতে ঘাটতি অনেকটা মিটে যাবে।
স্বাধীনতা দিবসের কলকাতায় অবশ্য সম্ভাব্য বর্ষণের ইঙ্গিত তেমন ছিল না। সকালে সামান্য বৃষ্টি হলেও তার পরে গোটা দিনটাই ছিল রোদ-ঝলমলে। রবিবার মহানগরে ভারী বৃষ্টিপাত হলেও এ দিন তার দেখা মেলেনি। তবে জেলার দিকে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, পুরোটাই ঘূর্ণাবর্তের খেল্। সেই ঘূর্ণাবর্ত থেকেই তৈরি হয়েছে নিম্নচাপ। তার দাপটে দুই মেদিনীপুর-সহ দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় বৃষ্টি হয়েছে। সাগরও উত্তাল। সব মিলিয়ে কৃষকদের হতাশার পালা শেষ হতে চলেছে। মরসুমের শুরুতে বৃষ্টির অভাবে চাষের যে-ক্ষতি হয়েছে, বিলম্বিত বর্ষণে তার অনেকটা পূরণ হয়ে যাবে বলে আশ্বাস দিচ্ছেন আবহবিদদের অনেকে।
আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, বর্ষা সক্রিয় হওয়ায় গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের পরিমণ্ডলে ভরপুর জলীয় বাষ্প রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বায়ুমণ্ডলের নিচু ও মধ্যস্তরে তাপমাত্রার ফারাক বেশি হওয়ায় বজ্রগর্ভ মেঘপুঞ্জ তৈরি হচ্ছে। তাতে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হচ্ছে। এবং আরও হবে।
বর্ষণের এই আশ্বাসের মধ্যেই এ দিন উত্তাল সাগর থেকে আরও একটি দেহ উদ্ধার করেছে উপকূলরক্ষী বাহিনী। মৃতের পরিচয় জানা যায়নি। তিনি মৎস্যজীবী ছিলেন বলেই মনে করছেন উদ্ধারকারী রক্ষীরা।