পথে নেমে লরিতে তল্লাশি মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের। শুক্রবার রাতে নিবেদিতা সেতুতে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।
অভিযোগ ছিল জাতীয় সড়ক দিয়ে বেআইনি ভাবে তোলা বালি বোঝাই লরি প্রতিদিন পার হচ্ছে। সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে রাতের অন্ধকারে পথে নামলেন খোদ রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার রাতে বালিতে জাতীয় সড়কে আচমকা উপস্থিত হয়ে তল্লাশি চালালেন বেশ কয়েকটি বালি বোঝাই লরিতে।
মন্ত্রী বলছেন, ‘‘বালি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য বন্ধে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই রাজ্য জুড়ে এই অভিযান।’’ কিন্তু প্রশ্ন হল লরি তল্লাশি করতে খোদ মন্ত্রীকে পথে নামতে হচ্ছে কেন? রাজীববাবু বলেন, ‘‘বাম জমানায় বেআইনি বালি ব্যবসা চললেও কেউ কখনও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। আমরা অভিযানে নেমেছি। এ কাজে প্রশাসন ও সেচ দফতরের আধিকারিকদের উৎসাহ দিতে মাঝেমধ্যে নিজেও পথে নামছি।’’
সেচ দফতর সূত্রের খবর, বিভিন্ন জেলা থেকে বালি বোঝাই লরি রাত ৮টার পর নিবেদিতা সেতু পার হয়ে উত্তর ২৪ পরগনা এবং কলকাতায় যায়। এমনকী টোলপ্লাজা পার হয়ে বালিতে সেতুর ধারে সেই লরি দীর্ঘ ক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকারও অভিযোগ আসে।
ওই দিন রাতে মন্ত্রী রাজীববাবু দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে আচমকা বালির দুই ও ছয় নম্বর জাতীয় সড়কের সংযোগস্থল জিরো পয়েন্টে হাজির হন। গোপনীয়তা বজায় রাখতে সেখানে পৌঁছনোর কিছু ক্ষণ আগে জানানো হয় পুলিশকে।
ওই দিন জাতীয় সড়কে গিয়ে দেখা যায়, সেতুতে ওঠার মুখেই রাস্তার উপর সারিবদ্ধ ভাবে রয়েছে গার্ডরেল। লরিগুলি সেখানে এসে গতি কমাতেই বৃষ্টি মাথায় নিয়ে তার দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন সেচমন্ত্রী রাজীববাবু। সঙ্গে টর্চ, ফিতে, ফাইল হাতে দফতরের আধিকারিকরা।
লরি থামতেই চালককে মন্ত্রী বলছেন, ‘‘বালির চালান আর কী কী কাগজ আছে দেখান!’’ এর পরে কাগজপত্র খতিয়ে দেখে নির্দেশ দিচ্ছেন আধিকারিকদের। কখনও নিজেই ফিতে নিয়ে লরির বালি মাপছেন। এই ভাবেই ওই দিন টানা দু’ঘণ্টা জাতীয় সড়কে তল্লাশি চালান সেচমন্ত্রী। ওই দিন প্রায় ৫০টির মতো লরি আটক করে সেচ দফতর। প্রায় ৩ লক্ষ টাকা জরিমানা আদায় হয়। কয়েকটি লরি জরিমানা দিতে না পারায় পুলিশ তা বাজেয়াপ্ত করেছে বলে সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।