সারদা-নারদে নীরব রাজনাথ, অস্বস্তিতে দল

দলের রাজ্য নেতারা প্রতিনিয়তই দুর্নীতি-অস্ত্রে তৃণমূলকে বিঁধছেন। কিন্তু রাজ্যে নির্বাচনী প্রচারে এসে সেই দুর্নীতির প্রসঙ্গ কার্যত এড়িয়েই গেলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা রাজনাথ সিংহ।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:২৫
Share:

দলের রাজ্য নেতারা প্রতিনিয়তই দুর্নীতি-অস্ত্রে তৃণমূলকে বিঁধছেন। কিন্তু রাজ্যে নির্বাচনী প্রচারে এসে সেই দুর্নীতির প্রসঙ্গ কার্যত এড়িয়েই গেলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা রাজনাথ সিংহ। যার ফলে ভোটের ময়দানে যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়ল রাজ্য বিজেপি। আর বিরোধীরাও ফের সরব হল ‘মোদীভাই-দিদিভাই আঁতাঁত’ নিয়ে।

Advertisement

রাজনাথ বুধবার রাজ্যে তিনটি সভা করেন রাজনাথ। প্রথমে পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতায়, পরে বাঁকুড়া শহর ও শালতোড়ায়। সারদা বা নারদ-কাণ্ড নিয়ে গড়বেতার সভায় টুঁ শব্দও করেননি রাজনাথ। বাঁকুড়া ও শালতোড়ার সভায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কেবল বলেন, ‘‘সারদা-নারদা কী? দুর্নীতি ছাড়া কি সরকার চালানো যায় না?’’ তাঁর কটাক্ষ, ‘‘মা-মাটি-মানুষের স্লোগান দিয়ে সরকার এসেছিল। যদিও এই রাজ্য থেকে বেকারত্ব, দুর্নীতি কিছুই যায়নি!’’ একই সঙ্গে রাজনাথ দাবি করেন, ‘‘যে সব রাজ্যে আমাদের সরকার রয়েছে, সেখানে কেউ বলুক তো কোনও দুর্নীতি আছে!’’ রাজ্যে একমাত্র ‘বোমা শিল্প’ চলছে বলেও কটাক্ষ করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। বিজেপি ক্ষমতায় এলে রাজ্য থেকে বোমা শিল্প উপড়ে ফেলার আশ্বাস দেন তিনি।

এ রাজ্যে এ বার বিধানসভা ভোটে মূল বিষয়ই শাসক তৃণমূলের দুর্নীতি। অথচ প্রচারে রাজনাথ সে বিষয়ে কার্যত নীরব থাকায় বিজেপির রাজ্য নেতারা দলের অন্দরে ক্ষোভ গোপন করছেন না। তাঁদের বক্তব্য, রাজনাথ বরাবরই মমতার প্রতি ‘নরম’ মনোভাব নিয়ে চলেন। কিন্তু প্রচারে এমন অবস্থান অস্বস্তিকর। প্রকাশ্যে অবশ্য বিজেপি-র কেন্দ্রীয় সম্পাদক এবং জোড়াসাঁকোর প্রার্থী রাহুল সিংহের প্রতিক্রিয়া, ‘‘দলের অস্বস্তির কিছু নেই তো! রাজনাথজি তো প্রশ্ন তুলেইছেন, দুর্নীতি ছাড়া কি সরকার চালানো যায় না?’’

Advertisement

বিরোধীরা অবশ্য এই সুযোগে বিজেপি-তৃণমূল সমঝোতার অভিযোগ ফের তুলছে তারা। সবংয়ের কংগ্রেস প্রার্থী মানস ভুঁইয়া বলেন, ‘‘আমরা আগেই বলেছি, মোদীর সঙ্গে দিদির গভীর আঁতাঁত রয়েছে।’’ সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘ব্যপম-কাণ্ড, ললিত মোদী-কাণ্ডে বিজেপি অস্বস্তিতে ছিল বলে তৃণমূল নীরব ছিল। এখন বিজেপি প্রতিদান দিচ্ছে। নারদ-কাণ্ডে রাজনাথকে আমি চিঠি দেওয়ার পরেও কেন্দ্র তদন্তের নির্দেশ দেয়নি। আর এখন প্রচারে এসে ভুলেই গেলেন! মানুষের আর কিছু বুঝতে বাকি নেই!’’ তবে রাজনাথেরা চুপ থাকলেও বেআইনি লগ্নিসংস্থার টাকা যাতে ভোটে ব্যবহার না হয়, তা দেখার জন্য আমানতকারী
ও এজেন্ট সুরক্ষা মঞ্চের তরফে সুবীর দে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন