বন্ধ তুলুন, মোর্চাকে দিল্লি

বৈঠক শেষে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, স্বাধীনতা দিবসের আগে পাহাড়ে শান্তি ফেরাতেই উদ্যোগী হয়েছেন রাজনাথ। অন্য দিকে, বৈঠকের পরে মোর্চার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বাকি দলগুলির সঙ্গে কথা বলে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৭ ০৪:১১
Share:

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। ছবি: সংগৃহীত

দু’মাস ধরে বন্‌ধ চলছে পাহাড়ে। জনজীবন বিপর্যস্ত। এই অবস্থায় মুখরক্ষার সূত্র খুঁজতে মরিয়া পাহাড়ের দলগুলির সঙ্গে এ দিন বৈঠক করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। সেই বৈঠকে রাজনাথ তাঁদের বন্‌ধ ও অনশন তুলে নিতে অনুরোধ করেন। একই সঙ্গে রাজ্যের প্রতিও তাঁর আবেদন, মোর্চা ও সহযোগী দলগুলির সঙ্গে যেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আলোচনা শুরু করেন। পাহাড়ে সরবরাহ ও ইন্টারনেট চালুও করতে বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

Advertisement

বৈঠক শেষে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, স্বাধীনতা দিবসের আগে পাহাড়ে শান্তি ফেরাতেই উদ্যোগী হয়েছেন রাজনাথ। অন্য দিকে, বৈঠকের পরে মোর্চার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বাকি দলগুলির সঙ্গে কথা বলে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা বিনয় তামাঙ্গ বলেছেন, ‘‘আপাতত আন্দোলন চলবে। আলোচনার পরে দেখা যাক কী হয়!’’

মোর্চা গত কাল যে ভাবে বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিল, রাজনাথ তাদের ডেকেছেন, তাতে অসন্তুষ্ট হয় রাজ্য। সেই অসন্তোষ রাজ্যের পক্ষ থেকে কেন্দ্রকে জানানো হয়। তবে এ দিনের আলোচনার পরে ইতিবাচক বার্তাও এসেছে নবান্ন থেকে। জানানো হয়েছে, গুরুঙ্গরা যদি বন্‌ধ তুলে নেন, তা হলে মুখ্যসচিবের চিঠি পাঠাতে তারা রাজি।

Advertisement

পাহাড়ে ঘরে-বাইরে নানা চাপের মধ্যে থাকা মোর্চা গত কয়েক দিন ধরেই চাইছিল, কেন্দ্র তাদের কোনও মুখরক্ষার সূত্র দিক। বস্তুত, শুক্র ও শনিবার কলকাতাতেও বিজেপির স্থানীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করে মোর্চার একটি প্রতিনিধিদল। বিজেপি সূত্রের দাবি, ধর্মঘট থেকে সরে আসার সম্মানজনক পথ খুঁজতেই দেখা করেছিলেন ওঁরা।

এ দিন রাজনাথের সঙ্গে বৈঠক মোর্চাকে কিছুটা স্বস্তি দিল। রাজনাথের বাড়িতে ওই বৈঠকে অবশ্য মোর্চার সঙ্গে জিএনএলএফ, সিপিআরএম, জিএমসিসি-র নেতারাও ছিলেন। ছিলেন দার্জিলিঙের সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়াও। এঁদের সঙ্গে বৈঠকের আগেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে আলাদা কথা বলেন রাজনাথ। পরে পাহাড়ের নেতারা রাজনাথকে বলেন, পৃথক রাজ্য ছাড়া অন্য কোনও সমাধান হতে পারে না। সেই প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে কেন্দ্রকে।

রাজনাথ অবশ্য স্পষ্ট প্রতিশ্রুতি দেননি। কিন্তু পাহাড়ে শান্তি ফেরাতে আলোচনার দরজা খুললেন তিনি। বন্‌ধ তুলতে মোর্চাকে মুখরক্ষার পথও করে দিলেন একই সঙ্গে। রাজনাথ জানিয়েছেন, ‘‘হিংসা নয়, পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমেই সেটি সম্ভব। ভৌগোলিক দিক থেকে দার্জিলিঙের গুরুত্ব রয়েছে। ওই অঞ্চলে আমরা কী সমস্যার মুখোমুখি, সেই ব্যাপারে আমি ওয়াকিবহাল। জাতীয় স্বার্থ ও দেশ তৈরিতে গোর্খাদের অবদানের বিষয়টি মাথায় রেখে বন‌্ধ তুলে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফেরানোর জন্য আবেদন করছি।’’

আজকের বৈঠকে পৃথক রাজ্য নিয়ে কোনও সুনির্দিষ্ট আশ্বাস না পেয়ে পাহাড়ের প্রতিনিধিদলের অনেকে ‘হতাশ’। মোর্চার পক্ষ থেকে স্বরাজ থাপা বৈঠক শেষে বলেন, ‘‘যে দাবি তোলা হচ্ছে, সেটি সংবিধানের আওতায় রয়েছে। তবু রাজ্য পাহাড়ে দমন-পীড়ন চালাচ্ছে বলে আমরা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করেছি। একই সঙ্গে জানিয়েছি, ইন্টারনেট ও অন্য পরিষেবা বন্ধ।’’ তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানায়, ইন্টারনেট, কেবল টিভি এবং বিভিন্ন সরবরাহ স্বাভাবিক করতে রাজ্যের পদক্ষেপ করা উচিত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন