বিদায়ে নৈতিক জয় পেলেন ইয়েচুরিই

রাজ্যসভায় বিদায়ী সংবর্ধনার আগে সিপিএমের সংসদীয় দলের বিদায়সভায় সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় সবাই বলছে, ’৯৬-র মতো সিপিএম ফের ঐতিহাসিক ভুল করল! ওই কথায় কেরলের সাংসদেরা রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়ে যান। ইয়েচুরি অবশ্য তাঁকে বলেন, দল যখন এক বার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে, এগুলো না বলাই ভাল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৭ ১০:১০
Share:

সীতারাম ইয়েচুরি।— ফাইল চিত্র।

দলের মধ্যে লড়াই চালিয়ে যে পথের ছা়ড়পত্র আদায় করতে পারেননি, বিদায়লগ্নে রাজ্যসভাই সেই উপহার দিয়ে গেল সীতারাম ইয়েচুরিকে!

Advertisement

সংসদীয় গণতন্ত্রে থাকলে সংসদের ভিতরের লড়াইও যে গুরুত্বপূর্ণ, নানা দলের সাংসদেরা এক সুরে সেই বার্তা আজ দিয়ে গেলেন প্রকাশ কারাটদের উদ্দেশে। উঠল ‘ঐতিহাসিক ভুলে’র কথা। সিপিএমের সংসদীয় দলের অন্দরেও তোলা হল সেই প্রসঙ্গ। আর বিদায়ী ভাষণে স্বয়ং ইয়েচুরিও পরোক্ষে বার্তা রেখে গেলেন কারাটদের জন্য।

রাজ্যসভায় বিদায়ী সংবর্ধনার আগে সিপিএমের সংসদীয় দলের বিদায়সভায় সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় সবাই বলছে, ’৯৬-র মতো সিপিএম ফের ঐতিহাসিক ভুল করল! ওই কথায় কেরলের সাংসদেরা রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়ে যান। ইয়েচুরি অবশ্য তাঁকে বলেন, দল যখন এক বার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে, এগুলো না বলাই ভাল। ঋতব্রত আবার বলেন, তিনি শুধু জনতার মতামত তুলে ধরছেন।

Advertisement

আরও পড়ুন: বাধা সূর্য ও বিমানকে, পুরভোট নিয়ে প্রশ্ন

পরে রাজ্যসভায় ইয়েচুরি নিজেও কটাক্ষ করেছেন তাঁর দলের সরকারে যোগ না দেওয়ার নীতিকে। ইয়েচুরির কথায়, ‘‘আমরা আসলে সরকারে যোগ না দেওয়ার মেধাসত্ত্ব নিয়ে রেখেছি!’’ তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ‘কমরে়ড সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ে’র কথা এনে মনে করিয়ে দেন, বাংলার ওই নেতা লোকসভার স্পিকার হয়ে যাওয়ার পরে সংসদে সিপিএমের জোরালো কণ্ঠ দরকার বলেই ইয়েচুরিকে সংসদীয় রাজনীতিতে নিয়ে আসা হয়েছিল।

এটা যদি নিজের দলের প্রতি বার্তা হয়, শাসক শিবিরের জন্যও তাঁর প্রশ্ন হাততালি কুড়িয়েছে বাকি সব দলের। যখন ইয়েচুরি বলেছেন, তিনি তেলুগু ব্রাহ্মণ পরিবারের সন্তান। তাঁর স্ত্রীর বাবা সুফি, মা রাজপুত। তা হলে তাঁর ছেলের পরিচয় কী হবে? ইয়েচুরিই উত্তর দেন— একটাই পরিচয়। সে ভারতীয়। সমর্থন না জানিয়ে পারেননি কেউ।

রাজনীতিতে প্রতিপক্ষ শিবিরের নেতা হয়েও তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েন আজ খোলাখুলি মেনে নিয়েছেন, ‘‘এখনও ইয়েচুরিকে রাজনৈতিক শত্রু হিসেবেই দেখি। উনি ‘লেফট ইড অলওয়েজ রাইট’ বলে বই লিখছেন। সেটাও বিশ্বাস করি না। কিন্তু বিপক্ষের স্ট্রাইকার ভালো হলে তার কদর করতেই হয়!’’ ডেরেকের আরও মন্তব্য, ‘‘আমার মেয়ে বলেছে, চুল কলপ করা ছেড়েছি বলে আমাকে নাকি ইয়েচুরির মতো দেখতে হয়ে যাচ্ছে। এ বার সতর্ক থাকতে হবে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন