৩৪ বছরের কাজের ‘স্বীকৃতি’, উচ্ছ্বাস তৃণমূলে

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশেষ আস্থাভাজন শুভাশিস চক্রবর্তীর রাজ্যসভায় নির্বাচিত হওয়ার মুহূর্ত উদযাপন করতে বিধানসভার সামনে ভিড় করলেন আলিপুর আদালতের আইনজীবী থেকে বেহালার অটো-চালক। সঙ্গে তৃণমূল নেত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতাসূচক ব্যানার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৮ ০৩:৪২
Share:

উল্লাস: রাজ্যসভা ভোটে জেতার পরে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা। শুক্রবার বিধানসভার বাইরে। ছবি: সুমন বল্লভ।

আকাশ একটু একটু করে কালো হচ্ছে। কিন্তু তাঁর জয়ের সম্ভাবনায় কোনও মেঘ তো নেই! তাই সরকারি ভাবে ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার আগে থেকেই বিধানসভার উত্তর দিকের ফটকের বাইরে বিকেল থেকে ভিড় বাড়ছিল তৃণমূল জনতার। সঙ্গে তাসাপার্টি। সন্ধে ৬টার পরে গণনা শেষ হওয়ার খবরটা বাইরে চাউর হতেই বাঁধ ভাঙল উচ্ছ্বাসের!

Advertisement

রাজ্যসভা ভোটের সঙ্গে এমন উচ্ছ্বাসের ছবি দেখতে বড় একটা অভ্যস্ত নন কেউ। বিধায়কেরা ভোট দেন, বিধানসভায় নিতান্তই কেজো অঙ্ক থাকে নির্বাচনের। কিন্তু ব্যতিক্রমই হল শুক্রবার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশেষ আস্থাভাজন শুভাশিস চক্রবর্তীর রাজ্যসভায় নির্বাচিত হওয়ার মুহূর্ত উদযাপন করতে বিধানসভার সামনে ভিড় করলেন আলিপুর আদালতের আইনজীবী থেকে বেহালার অটো-চালক। সঙ্গে তৃণমূল নেত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতাসূচক ব্যানার।

তৃণমূলের চার প্রার্থীর মধ্যে সর্বোচ্চ ৫৪টি ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন শুভাশিসবাবুই। সেই ১৯৮৪ সালে মমতার প্রথম লোকসভা নির্বাচন থেকে তাঁর ভোট সামলানোর দায়িত্বে এই আইনজীবী-নেতা। বাইরে কোনও হইচই নেই, ৩৪ বছর ধরে নীরবে নিজের কাজ করে যেতে অভ্যস্ত। দলের এমন নিবেদিত কর্মী রাজ্যসভার সাংসদ হয়ে মর্যাদা পেলেন— মমতার এই সিদ্ধান্তকে এ দিন দল-মত নির্বিশেষে সাধুবাদ জানিয়েছেন অনেকেই। আর স্বয়ং শুভাশিসবাবুর মন্তব্য, ‘‘আমি অভিভূত, আপ্লুত! আমাদের দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘আমাদের দল ধর্মনিরপেক্ষ। রাজ্যসভায় গিয়ে ধর্মনিরপেক্ষতা রক্ষার জন্য লড়াই করাই আমার প্রথম কর্তব্য হবে।’’

Advertisement

শুভাশিসবাবুর সর্তীর্থ প্রার্থী নাদিমুল হক ও আবির বিশ্বাস ৫২টি করে ভোট পেয়েছেন। আবির প্রত্যাশিত ভাবেই তাঁর জয় দলনেত্রীকে ‘উৎসর্গ’ করেছেন। আর শান্তনু সেন পেয়েছেন ৫১টি ভোট। তবে তাঁদের কাউকে নিয়েই তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে অত উচ্ছ্বাস চোখে পড়়েনি, যা শুভাশিসবাবুর জন্য বরাদ্দ ছিল। জয়ের শংসাপত্র নেওয়ার আগেই অনুগামীদের অনুরোধে বিধানসভার ফটকের দিকে পা বাড়াতে হয়েছিল তাঁকে। ফটক অল্প ফাঁক হতেই আবির আর ফুল-সমেত ভিড়ের স্রোত আছ়়ড়ে পড়ল ভিতরে! ভিড়ের চাপে একটু পরেই অসুস্থ বোধ করলেন সদ্য সাংসদ। কিছু অনুগামীই আবার উদ্ধার করে আনলেন তাঁকে।

শরীরের উপরে চাপ গেল ঠিকই। তবে ভালবাসার অত্যাচার তো!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন