মানুষ গড়তে আস্থা রামকৃষ্ণ মিশনে

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “একলব্য মডেল স্কুল খুব গুরুত্বপূর্ণ স্কুল। এটা সরকারি স্কুল। আদিবাসী ছেলেমেয়েদের জন্যই অনেক ভেবে এই স্কুল মিশনকে দেওয়া হয়েছে। কারণ, মিশনের অনেক পরিকাঠামো রয়েছে।”

Advertisement

বরুণ দে

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৭ ০২:৫০
Share:

সূচনা: ঝাড়গ্রামে রামকৃষ্ণ মিশনের আশ্রম ভবনের শিলান্যাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

জঙ্গলমহলের আদিবাসী ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার মানোন্নয়নে রামকৃষ্ণ মিশনের উপরই ভরসা রাখছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার ঝাড়গ্রামে একলব্য স্কুলের পাশেই রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, “রামকৃষ্ণ মিশন শিক্ষার ক্ষেত্রে আজও পৃথিবীতে এক নম্বর। মিশনের অধীনে যে স্কুলগুলো রয়েছে, সেখানে ছেলেমেয়েরা মাধ্যমিকে ভাল ফল করে। আইএএস, আইপিএস, ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার তৈরি হয়। তাই অনেক ভেবে এই স্কুলের দায়িত্ব আমরা রামকৃষ্ণ মিশনকে দিয়েছি। আমি চাই, আমাদের আদিবাসী ছেলেমেয়েরা আসল মানুষ তৈরি হোক।’’

Advertisement

ঝাড়গ্রামে আদিবাসী ছেলেমেয়েদের আবাসিক স্কুল একলব্যের দায়িত্ব মুখ্যমন্ত্রী আগেই রামকৃষ্ণ মিশনকে দিয়েছেন। এ বার রাজ্য সরকার একলব্য স্কুলের পাশেই পাঁচ একর জায়গা দিল মিশনকে। এখানে আশ্রম ভবন গড়ে উঠবে। তার শিলান্যাস অনুষ্ঠানেই এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “একলব্য মডেল স্কুল খুব গুরুত্বপূর্ণ স্কুল। এটা সরকারি স্কুল। আদিবাসী ছেলেমেয়েদের জন্যই অনেক ভেবে এই স্কুল মিশনকে দেওয়া হয়েছে। কারণ, মিশনের অনেক পরিকাঠামো রয়েছে।” তাঁর আরও সংযোজন, “পিএসসি-তে অলচিকি লিপিতে সাঁওতালি ভাষায় পরীক্ষা শুরু হয়ে গিয়েছে। অনেকে বড় বড় কথা বলত। কিন্তু কিছু করতে পারেনি। আজ দশম শ্রেণি পর্যন্ত সিলেবাস তৈরি হয় পড়াশোনা চালু হয়ে গিয়েছে। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে আমরা সাঁওতালি ভাষায় কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়েও পড়াশোনা চালু করব।”

গোড়াতে ঠিক ছিল, আশ্রমের প্রস্তাবিত জায়গাতেই এ দিনের শিলান্যাস অনুষ্ঠান হবে। সেই মতো মঞ্চও তৈরি হয়েছিল। শেষ মুহূর্তে জায়গা বদল হয়। একলব্য স্কুল চত্বরেই হয় অনুষ্ঠান। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সেখানে মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, “আমি দু’-একজনের নাম জানি, যাঁরা এখানে বসে বসে চক্রান্ত করেন। দয়া করে এটা করার চেষ্টা করবেন না। যদি কারও বিরুদ্ধে সত্যি অভিযোগ থাকে তাহলে নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি যদি অন্যায় করি, আমার বিরুদ্ধেও পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।’’ মুখ্যমন্ত্রীর মতে, ‘‘কেউ কেউ চায় এই স্কুলটা মিশনের হাতে না থাকুক। তাহলে ওরা টাকা দিয়ে ছাত্র ভর্তি করবে। কিন্তু মিথ্যে বলে, চক্রান্ত করে রামকৃষ্ণ মিশনের বদনামের চেষ্টা করবেন না। মিশনের নামে বদনাম করলে আমার গায়েও লাগে।” ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশেও মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, “কারও কথা শুনে তোমরা এই স্কুল ছাড়বে না। শিক্ষকদের সঙ্গে সব সময় ভাল ব্যবহার করবে। এখানে অনেক শিক্ষক রয়েছেন, যাঁরা স্কুলটাকে প্রাণের চেয়েও বেশি ভালবাসেন।” এ দিনের অনুষ্ঠানে ঝাড়গ্রাম রামকৃষ্ণ মিশনের সাধারণ সম্পাদক শুভকরানন্দ বলেন, “ওঁর (মুখ্যমন্ত্রী) ইচ্ছায় ও আগ্রহে রামকৃষ্ণ মিশন জঙ্গলমহলে সেবা করার সুযোগ পেয়েছে। আজ উনি এসেছেন। এটা আমাদের কাছে গর্বের এবং আনন্দের।”

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন