Bogtui

Rampurhat Clash: সে দিন কী ঘটেছিল? রামপুরহাট থানার দুই সাব ইন্সপেক্টরকে জিজ্ঞাসাবাদ সিবিআইয়ের

২২ মার্চ সকালে সোনা শেখের জ্বলে খাক হয়ে যাওয়া বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছিল সাতটি দেহ। ওই বাড়ির কাছেই থাকেন সাহে আলম শেখ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য এ দিন নিয়ে যায় সিবিআই।

Advertisement

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় 

বগটুই (রামপুরহাট) শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২২ ০৫:২৮
Share:

সকাল ৮টা নাগাদ বগটুই গ্রামে প্রথম ঢোকে সিবিআই। রামপুরহাট থানার দুই কর্মীকে নিয়েই তাঁরা বিভিন্ন জায়গায় যান। ফাইল চিত্র।

প্রথম দিন বগটুই গ্রামে পৌঁছেই বাসিন্দাদের থেকে ২১ মার্চ রাতের হত্যালীলা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেছিলেন সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা। খোঁজখবর নেওয়ার সময়ই তাঁরা জেনেছিলেন, সে রাতের হামলায় অন্তত ৭০-৮০ জনের যোগ রয়েছে। কয়েক জন ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছে। বাকিরা বেপাত্তা। ৯ জনকে কুপিয়ে, পুড়িয়ে খুনে যারা অভিযুক্ত, তাদের খোঁজ শুরু করল সিবিআই। বুধবার তদন্তকারীরা ঘুরলেন বগটুইয়ের অলি-গলিতে। গেলেন অন্তত ৯টি বাড়িতে।

Advertisement

এ দিন সকালেই সিবিআইয়ের অস্থায়ী শিবিরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয় রামপুরহাট থানার দুই সাব ইন্সপেক্টর সত্যেন্দ্রনাথ সাহা ও গোলক ঘোষকে। সূত্রের খবর, ২১ মার্চ রাতে বগটুই মোড়ে তৃণমূলের উপপ্রধান ভাদু শেখ খুনের পরে কী ঘটেছিল, পুলিশের গতিপ্রকৃতি কী ছিল, তা নিচুতলার পুলিশ কর্মীদের থেকে জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। তিন ঘণ্টারও বেশি জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় ওই দুই পুলিশকর্মীকে। দুপুরে ডেকে পাঠানো হয় নলহাটি থানার ওসি মনোজ সিংহকেও।

এ দিন সকাল ৮টা নাগাদ বগটুই গ্রামে প্রথম ঢোকে সিবিআই। রামপুরহাট থানার দুই কর্মীকে নিয়েই তাঁরা বিভিন্ন জায়গায় যান। জানার চেষ্টা করেন, কোথায় রয়েছে হামলায় জড়িত থাকার তালিকায় উঠে আসা লোকজন। প্রথমেই তাঁরা পৌঁছন বগটুইয়ের পশ্চিমপাড়ার শেষ প্রান্তের বাসিন্দা আলি হোসেনের বাড়িতে। তাঁর স্ত্রী ও মেয়ের থেকে তদন্তকারীরা জানতে চান ওই ব্যক্তি কোথায় রয়েছেন। পরে বগটুই মোড়ের তেলেভাজার দোকানি আলি হোসেনের স্ত্রী জেহেনারা বিবি বলেন, “দোষীরা শাস্তি পাক, আমরাও চাইছি। কিন্তু আমার স্বামী নির্দোষ। উনি শারীরিক ভাবে অক্ষম। ঘটনার সময় বাড়িতেই ছিলেন। পরে ভয়ে অন্যত্র চলে গিয়েছেন।”

Advertisement

এর পরে ওই বাড়ি সংলগ্ন জাহাঙ্গিরের বাড়িতেও যায় সিবিআই। ভাদু শেখের সৎ ভাই জাহাঙ্গিরের বাড়িতে কেউ ছিলেন না। দুপুরের দিকে তদন্তকারীরা ঢোকেন ভাদু শেখের গ্রামের বাড়ির পিছনের দিকে, টোটো চালক বাবর শেখের বাড়িতে। পরের গন্তব্য কালাম শেখের বাড়ি। ওই বৃদ্ধের নাতি সুজন শেখ কোথায় রয়েছে, তা জানতে চান তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, গ্রিলের কারখানার কর্মী সুজন উপপ্রধান ভাদুর দলের হয়ে কাজ করত বলেই জেনেছে সিবিআই। পরে কালাম দাবি করেন, “অনেক দিন হয়ে গেল নাতি বাড়ি আসেনি। আমায় বারান্দায় রেখে ঘরে তালা দিয়ে চলে গিয়েছে। অফিসারেরা বলে গেলেন ও এলেই যেন তাঁদের সঙ্গে দেখা করে।” পাশেই তুহিনা বিবিদের বাড়িতে গিয়েও সুজনের খোঁজ করেন তদন্তকারীরা। পরে তুহিনা বলেন, “ভাদুর শেষকৃত্যের সময়ে ওকে দেখেছিলাম। তার পরে আর দেখিনি।’’

বগটুই গ্রামের ভোটার তালিকা নেওয়ার জন্য এ দিন বড়শাল পঞ্চায়েতের সুপারভাইজার তথা বিমা সংস্থার এজেন্ট বাবুল শেখের বাড়িতেও যায় সিবিআই। জানা যাচ্ছে, পঞ্চায়েত সদস্যদের লেখালেখির কাজ সামলাতেন ভাদু-ঘনিষ্ঠ ওই যুবক। গণহত্যার ঘটনায় অন্য়তম অভিযুক্ত লালন শেখের শ্বশুরবাড়িতেও যান তদন্তকারীরা। লালন এখনও ফেরার। লালনের শ্বশুর সমীর শেখের কাছে তদন্তকারীরা জানতে চান, লালন কোথায় যেতে পারে। ওই বৃদ্ধকে নিজেদের ফোন নম্বর লিখে দিয়ে বেরিয়ে আসেন তাঁরা। পরে সমীর দাবি করেন, “উনিশ বছর আগে মেয়ে নিজে পছন্দ করে লালনকে বিয়ে করেছে। ওদের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই, সেটাই জানিয়েছি।”

২২ মার্চ সকালে সোনা শেখের জ্বলে খাক হয়ে যাওয়া বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছিল সাতটি দেহ। ওই বাড়ির কাছেই থাকেন সাহে আলম শেখ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য এ দিন নিয়ে যায় সিবিআই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন