আলিপুরদুয়ারের সাংবাদিক চয়ন সরকারের অন্তর্ধান রহস্যের ব্যাপারে অনেক তথ্যই রাজ্য সরকারের কাছে রয়েছে বলে জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিশদে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বৃহস্পতিবার কোচবিহারের হলদিবাড়িতে এক সরকারি অনুষ্ঠানের পরে সাংবাদিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। চয়নের পরিবার যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বাড়িতে হামলা ও পরে অপহরণের অভিযোগ তুলেছে, সে বিষয়টি তুললে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কেন আমাকে দিয়ে এ সব কথা বলাতে চাইছেন? আপনারাও সব জানেন। আমিও জানি।’’ চয়ন অন্তর্ধান সম্পর্কে ঠিক কী জানেন, তা অবশ্য খোলসা করে তিনি বলেননি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা চাই ও সুস্থ ভাবে ফিরে আসুক। সিআইডি তদন্ত করছে। এটুকু বলতে পারি, অন্য কোনও ঘটনা থাকলে আমরা তাঁকে গ্রেফতার করব না।’’ মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, ‘‘সংবাদপত্রের স্বাধীনতা আছে। তারা লিখতেই পারে। তা বলে তাদের উপর হামলাও আমরা মেনে নিই না।”
এর পরেও চয়ন-কাণ্ড নিয়ে স্পষ্ট ভাবে কিছু বলার জন্য পীড়াপীড়ি করলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কেন নিজের থুতু নিজের গায়ে মাখতে চাইছেন?’’
রবিবার রাত থেকে নিখোঁজ চয়ন। শিলিগুড়ি থেকে প্রকাশিত দৈনিকের আলিপুরদুয়ারের প্রতিনিধি চয়ন ক’দিন আগে সেখানকার কলেজে ভর্তিতে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে খবর লিখেছিলেন। তার জেরে তাঁর বাড়িতে হামলা হয় বলে অভিযোগ। যে ঘটনায় তৃণমূলের জেলা যুব সভাপতির নাম জড়ায়। গত রবিবার পুলিশ তৃণমূলের ৮ জন কর্মীকে গ্রেফতার করে। ওই রাতেই চয়ন নিখোঁজ হয়ে য়ান। তাঁর পরিবারের তরফে অপহরণের অভিযোগ করা হয়।
সোমবার মুখ্যমন্ত্রী সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেন। বুধবার ওই সংবাদপত্রের আরেক সাংবাদিক সুমন্ত সিংহ, যাঁর বাড়ি সলসলাবাড়ি এলাকায়। তিনি আলিপুরদুয়ার আদালতে গিয়ে বিচার বিভাগীয় বিচারকের কাছে গোপন জবানবন্দি দেন। বৃহস্পতিবার দুপুরেও পুলিশ কর্তারা ওই সাংবাদিককে পুলিশ সুপারের দফতরে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। চয়নবাবুর কাকা প্রবীণকুমার সরকার বলেন, “ভাইপো এখনো ফিরে আসেনি। বুধবার রাত থেকে বাড়িতে পুলিশ পিকেট বসেছে। কী হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছি না।’’ আলিপুরদুয়ার জেলার এসপি আভারু রবীন্দ্রনাথ বলেন, “নিখোঁজ সাংবাদিকের বাড়িতে কোনও পুলিশ মোতায়েন করা হয়নি। তবে এলাকায় পুলিশের টহল রয়েছে। আমরা ওই সাংবাদিকের খোঁজে তদন্ত চালাচ্ছি।’’