পরীক্ষা ছাড়া আসবেন না কলেজে, বলছেন অনেকে

বেলা তখন প্রায় ১২টা। হঠাৎ শুনি হইচই। বেরিয়ে দেখি, সাধারণ গেরস্ত পরিবারের মা-মাসিদের মতো চেহারার কয়েক জন মহিলা হন্তদন্ত হয়ে ঢুকছে। ওদের হাবভাব সুবিধার ঠেকেনি। সকলে দেখলাম ইউনিয়ন রুমের দিকে গেল। কয়েক জনের হাতে লাঠিসোঁটাও ছিল। স্কুলের ইউনিফর্ম মতো পোশাকেও কয়েক জন কিশোরকে চোখে পড়ল। ওরা ইউনিয়ন রুমে ঢুকে ভাঙচুর শুরু করল।

Advertisement

অমরেশ মণ্ডল (দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র)

শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০১:০৩
Share:

বেলা তখন প্রায় ১২টা। হঠাৎ শুনি হইচই। বেরিয়ে দেখি, সাধারণ গেরস্ত পরিবারের মা-মাসিদের মতো চেহারার কয়েক জন মহিলা হন্তদন্ত হয়ে ঢুকছে। ওদের হাবভাব সুবিধার ঠেকেনি। সকলে দেখলাম ইউনিয়ন রুমের দিকে গেল। কয়েক জনের হাতে লাঠিসোঁটাও ছিল। স্কুলের ইউনিফর্ম মতো পোশাকেও কয়েক জন কিশোরকে চোখে পড়ল। ওরা ইউনিয়ন রুমে ঢুকে ভাঙচুর শুরু করল। কলেজের কয়েক জন ছাত্রের নাম ধরে ধরে খুঁজছিল। কয়েক জন বড় দাদার (প্রাক্তন ছাত্র) নাম ধরেও ডাকছিল। ওদের সঙ্গে দেখলাম, আমাদের কয়েক জন সহপাঠিনীও। আছে। পরে শুনলাম, তারাও নাকি মারধর খেয়েছে। ওরা ইউনিয়ন রুমে কয়েক জন ছাত্রকে ধরে পেটাল। পুরো কলেজ জুড়ে তখন আতঙ্কের পরিবেশ। ক্লাস মাথায় উঠেছে। শিক্ষকদের দেখেও মনে হল, ভয় পেয়েছেন। আমাদের কলেজে বহু বার গোলমাল হয়েছে। কিন্তু এত বড় ঘটনা আগে দেখিনি। প্রায় ঘণ্টাখানেক তাণ্ডব চলার পরে সাদা পোশাকের পুলিশ ঢুকল। ভাবলাম, এ বার বুঝি পরিস্থিতি শান্ত হবে। জল খাইনি অনেকক্ষণ। উত্তেজনায় আরও গলা শুকিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু জলের কলের কাছেই ঝামেলা হচ্ছিল। তাই ও দিকে ঘেঁষতে পারিনি।

Advertisement

কিছুক্ষণের মধ্যেই আরও পুলিশ এল কলেজে। তখন দেখি মহিলারা দলবল নিয়ে চলে গেল। তখনও পুলিশের সামনেই কয়েক জন সহপাঠিনী ‘টিএমসিপি জিন্দাবাদ’ বলে স্লোগান দিচ্ছিল। এ বার কলেজ থেকে বেরোনোর তোড়জোড় করছিলাম। গেটের সামনে চলেও এসেছি। এ বার দেখলাম বিধায়ক দীপক হালদার দলবল নিয়ে উত্তেজিত ভাবে দারোয়ানদের ঠেলে ঢুকে পড়লেন কলেজে। তারপর প্রায় দু’ঘণ্টা কলেজ চলল দফায় দফায় খণ্ডযুদ্ধ। যে যাকে পারছে, মারছিল। আমরা কয়েক জন একটা ঘরে লুকিয়ে পড়েছিলাম। পুলিশ কিছু ছাত্রকে বের করে দিয়েছিল। কিন্তু আমি যেতে পারিনি। কয়েক জন বন্ধু ছিল আমার সঙ্গে। সকলেই বলাবলি করছিল, পরীক্ষার সময় ছাড়া আর কলেজে পা দেবে না।

এরমধ্যে বাড়িতে ঘটনা জেনেছে। বার বার ফোনে খবর নিচ্ছিল। ‘ভাল আছি’ বলছিলাম বটে। কিন্তু মনে মনে বেশ ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। আমি ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত নই। তাই এ সব ঝামেলা একেবারেই ভাল লাগে না। সব কিছু মেটার পরে যখন বেরোলাম কলেজ থেকে, প্রায় সন্ধে হয় হয়। সারা দিন উত্তেজনা আর টেনশনে অবসন্ন লাগছিল।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement