কয়েক বছর বেহাল পড়ে থাকার পরে অবশেষে পুজোর মুখে শুরু হল দুর্গাপুরের ট্রাঙ্ক রোড ও সংলগ্ন আর্টারিয়াল রোড সংস্কার। এই রাস্তার কাজ শুরু হওয়ায় হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন শহরবাসী। রাস্তা সংস্কার কে করবে, ডিএসপি না পুরসভা— সে নিয়ে টানাপড়েনে আটকে ছিল কাজ। শেষ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকায় রাস্তা সংস্কারে উদ্যোগী হয়েছে পুরসভা। আপাতত তাপ্পি দিয়ে উৎসবের মরসুমে কোনও রকমে যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পুজোর পরে আমূল সংস্কার হবে বলে জানান পুরসভার চেয়ারম্যান তথা ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মৃগেন্দ্রনাথ পাল।
বেনাচিতির স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে শুরু করে এসবিএসটিসি গ্যারাজের পাশ দিয়ে গিয়ে ট্রাঙ্ক রোড মিশেছে আর্টারিয়াল রোডে। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে দু’টি রাস্তাই একেবারে বেহাল বলে অভিযোগ বাসিন্দা ও যাত্রীদের। বেনাচিতি এবং ডিএসপি টাউনশিপের একাংশের বাসিন্দারা স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, বিভিন্ন সরকারি অফিস, শপিংমল, মাল্টিপ্লেক্স যাতায়াতের জন্য এই রাস্তাটি ব্যবহার করে থাকেন। আবার বেনাচিতিতে বাজার করতে যেতে বিধাননগর বা সিটিসেন্টারের অনেকে এই রাস্তা ব্যবহার করে থাকেন। সিটি সেন্টার বাসস্ট্যান্ড থেকে দূরপাল্লার বাসগুলি এই দু’টি রাস্তা ধরেই বেনাচিতির প্রান্তিকা বাসস্ট্যান্ডে যাতায়াত করে। এসবিএসটিসি গ্যারাজ থেকে বাসগুলি এই রাস্তা দিয়ে বেরোয় এবং ফিরে আসে।
অতীতে এই দুই রাস্তার সংস্কার করতেন ডিএসপি কর্তৃপক্ষ। ২০১৬ সালে ডিএসপি টাউনশিপের বেশ কিছু রাস্তা সংস্কারের কাজ করে। কিন্তু এই রাস্তা দু’টি সেই তালিকা থেকে বাদ পড়ে যায়। ফলে, অনেকেই এই দুই রাস্তা এড়িয়ে ঘুরপথে যাতায়াত করতে বাধ্য হন। পুরসভার তৎকালীন ১ নম্বর বরো চেয়ারম্যান মৃগেন্দ্রনাথবাবু এমন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা দ্রুত সংস্কারের আর্জি জানিয়ে ডিএসপি কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেন। ইতিবাচক সাড়া না মেলায় পুরসভাকে সংস্কারের অনুমতি দেওয়ার আর্জি জানিয়ে ফের চিঠি দেন। অভিযোগ, তার পরেও কোনও সুরাহা হয়নি। ফলে, মানুষের দুর্ভোগ কমেনি।
পুরসভা সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়া এমন বেশ কয়েকটি রাস্তার সংস্কারের অনুমতি যাতে ডিএসপি কর্তৃপক্ষ পুরসভাকে দেন, তা নিশ্চিত করতে ডিএসপি, পুরসভা এবং এডিডিএ— তিন সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে কমিটি গড়া হয়েছে। এর ফলে সমন্বয়ের অভাব দূর হয়েছে। চেয়ারম্যান মৃগেন্দ্রনাথবাবু বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার পুরসভার মাধ্যমে ট্রাঙ্ক রোড এবং আর্টারিয়াল রোডের আমূল সংস্কারের জন্য প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। ডিএসপি-র অনুমোদন মিলেছে। সম্প্রতি সংস্কার শুরু হয়েছে। পুজোয় যাতায়াতে সুবিধা হবে মানুষের।’’
এলাকায় গিয়ে দেখা গিয়েছে, বড়-বড় খানাখন্দগুলি ভরাট করার কাজ চলছে। ঠিকাদার সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, আপাতত কোনও রকমে যাতায়াতের উপযোগী করে দেওয়া হচ্ছে রাস্তা। পুজো মিটতেই সম্পূর্ণ সংস্কার শুরু হবে।