এই মুহূর্তে, আমার সমসাময়িকতায় এমন অনেক কিছুই ঘটছে, যাতে মুখ থেকে একটাই প্রশ্ন বেরিয়ে আসতে বাধ্য, হচ্ছেটা কী?
নির্বাচন কমিশনের আওতায় যে পুলিশ অফিসারেরা শিরদাঁড়া সোজা করেছিলেন, দলদাসত্বের বদলে রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্যকেই যাঁরা বেছে নিয়েছিলেন, ভোট মিটে যেতেই তাঁদের ‘শাস্তিমূলক পোস্টিং’ শুরু হয়ে গেল! কারণ শাসক দল পছন্দ করেনি পক্ষপাতহীন এই আচরণ! এর পরে, কোনও রাজ্যে কোনও রাজকর্মচারী নির্বাচন কমিশনের কঠোর নির্দেশের পরেও পারবেন মেরুদণ্ড দেখাতে? আর তা-ই যদি হয়। প্রশ্নটা উঠবে না, হচ্ছেটা কী?
রাজনৈতিক কারণে, নিতান্তই নির্বাচনী অঙ্কে একটা ফিল্ম ঘিরে বিস্তর টালবাহানা চলবে, চলবে টানাপড়েন, আর তারই মধ্যে সেন্সর বোর্ডের প্রধান বলবেন, তিনি গর্বিত, তিনি মোদীর ‘চামচা’! প্রশ্ন উঠবে না, হচ্ছেটা কী?
উত্তরপ্রদেশের ভোট আসছে, ঘনিয়ে উঠছে সাম্প্রদায়িকতার বিষ, নতুন করে তুলে আনা হচ্ছে গোমাংস-বিতর্ককে, শয়তানের বিষবাষ্পের কলুষ ছড়িয়ে পড়ছে ধীরে ধীরে। প্রশ্ন উঠবে না, হচ্ছেটা কী?
এ সব তো অন্যের দিকে আঙুল তুলে দেখানোর পরিসরে। যখন নিজের দিকে আঙুল তোলার অবকাশ আসবে, তখন একই ভাবে প্রশ্নটা তুলতে পারব তো আমরা? ডায়মন্ড হারবারে কৌশিক বা ঠাকুরপুকুরের অনুরুদ্ধকে যখন পিটিয়ে মেরেও থামি না আমরা, কোলাঘাটের মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক সিরাজুলকেও একই ভাবে নিতান্তই চোর সন্দেহে পিটিয়ে পিটিয়ে খুন করে দিই আমরা, তখন প্রশ্ন তুলতে পারব, হচ্ছেটা কী?
রাজা তোর কাপড় কোথায়, অন্তত এক শিশুও তো সে কথা বলেছিল। আমার কাপড় কোথায়, সেই প্রশ্ন করার মতো কেউ থাকবে তো? নাকি থাকলে, তাকেও পিটিয়ে মেরে দেব আমরা?
হচ্ছেটা কী?