সারাই: চলছে ব্যারাজের লকগেট মেরামতের কাজ। শনিবার দুর্গাপুরে। ছবি: বিকাশ মশান
লকগেট বিপত্তির পরে কাটল দেড় দিনেরও বেশি। কিন্তু শনিবার রাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি দুর্গাপুর ব্যারাজে। তবে ব্যারাজের সব জল বার করে, ডিএসপি (দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট) থেকে ইস্পাতের প্লেট এনে লকগেটটি মেরামত করা হচ্ছে।
শুক্রবার ভোরে ব্যারাজের এক নম্বর লকগেটটি বেঁকে যায়। ওই রাতে ক্রেন এনে, বালির বস্তা ফেলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে সেচ দফতর। প্রাথমিক ভাবে তাদের পরিকল্পনা ছিল, বিকল লকগেটটির সামনে ‘ফ্লোটিং গেট’ বসানো হবে। কিন্তু স্রোতের জন্য জলের উপরে তা ভাসিয়ে আনতে গিয়ে ব্যারাজের মূল কাঠামোয় ধাক্কা লেগে ক্ষতির ভয় ছিল। তাই ঠিক হয়, দ্রুত কাজ শেষ করতে হলে জল বার করতে হবে।
এর পরে শুক্রবার রাতে অন্য গেটগুলি তুলে জল বার করা হয়। শনিবার সকালে দেখা যায়, ব্যারাজের উপরিভাগের জল বেরিয়ে গিয়েছে। ডিএসপি থেকে আনা হয় আধ ইঞ্চি পুরু বিশেষ ইস্পাতের প্লেট। ক্রেন দিয়ে তা নামানো হয় নদীগর্ভে। লকগেটের তলায় প্লেটগুলি (২৮টি) ঝালাই করে লাগিয়ে মেরামতি শুরু হয়। তবে এই ঘনত্বের প্লেট আদৌ জলের চাপ নিতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের। যদিও ঘটনাস্থলে থাকা রাজ্য সেচ ও জলপথ দফতরের সচিব গৌতম চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিশেষজ্ঞেরা এই প্লেট নির্বাচন করেছেন। দুঃশ্চিন্তার কারণ নেই।’’ প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সচিব গৌতমবাবু-সহ ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে তৈরি একটি কমিটি পুরো কাজ তদারক করছে। তবে এই মেরামত অস্থায়ী। সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘কয়েকদিন বাদে বোরো মরসুমে সেচের কাজে জল দিতে গেট তোলা হবে। তখনই বেঁকে যাওয়া গেটটি খুলে পুরো মেরামত করা হবে।’’ মন্ত্রী জানান, গেট সারানো হলেই মাইথন জলাধার থেকে জল ছাড়বে ডিভিসি। তবে পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে আজ, রবিবার বিকেল পর্যন্ত সময় লাগবে বলে অনুমান সেচ দফতরের। এই পরিস্থিতিতে দুর্গাপুর শহর জু়ড়ে পানীয় জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। সমস্যা মোকাবিলায় দুর্গাপুর, আসানসোল ও বাঁকুড়া পুরসভা জলের ট্যাঙ্কার পাঠিয়েছে।
জল ছাড়া হতে বিস্তীর্ণ এলাকা প্রায় মাঠের চেহারা নেয়।
ব্যারাজের উপরিভাগের একাংশে এ দিন মাছ ধরতে দেখা যায় উৎসাহীদের। সেখানে তিন-চার কেজি ওজনের বোয়াল, রুই-কাতলাও পেয়েছেন অনেকে।