সম্বল আবেগ, আজ অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই

গেড সমাবেশের পরিকল্পনা শেষ পর্যন্ত বাতিল করলেও স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের মতো নেতাদের আগে-পরে রাজ্যে নিয়ে এসে চাপ তৈরি করেছে বিজেপি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:৪২
Share:

শনিবার শিয়ালদহে বামেদের মিছিল।—নিজস্ব চিত্র।

সারা দেশের ২৩ জন বিরোধী নেতাকে এক মঞ্চে হাজির করে দেখিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ব্রিগেড সমাবেশের পরিকল্পনা শেষ পর্যন্ত বাতিল করলেও স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের মতো নেতাদের আগে-পরে রাজ্যে নিয়ে এসে চাপ তৈরি করেছে বিজেপি। এই জোড়া চাপের মাঝেই আজ, রবিবার ব্রিগেড ময়দানে অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে নামছে বামেরা।

Advertisement

বাংলায় ধারাবাহিক নানা নির্বাচনে অবিরাম রক্তক্ষরণ চলেছে বামেদের ভোটব্যাঙ্কে। শিয়রে লোকসভা নির্বাচন। কংগ্রেসের সঙ্গে বামেদের আসন সমঝোতা হবে কি না, এখনও স্পষ্ট নয়। আবার সমঝোতা না হলে রাজ্যের যে দু’টি আসন সিপিএমের হাতে আছে তা-ও রক্ষা করা যাবে কি না ঠিক নেই! দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া পরিস্থিতিতেই ব্রিগেড সমাবেশ থেকে মরিয়া লড়াইয়ের বার্তা দিতে চান বাম নেতৃত্ব।

ব্রিগেডে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি পরিদর্শনে যাওয়ার আগে বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু শনিবার বলেন, ‘‘শুধু তৃণমূল আর বিজেপিকেই দেখানো হচ্ছে। বামপন্থীরা অপ্রাসঙ্গিক, অপাংক্তেয় কি না, দেখা যাবে ব্রিগেডে! সেটাই চ্যালেঞ্জ!’’

Advertisement

সাম্প্রতিক কালে সিঙ্গুর থেকে রাজভবন পর্যন্ত পদযাত্রা হোক বা জেলায় জেলায় ব্রিগেডের প্রচারের মিছিল— বামেদের কর্মসূচিতে লোক হয়েছে ভালই। যা দেখে প্রদেশ কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতা বলছেন, ‘‘বামেদের নিবেদিত কর্মী ভিতটা এখনও আছে। তবে ভোটটা নেই।’’ সংগঠন সচল থাকলে তবেই ভোটে বুথে বুথে লড়াই দেওয়া সম্ভব, এই আপ্তবাক্য মনে রেখেই দুর্দিনের বাজারে বাম ব্রিগেডের আয়োজন। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের কথায়, ‘‘ব্রিগেড থেকে শক্তি নিয়ে ফিরে যেতে হবে পাড়ায় পাড়ায় লড়াই করতে।’’

সরকারি দাক্ষিণ্যের এখন আর সুযোগ নেই। নিজেদের আয়োজনে এবং আবেগে ভর করেই ব্রিগেডে আসবেন বাম কর্মী-সমর্থকেরা। বাস মালিকদের চাপ দেওয়া হচ্ছে অভিযোগ করেও সিপিএমের হুগলি জেলা সম্পাদক দেবব্রত ঘোষের বক্তব্য, ‘‘ম্যাটাডোর বা অন্য গাড়ির বিকল্প ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। ট্রেনে করেও মানুষ যাবেন।’’

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিনই আগাম মন্তব্য করেছেন, ‘‘যারা আজ মোদীর সভায় গিয়েছিল, তারাই কাল বামেদের ব্রিগেডে যাবে! বাম-রাম সব এক হয়ে গিয়েছে!’’ যার জবাবে সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম বলেছেন, ‘‘নিজেদের লোককে কী ভাবে বিজেপিতে পাঠানো যায়, মুকুল রায়কে দিয়েই তো দেখা যাচ্ছে!’’

তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে সংযোগ গড়তে আজ ব্রিগেডে আসছেন সিপিআইয়ের কানহাইয়া কুমার। জনজাতিদের দাবিদাওয়া তুলে ধরার জন্য এ বার প্রথম ব্রিগেডে বক্তা রাখা হয়েছে সিপিএমের দেবলীনা হেমব্রমকে। আবার সংখ্যালঘুদের কাছে পৌঁছতে বক্তা সেলিম।

সিপিএম, সিপিআই, ফরওয়ার্ড ব্লক এবং আরএসপি-র চার সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, সুধাকর রেড্ডি, দেবব্রত বিশ্বাস ও ক্ষিতি গোস্বামীর বক্তৃতা করার কথা ব্রিগেডে। বিজেপির মোকাবিলায় বাম ঐক্যের বার্তা দিতে বক্তা হিসেবে আমন্ত্রিত সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্যও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন