Debashis Halder Posting Controversy

‘শূন্যপদ নেই তবু গাজোলের হাসপাতালে পোস্টিং’ আরজি কর আন্দোলনের মুখ দেবাশিসের, জেডিএফ বলছে ‘প্রতিহিংসা’!

বিভিন্ন চিকিৎসক সংগঠনের দাবি, ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ থেকেই দেবাশিসের সঙ্গে এমনটা করা হয়েছে। কারণ, কাউন্সেলিংয়ে মোট ৭৭৮ জন চিকিৎসক অংশগ্রহণ করেছিলেন। তাঁদের কারও পোস্টিং এ ভাবে বদলানো হয়নি। কেবলমাত্র দেবাশিসই ব্যতিক্রম।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২৫ ১১:৪৮
Share:

চিকিৎসক দেবাশিস হালদার। — ফাইল চিত্র।

আরজি কর আন্দোলনের সামনের সারিতে যে সব জুনিয়র ডাক্তার ছিলেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক দেবাশিস হালদার। আরজি কর আন্দোলনের অন্যতম মুখও হয়ে উঠেছিলেন তিনি। এ বার সেই দেবাশিসের পোস্টিং নিয়েই বিতর্ক। অভিযোগ, কাউন্সেলিংয়ে হাওড়ায় নিয়োগের কথা বললেও মেধাতালিকা বেরোনোর পর দেখা গিয়েছে, দেবাশিসের পোস্টিং হয়েছে মালদহের গাজোলে। অথচ জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি, শূন্যপদের তালিকা ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে, গাজোলের সেই হাসপাতালে কোনও শূন্যপদই ছিল না! এর পরেই প্রতিবাদে সরব হয়েছেন দেবাশিস-সহ ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর্‌স ফোরাম (ডব্লিউবিডিএফ)-এর সদস্যেরা। মঙ্গলবার সকালে স্বাস্থ্য ভবন অভিযানেরও ডাক দিয়েছে জুনিয়র ডাক্তারদের সংগঠন ডব্লিউবিজেডিএফ।

Advertisement

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগে সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তার হিসাবে কর্মরত দেবাশিস এ বার অন্যত্র কাজে যোগ দিতে চলেছেন। সিনিয়র রেসিডেন্টদের নিয়োগের ক্ষেত্রে নিয়মটি হল, এই প্রক্রিয়ায় স্বাস্থ্য ভবনের তরফে একটি কাউন্সেলিং হয়। সেখানে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের কাছে জানতে চাওয়া হয়, তিনি কোথায় পোস্টিং চান। নিয়ম মেনে দেবাশিসের ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছিল। কাউন্সেলিংয়ে হুগলির ছেলে দেবাশিস জানান, তিনি হাওড়া জেলা হাসপাতালে পোস্টিং চান। সেইমতো গত ২৭ ফেব্রুয়ারি দেবাশিসকে পোস্টিংয়ের প্রাথমিক বন্ড জমা দিতে হয়। তাতে তাঁর স্বাক্ষরও রয়েছে। অথচ অভিযোগ, মেধাতালিকা বেরোনোর পর দেখা যায়, তাঁর পোস্টিং বদলে গিয়েছে! হাওড়ার পরিবর্তে দেবাশিসকে পাঠানো হয়েছে মালদহের গাজোলের একটি হাসপাতালে।

ডব্লিউবিডিএফের দাবি, ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ থেকেই দেবাশিসের সঙ্গে এমনটা করা হয়েছে। কারণ, গত ২৭, ২৮ ফেব্রুয়ারি এবং ৬ মার্চের কাউন্সেলিংয়ে মোট ৭৭৮ জন চিকিৎসক অংশগ্রহণ করেছিলেন। তাঁদের কারও পোস্টিং এ ভাবে বদলানো হয়নি। কেবলমাত্র দেবাশিসই ব্যতিক্রম। অন্য দিকে, ডব্লিউবিজেডিএফের আরও দাবি, কাউন্সেলিংয়ের আগে বিভিন্ন হাসপাতালের শূন্যপদের যে তালিকা বেরিয়েছিল, তাতে গাজোলের ওই হাসপাতালের নাম ছিল না। ওই হাসপাতালে সিনিয়র রেসিডেন্টের জন্য কোনও শূন্যপদও ছিল না। দেবাশিসের বিষয় অ্যানাস্থেশিয়োলজি। গত ২০ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত শূন্যপদের তালিকায় দেখা যাচ্ছে, রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালের অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগে মোট ৮৮টি শূন্যপদ রয়েছে। এর মধ্যে একমাত্র সিলামপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল ছাড়া মালদহের অন্য কোথাও কোনও শূন্যপদ নেই। নেই গাজোলের হাসপাতালের নামও। তা সত্ত্বেও মেধাতালিকায় দেখা গিয়েছে, দেবাশিসের পোস্টিং হয়েছে ওই হাসপাতালেই!

Advertisement

ডব্লিউবিডিএফের বিবৃতি। ছবি: সংগৃহীত।

দেবাশিসের কথায়, ‘‘এত জনের নামের তালিকা প্রকাশিত হল, অথচ কেবল আমার ক্ষেত্রেই দেখা গেল নামের পাশে হাসপাতালের নাম বদলে গিয়েছে! প্রতিহিংসা ছাড়া এ নেপথ্যে আর কোনও কারণ দেখছি না। কারণ, এই ঘটনার কোনও যৌক্তিকতাই নেই।’’ ঘটনায় আইনি সাহায্য নেবেন বলেও জানিয়েছেন দেবাশিস। অন্য দিকে, বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই প্রতিবাদে সরব হয়েছেন ডব্লিউবিজেডিএফের চিকিৎসকেরা। দেবাশিসের এ হেন ‘প্রতিহিংসামূলক’ পোস্টিংয়ের প্রতিবাদে মঙ্গলবার স্বাস্থ্যভবনেও যাচ্ছেন তাঁরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement