এক নারদের হুলে যখন রাজ্য রাজনীতি তোলপাড়, তখন গেরুয়া শিবির আমদানি করল মুনি নারদকে। সব মিলিয়ে রামনবমী-হনুমান জয়ন্তীর পর রাজ্যে জমে উঠতে চলেছে নারদ-নারদ!
নারদ জয়ন্তী উপলক্ষে আগামী ১৩ মে মহাজাতি সদনে কলকাতায় সাংবাদিক এবং সাংবাদিকতার পড়ুয়াদের নিয়ে আলোচনাচক্র করবে আরএসএস। সেখানে জাতীয়তাবাদী দৃষ্টিভঙ্গিসম্পন্ন নিরপেক্ষ সাংবাদিকদের পুরস্কারও দেওয়া হবে। সঙ্ঘ সূত্রের মতে, হিন্দু পুরাণে খবর আদান প্রদান করাকে নারদ মুনির কাজ হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। সুতরাং, নারদকে হিন্দুদের আদি সাংবাদিক হিসাবে ধরা যেতে পারে। তাই তাঁর নামাঙ্কিত জয়ন্তীকেই সাংবাদিকদের নিয়ে আলোচনাচক্রের জন্য বাছা হয়েছে।
কিন্তু গেরুয়া শিবিরেরই একাংশের মতে, এটা নেহাতই বহিরঙ্গ। যে ম্যাথু স্যামুয়েলের স্টিং অপারেশনের ফলে তৃণমূলের এক ডজন নেতা-মন্ত্রীর ঘুষ নেওয়ার দৃশ্য তামাম দুনিয়া দেখে ফেলেছে, তাঁরও সংবাদ সংস্থার নাম নারদ নিউজ।
আরও পড়ুন: দলেই ক্ষোভ মোদীকে ঘিরে
সঙ্ঘ পরিবার আসলে নারদ জয়ন্তীর অছিলায় সেই নারদেরই প্রসঙ্গ টেনে সামাজিক ভাবে তৃণমূলকে একঘরে করার চেষ্টায় নামছে। আরএসএস-এর এক নেতার কথায়, ‘‘রামনবমীর মতো নারদ জয়ন্তীতে তরোয়াল থাকবে না। কিন্তু নারদের হুলই এখানে আরও বড় অস্ত্র হিসাবে কাজ করবে।’’
বস্তুত, তৃণমূলের বরাবরের অভিযোগ, বিজেপি-র মদতেই ম্যাথু তাদের নেতাদের ফাঁসানোর জন্য স্টিং অপারেশন করেছিলেন। আরএসএস-এর নারদ জয়ন্তী পালনের পরিকল্পনা থেকে গেরুয়া শিবিরের ওই চক্রান্ত আরও স্পষ্ট হচ্ছে বলে মনে করছে শাসক শিবির। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য সেই বিষয়ে না ঢুকে বলেন, ‘‘বিজেপি-র কোনও রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক কর্মসূচি নেই। তাই কখনও নিজেদের নামে, কখনও শাখা সংগঠনের নামে ওরা রাম, নারদ মুনিকে রাস্তায় নামাচ্ছে। ৩৩ কোটি দেবদেবীর প্রত্যেকেই হয়তো এক দিন করে রাস্তায় নামাবে। কিন্তু মানুষ ধর্ম নিয়ে রাজনীতির এই অধর্ম মেনে নেবে না।’’