—ফাইল চিত্র।
রামনবমীতে অস্ত্রের প্রদর্শন হয়েছিল। এ বার অস্ত্রের পুজো করে ক্ষমতা প্রদর্শনের পরিকল্পনা। দশমীর দিন কলকাতায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কার্যালয়-সহ জেলাতেও ‘শস্ত্র পূজন’ হবে বলে জানিয়েছেন, দলের ক্ষেত্রীয় সম্পাদক শচীন্দ্রনাথ সিংহ। নিন্দায় তৃণমূল, সিপিএম, কংগ্রেস। তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, ‘‘যে ধর্মেরই হোক, কারও সন্ত্রাস পশ্চিমবঙ্গে চলবে না। তৃণমূল দলগত ভাবে কিংবা সরকার কোনও জঙ্গি কার্যকলাপ হতে দেবে না।’’
সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বাংলার সভ্যতা সংস্কৃতিকে যুগে যুগে বিষাক্ত করবে, এটাই স্বাভাবিক। তৃণমূল আমলে সেটা করার সুযোগও পাচ্ছে তারা।’’
প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘এক দিকে তৃণমূলের কার্যালয়ে একের পর এক বোমা বিস্ফোরণ। অন্য দিকে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের অস্ত্রের ঝনঝনানি। বাংলার রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক পরিবেশ বিষাক্ত হয়ে উঠছে।’’ বিজেপি অবশ্য প্রকাশ্যে বিষয়টি থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখছে। দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহের বক্তব্য, ‘‘বিজেপিকে এ বিষয়ে এখনও কিছু জানায়নি ভিএইচপি।’’ কিন্তু বিজেপি কি বিষয়টিকে মান্যতা দিচ্ছে? উত্তর দিতে রাজি হননি রাহুলবাবু।
শস্ত্র পূজনকে সাধারণ ধর্মীয় অনুষ্ঠান হিসেবেই দেখাতে চাইছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। শচীনবাবুর দাবি, প্রতি বছরই ‘শাস্ত্র’ মেনে দশমীর দিন এই অনুষ্ঠান তাঁরা করেন। কিন্তু কী ধরনের অস্ত্রের পুজো হবে? ভিএইচপি জানিয়েছে, লাঠি, তলোয়ার, ত্রিশূল থেকে শুরু করে লাইসেন্স আছে এমন আগ্নেয়াস্ত্রেরও পুজো করা হবে। শুধু পশ্চিমবঙ্গে নয়, গোটা দেশেই তারা এই অনুষ্ঠান করবে।
রাজনৈতিক মহলের একাংশের প্রশ্ন, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মতো একটি ধর্মীয় সংগঠনের কাছে অস্ত্র থাকবেই বা কেন? তাদের দফতরে যখন অস্ত্রের পুজো হয়, তখন ধরেই নেওয়া যায়, তা ব্যক্তিগত নয়, দলীয়। আর যদি তা কারও ব্যক্তিগত অস্ত্র হয়, তা হলে তা তাদের কার্যলয়ে এনে পুজো করা হবে কেন? অর্থাৎ, সংগঠন সেই অস্ত্র নিশ্চয় ব্যবহার করার সুযোগ পায়!
উল্লেখ্য, ‘শস্ত্র পূজন’ নিয়ে গত বছরও রাজনীতি উত্তপ্ত হয়েছিল। বিষয়টি গড়িয়েছিল আদালত পর্যন্ত।