পঞ্চায়েত ভোটে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় কোনও অভিনব ঘটনা নয়। এই দাবি করে উদাহরণ হিসাবে একাধিক রাজ্যের কথা উল্লেখ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার ধর্মতলার দলীয় সমাবেশে তিনি বলেন, ‘‘এটা স্থানীয় বাস্তবতা। কারও হাতে থাকে না। ঝাড়গ্রামে বহু আসনে তৃণমূলকেও প্রার্থী দিতে দেওয়া হয়নি।’’
পঞ্চায়েত ভোটে এবার তিনস্তরের ৩৪ শতাংশ আসনে বিরোধী প্রার্থী ছিল না। তৃণমূলের দাবি, এই আসনগুলিতে বিরোধীরা প্রার্থী দিতে পারেনি। আর বিরোধীদের অভিযোগ, সন্ত্রাসের পরিস্থিতি তৈরি করেই তাদের প্রার্থী দিতে দেওয়া হয়নি। এই অভিযোগে মামলা চলছে সুপ্রিম কোর্টেও। এদিন দলীয় সভায় সেই অভিযোগের জবাব দিলেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল ৯৮ শতাংশ জেলা পরিষদ পেয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতিতে ৯০ ও গ্রাম পঞ্চায়েতে ৭৪ শতাংশ আসন পেয়েছে। তাই অনেকে সমালোচনা করছে।’’ তাকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও অপপ্রচার বলে দাবি করেছেন তৃণমূলনেত্রী। তারপরই তিনি বলেন, ‘‘উত্তরাখণ্ডে যখন ৭০ শতাংশ আসনে ভোট হয় না তখন কেউ কিছু বলে না। সিকিমেও ৫০ শতাংশ আসনে নির্বাচন হয় না।’’ এই প্রসঙ্গেই তিনি বিহার ও উত্তরপ্রদেশের সঙ্গে এ রাজ্যে সিপিএম জমানার কথাও উল্লেখ করেন। বিরোধীদের তোলা সন্ত্রাস ও হিংসা বিরোধীদের অভিযোগ নস্যাৎ করতে পঞ্চায়েত ভোটের পর অনুষ্ঠিত মহেশতলা উপনির্বাচনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। পাশাপাশি দলের জনসমর্থনের প্রমাণ দিতে পঞ্চায়েত ভোটের পরে অনুষ্ঠিত মহেশতলা বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনে তৃণমূলের বিপুল জয়ের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘ওখানে তো পুলিশ দিয়ে ব্যারিকেড তৈরি করেছিল। জয়ের ব্যবধান এবার দশগুণ বেড়ে গিয়েছে। লজ্জা নেই!’’
বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতার ভোট নিয়ে তৃণমূলনেত্রীর এই ব্যাখ্যা মানতে নারাজ বিরোধীরা। বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটে শাসকদল ও প্রশাসন কী করেছে, রাজ্যের মানুষ তা জানে।’’ সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় রাজ্য ছিল দেশের মধ্যে পথিকৃৎ। আজ তিনি অন্য রাজ্যের সঙ্গে তুলনা করে প্রমাণ করেছেন, সেই ব্যবস্থাকে তৃণমূল কোথায় টেনে নামিয়েছে!’’ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী অভিযোগ, ‘‘রাজ্যে গণতন্ত্র হত্যা করছেন তিনিই। এখন অন্য যুক্তি সাজাচ্ছেন।’’