জোড়াসাঁকো থেকে মানিকতলার দূরত্ব কত?
কিলোমিটারের হিসেবে মাত্র তিন। কিন্তু রাজ্যের বিদায়ী মন্ত্রী এবং মানিকতলার তৃণমূল প্রার্থী সাধন পাণ্ডের সতীর্থরা মনে করেন, রাজনৈতিক মত পার্থক্যের নিরিখে এখন সেই দূরত্ব কয়েক যোজন।
জোড়াসাঁকোয় ভেঙে পড়া বিবেকানন্দ উড়ালপুলের ঘটনায় মুখ খুলে দলকে অস্বস্তিতে ফেলেছিলেন সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার সেই প্রসঙ্গে সাধনবাবুর মন্তব্যেও দলের অস্বস্তি বাড়ল। কী বলেছেন সাধনবাবু? এ দিন তিনি বলেন, ‘‘নাটবল্টু ঝালাই করতে গিয়েই এত বড় দুর্ঘটনা ঘটল। উড়ালপুলের নাটবল্টু ঝালাই করা উচিত হয়নি।’’
সাধনবাবুর এই মন্তব্যে অনেকেই তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের গন্ধ পাচ্ছেন। তবে, সাধনবাবুর ব্যাখ্যা, ‘‘উড়ালপুলের উপর ঢালাই করার সময় নাটবল্টু খসে পড়েছিল। সেই মুহূর্তে কাজ বন্ধ না করে স্রেফ ‘সাব-কন্ট্রাক্টর’কে সুবিধা করে দিতেই কাজ চালিয়ে যাওয়া হয়েছিল।’’ ‘সাব-কন্ট্রাক্টর’ সেই সময় ঝালাইয়ের কাজ বন্ধ করলে পয়সা পেতেন না। তাই, ঝালাইয়ের কাজ চালিয়ে যাওয়া হয় এবং তার ফলেই দুর্ঘটনা ঘটে বলে তিনি মনে করেন। নাম না করে এ দিন সাধনবাবু জোড়াসাঁকোর তৃণমূল প্রার্থী স্মিতা বক্সির আত্মীয় রজত বক্সিকে আক্রমণ করেন।
উড়ালপুল বিপর্যয়ের ঘটনার পরের দিন সুদীপবাবু বলেছিলেন, ‘‘উড়ালপুলের নকশায় ভুল ছিল। এটা নতুন ভাবে নির্মাণ করা উচিত ছিল।’’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাম আমলের ঘটনা বলে ব্যাখ্যা করলেও তাঁরই দলের দুই শীর্ষ নেতার এ-হেন বিতর্কিত মন্তব্য নির্বাচনের আগে দলের অস্বস্তি বাড়াল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সাধনবাবুর মন্তব্য, ‘‘২০০৯-১০ সালে ট্রান্সপোর্ট কমিটির চেয়ারম্যান থাকাকালীন উড়ালপুল পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। টেন্ডার হওয়ার সময় যে ডিজাইন ছিল পরে তার অনেক পরিবর্তন হয়েছে।’’ তবে, কোনও ভাল সংস্থাকে দিয়ে ওই নির্মাণের কাজ দ্রুত শেষ করা হবে বলেও সাধনবাবু আশা প্রকাশ করেন।