Cyclone Yaas

নলকূপে নোনা জল, উপকূলে হাপিত্যেশ

রামনগর-১ ব্লকের অন্তর্গত শঙ্করপুর থেকে তাজপুর পর্যন্ত বিস্তীর্ণ উপকূল এলাকার বহু গ্রামের হাজার হাজার মানুষ দলের জন্য হাহাকার করছেন।

Advertisement

কেশব মান্না

খেজুরি শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০২১ ০৬:২৯
Share:

স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হাত ধরে পানীয় জল পাচ্ছেন তাজপুর গ্রামের মহিলারা। নিজস্ব চিত্র

পরপর বসানো রঙিন সব প্লাস্টিকের বালতি। ফাঁকে ফাঁকে মাটির কলসি, প্লাস্টিকের জারিকেনও আছে। অদূরে ঠায় দাঁড়িয়ে ছেলে-বুড়ো-মেয়ের দল। সকলেরই অপেক্ষা—কেউ যদি একটু পানীয় জল পৌঁছে দেয়। ‘ইয়াস’ আছড়ে পড়েছে গত বুধবার। প্রকৃতির রুদ্র রূপে লন্ডভন্ড পূর্ব মেদিনীপুরের গোটা উপকূল। সমুদ্রের জলোচ্ছ্বাস থেকে রেহাই পায়নি খেজুরির পাচুড়িয়া গ্রামও। এখনও চলছে বাঁচার লড়াই। সামান্য পানীয় জলের জন্যও চাতক পাখির মতো হাপিত্যেশ।

Advertisement

রামনগর-১ ব্লকের অন্তর্গত শঙ্করপুর থেকে তাজপুর পর্যন্ত বিস্তীর্ণ উপকূল এলাকার বহু গ্রামের হাজার হাজার মানুষ দলের জন্য হাহাকার করছেন। আপাতত শান্ত সমুদ্র। তবে সমুদ্রের নোনা জলে এখনও ডুবে ওই এলাকার দেড়শোর কাছাকাছি পানীয় জলের নলকূপ। পঞ্চায়েতের উদ্যোগে বসানো সাবমার্সিবল পাম্পও অকেজো। আর পুকুর তো সব ভেসে গিয়েছে। চাঁদপুর, জামড়ার মতো কয়েকটি গ্রামে যাও উঁচু এলাকায় একটা-দু’টো নলকূপ রয়েছে, কিন্তু তার জল পুরো লবণাক্ত। বায়া বেরা নামে এক দুর্গতের কথায়, ‘‘সকাল হলেই কলসী, বালতি নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। যদি কেউ এসে জল দিয়ে যায়। এখন পানীয় জল পাওয়াটাই সব থেকে কঠিন কাজ।’’

শুক্রবার দিঘায় ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি সংক্রান্ত প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠকে বিপর্যস্ত উপকূল এলাকায় পানীয় জল সরবরাহ যথাযথ করার জন্য জনস্বাস্থ্য দফতরকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতো শনিবার এলাকায় পানীয় জলের পাউচ পৌঁছেছে। তবে তা পর্যাপ্ত নয়। এ কথা মানছেন এলাকায় কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি। অনুপম দাস নামে এক যুবক বলছেন, ‘‘অনেকেই পানীয় জল এবং ত্রাণ ঠিকমতো পাচ্ছেন না।’’ স্থানীয় তালগাছাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বিশ্বজিৎ জানার বক্তব্য, ‘‘স্থানীয়ভাবে পানীয় জলের উৎসগুলি এখনও জলের তলায়। তবে ব্লক প্রশাসন এ দিন থেকে যথেষ্ট পানীয় জল সরবরাহ করেছে। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও দুর্গত এলাকার বাসিন্দাদের পানীয় জল পৌঁছে দিচ্ছে।’’ জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের তমলুক ডিভিশনের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সুদীপ সেন এ দিন ফোন ধরেননি। তবে জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাঝির আশ্বাস, ‘‘পানীয় জলের চাহিদা ধীরে ধীরে পূরণ করার চেষ্টা চলছে।’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন