ধৃত কালিদাস। নিজস্ব চিত্র
কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে আরও একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করল পুলিশ। এটি অন্যতম অভিযুক্ত সুজিত মণ্ডলের কাছে ছিল বলে দাবি পুলিশের। খুনের ঘটনার রাতেই গ্রেফতার হন সুজিত। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই আগ্নেয়াস্ত্রের হদিশ মেলে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। নদিয়ার পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের কথা স্বীকার করেছেন কিন্তু জানিয়েছেন, তদন্তের স্বার্থে ঠিক কোন জায়গা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে তা এখনই বলা যাবে না।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি রাতে ফুলবাড়িতে নিজের বাড়ির উল্টোদিকে একটি ক্লাবের সরস্বতী পুজোর অনুষ্ঠানে খুন হন বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস। খুনের কিছু পরেই ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে একটি ওয়ানশটার উদ্ধার করে পুলিশ। এটি মূল অভিযুক্ত অভিজিৎ পুণ্ডারি ব্যবহার করেছিল এবং এটি দিয়েই সত্যজিৎকে গুলি করা হয় বলে পুলিশ দাবি করেছে। খুনের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে অন্যতম অভিযুক্ত অভিজিৎ পুণ্ডারি পলাতক।
ধৃত চার জনের মধ্যে রয়েছেন বিজেপি নেতা নির্মল ঘোষও। অভিযোগ পত্রে তাঁর নাম না-থাকলেও অন্য ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে নির্মলের নাম উঠে এসেছে বলে দাবি পুলিশের। পুলিশের দাবি, নির্মলই অভিযুক্তকে আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহ করেছিলেন। শনিবার তাঁকে রানাঘাট মহকুমা আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাঁকে চার দিনের পুলিশ হেফাজতের আদেশ দেন। নির্মল ঘোষের আইনজীবী সুমন রায় বলেন, “নির্মলবাবুর বয়স এবং শারিরীক অবস্থার কথা বিবেচনা করে জামিনের আবেদন জানানো হয়।” রাজনৈতিক কারণেই তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন নির্মল। বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি জগন্নাথ সরকারও অভিযোগ করেন, “রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে নির্মলকে ফাঁসানো হচ্ছে।”
বিজেপির ৩৮ নম্বর জেলা পরিষদ কমিটির সভাপতি নির্মল ঘোষ। মাস সাতেক আগে পড়ে গিয়ে তাঁর ডান পা ভাঙে। ক্রাচে ভর দিয়ে হাঁটাচলা করতে হয়। সেই সঙ্গে ডায়াবিটিসের সমস্যা আছে। আপাতত তিনি শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভর্তি।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে তৃণমূলের হাঁসখালি ব্লক সভাপতি দুলাল বিশ্বাস খুনের ঘটনাতেও অভিযোগ দায়ের হয়েছিল নির্মলের নামে। পরিবারের দাবি, সে বার রানাঘাট আদালতে তিনি আত্মসমর্পণ করেন। তিন মাস পরে জামিন পান। এ বার একই ভাবে বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসের খুনে তাঁর নাম জড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পরিবারের।