উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক দুর্নীতির মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করে রায় পুনর্বিবেচনার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। অভিযুক্ত রেজিস্ট্রার দিলীপ সরকারকে সাসপেনশনের পরিবর্তে সবেতন ছুটিতে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল ডিভিশন বেঞ্চ। সর্বোচ্চ আদালত সেই নির্দেশ খারিজ করে দিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের মতে, ডিভিশন বেঞ্চের রায়ে অনেক অস্পষ্টতা আছে। তাই উভয়পক্ষকে হাইকোর্টে ডেকে নতুন করে শুনানি করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, গত ২৪ জুলাই ওই রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ১৪ অগস্ট কলকাতা হাইকোর্টে শুনানির কথা।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কথা জেনে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘আমরা বলছি, কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্থিক দুর্নীতি বরদাস্ত করা হবে না। তবে এ সব ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’’ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোমনাথ ঘোষ মন্তব্য করতে চাননি। ২০১০-এ তৎকালীন উপাচার্য অরুণাভ বসু মজুমদার পরীক্ষা নিয়ামক বিভাগের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে কোটি টাকার বেশি নয়ছয়ের অভিযোগ পান। উপাচার্য মাটিগাড়া থানায় এফআইআর করে রেজিস্ট্রার দিলীপবাবুকে সাসপেন্ড করেন। দিলীপবাবু আবেদন করলে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ তাঁর সাসপেনশনে স্থগিতাদেশ দেয়। বিশ্ববিদ্যালয় ডিভিশন বেঞ্চে যায়। ২০১১-তে ডিভিশন বেঞ্চ রায় দেয়, সিঙ্গল বেঞ্চে চূড়ান্ত রায় না হওয়া পর্যন্ত অভিযুক্তকে সবেতন ছুটি দিতে হবে। হাইকোর্টের এই রায়ের অংশ উদ্ধৃত করে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, তাতে মামলার যথাযথ ঘটনার সম্পর্কে ডিভিশন বেঞ্চের অজ্ঞতাই স্পষ্ট হয়েছে। হাইকোর্টের ব্যর্থতার জন্যই এই ঘটনায় বহু মামলা হয়েছে, বিচার বিলম্বিত হয়েছে। ওই রায় সম্পর্কে ‘‘সম্পূর্ণ অসন্তোষ’’ প্রকাশ করেন সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতি, টি এস ঠাকুর, আর কে আগরওয়াল এবং আর ভানুমতী।
এই দুর্নীতি সম্পর্কিত আর একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায় মেনে দিলীপবাবুর বিরুদ্ধে পদক্ষেপের প্রক্রিয়া শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয়। আজ, শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতির বৈঠকে ওই বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা।